শিক্ষাঙ্গনে সু-গতি ফিরুক।

প্রকাশিত: ৮:১৮ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২

শিক্ষাঙ্গনে সু-গতি ফিরুক।
booked.net

অতিমারি করোনার ভয়াল ছোবলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষাঙ্গন। কোভিড-১৯ এর কারণে বাংলাদেশে ২০২০সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১সালের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা প্রায় ১৯মাস দেশের সরকারি বেসরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো। খুলবে, খুলছে এমন সম্ভাবনায় বেশ কিছুদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর ভার্চ্যুয়াল প্লার্টফর্মে ক্লাস শুরুর তাগিদ আসে। তবে অনলাইন অ্যাসাইনমেন্ট ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি। কেননা আমাদের দেশের বিরাট জনগোষ্ঠী এই কনসেপ্টে পরিচিত ছিলোনা,অনেকের এ্যান্ডয়েড হ্যান্ড সেট ছিলো না এমনকি বেশিরভাগ জায়গায় ছিলো নেটওয়ার্ক ত্রুটি। সব কিছুর পর আমাদের ছাত্র ছাত্রীদের ইচ্ছা এবং আগ্রহের ঘাটতিতো ছিলো’ই।

যে কারণে আশাতীতভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চলেনি বললেই হয়। অবশ্য মধ্যে কিছুদিন প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় শ্রেণি কাজে কিছুটা গতিময়তা আসলেও বছরের শেষটায় সেশন প্রমোশন ভর্তি বই বিতরণ সহ আনুষ্ঠানিক প্রাতিষ্ঠানিক গোছগাছ শেষ হতে না হতেই আবার ওমিক্রন সংক্রমণের জেরে ২১জানুয়ারি থেকে অদ্যাবধি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

বিগত দুই বছরের অধিক সময় শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় যে শিক্ষার্থী বর্তমান অটোপাশ আইটেমে ৫ম শ্রেণিতে আছে সে পড়েনি ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি,যে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সে জানেনা নতুন প্রতিষ্ঠানে তার শ্রেণি’র রোল নম্বর কত? শিক্ষক এবং সহপাঠী কারা। পূর্ববর্তী প্রতিষ্ঠান থেকে সে কোন শ্রেণি উত্তীর্ণ হয়ে মাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছে! প্রাথমিক,মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক সকল পর্যায়ই প্রায় একই অবস্থা।

উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রেতো সেশন যন্ত্রণা আগে থেকেই পোহাতে হতো,মহামারী করোনা তো আরো বাড়িয়ে দিলো বহুগুণ। অনার্স কম্পিলিটের অনিশ্চিত যাত্রায় হা-হুতাশ,টানাপোড়েন আর মানসিক যন্ত্রনায় দিকভ্রান্ত হয়ে আছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারুণ্য দ্বীপ্ত যুবক যুবতীরা।

প্রায় তিন বছরের বন্ধ পাঠে,চলমান শ্রেণি উত্তীর্ণ বলে গণ্য হলো মর্মে বেসিক শিক্ষায় বিরাট ঘাটতি নিয়ে প্রজন্মের সন্তানেরা কতটুকু কোমড় সোজা করে দাঁড়াতে পারবে তা বোধগম্য নয়। তবে দুর্দান্ত ছুটে চলা আগামীর বাংলাদেশ দুর্গতিতে হাতছানি দেবে এটাই বাস্তবতা।

সুদীর্ঘ শিক্ষা বিরতির এই ঘাটতি কাটিয়ে কিভাবে প্রজন্মকে পরিপূর্ণ ভিত্তি দিয়ে পুর্ণ দক্ষতায় গড়ে তোলা যায় পাশাপাশি বেসিক জ্ঞানের উর্বরতা দিয়ে মেধা শক্তির বিকাশ ঘটিয়ে; সময়োপযোগী সুশিক্ষা নিশ্চিত করে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ বিনির্মানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবী ।

তবে এ সব ক্ষেত্রে ব্যক্তি,সমাজ ও রাষ্ট্রের কাঠামো বদ্ধ উদ্যোগ,প্রবল ইচ্ছাশক্তি বর্তমান সংকটের বুনিয়াদি সমাধান দিতে পারে বলে গবেষকরা মনে করছেন।

লেখকঃ- বাবুল আহমদ। পরিচালক, নোবেল একাডেমি, রবিরবাজার।

Ad