ইসলামে ‘অকাল মৃত্যু’ বলে কিছু নেই।

প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৭, ২০২১

ইসলামে ‘অকাল মৃত্যু’ বলে কিছু নেই।
booked.net
Manual6 Ad Code

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ ফরমান, ‘প্রত্যেক সম্প্রদায়ের একটি মেয়াদ রয়েছে। যখন তাদের মেয়াদ এসে যাবে, তখন তারা না এক মুহূর্ত পিছে যেতে পারবে, আর না এগিয়ে আসতে পারবে’ (সূরা আরাফ-৩৪)। অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ ফরমান, ‘যদি আল্লাহ লোকদেরকে তাদের অন্যায় কাজের কারণে পাকড়াও করতেন, তবে ভূপৃষ্ঠে চলমান কোনো কিছুকেই ছাড়তেন না। কিন্তু তিনি প্রতিশ্রুতি সময় পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দেন। অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহূর্তও বিলম্বিত কিংবা ত্বরাম্বিত করতে পারবে না’ (সূরা নাহল-৬১)।

আমাদের সমাজে ব্যবহৃত প্রসিদ্ধ একটি শব্দ ‘অকাল মৃত্যু’। গ্রামে-শহরের টাঙানো প্রায় ব্যানারে দেখা যায় অমুকের অকাল মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। নাউজুবিল্লাহ! অকাল মৃত্যু বলতে বোঝায় কালের আগে মৃত্যুবরণ করা। মৃত্যুবরণ করার কথা ছিল অমুক তারিখ, এর আগেই মৃত্যুবরণ করলেই বলা হবে অকাল মৃত্যু। অকাল মৃত্যু শব্দ থেকে বোঝা যায়, মৃত্যুবরণ করার কথা ছিল অমুক তারিখ, আল্লাহ তায়ালা এর আগেই দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নিয়েছেন। নাউজুবিল্লাহ! এতে আল্লাহর মর্যাদার ক্ষুন্ন হয়। বরং এ কথা বলা যেতে পারে যে অমুক অল্প বয়সেই ইন্তেকাল করেছে।

Manual3 Ad Code

আল্লাহ তায়ালা মানুষ সৃষ্টির আগেই নির্ধারণ করেন জন্ম-মৃত্যু। সেই অনুপাতে মানুষের জন্ম হয়, মৃত্যু হয়। তাকদিরের লিখিত অনুপাতে রিজিক দেয়া হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘পুণ্যময় তিনি (আল্লাহ), যাঁর হাতে রাজত্ব। তিনি সব কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান। যিনি (আল্লাহ) সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়’ (সূরা মুলক : ০১-০২)। এতে বোঝা গেলো, আমাদের জন্ম-মৃত্যু আল্লাহ তায়ালার হাতে। কার মৃত্যু কখন, কিভাবে হবে আল্লাহই ভালো জানেন!

Manual5 Ad Code

অন্য আয়াতে ইরশাদ ফরমান, ‘তিনিই জীবন ও মরণ দান করেন এবং তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে’ (সূরা ইউনুস-৫৬)। এ ছাড়া আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ ফরমান, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যুর স্বাদ’ (সূরা আলে ইমরান-১৮৫)। ছোট হোক কিংবা বড়, যুবক হোক কিংবা বার্ধক্য সবাইকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। এই ধরায় কেউ অমর নয়। একটি চিরন্তন সত্য হলো প্রত্যেককেই এই ধরার মায়া ত্যাগ করে রবের কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। এক কথায় বললে মৃত্যু।

এই ধরায় আসার সিরিয়াল আছে, যাওয়ার নয়। কেউ কেউ মায়ের গর্ভ থেকে দুনিয়াতে আগমন করে ঘুমন্ত (মৃত) অবস্থায়। আবার কেউ শৈশবে, কেউ কৈশোরে, কেউ যৌবনে, কেউ আবার বৃদ্ধাবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এগুলো সব রবের ইচ্ছা। এখানে কারো কোনো হাত নেই। যখন কেউ গাড়ি এক্সিডেন্টে, পানিতে পড়ে কিংবা অল্পবয়সে মৃত্যুবরণ করলে কিছু মানুষ অপমৃত্যু, অকাল মৃত্যু, খারাপ মৃত্যু, পোড়া কপাল বলে সম্বোধন করে। নাউজুবিল্লাহ! মুমিনের মৃত্যু অকাল হতে পারে না। বরং একটি নিয়ামত! কারণ, এই ধরা আর জান্নাতের মাঝে গেইট হলো মৃত্যু।

Manual1 Ad Code

তবে, অল্প বয়সে মৃত্যু মা-বাবার জন্য অতি কষ্টের হয়। তাই হাদিসে সান্তনা দিতে রাসূল সা: ইরশাদ ফরমান, ‘যেসব ব্যক্তি বা যারা দুর্ঘটনায় আপনজন হারিয়েছেন, তারা ধৈর্য ধারণ করুন। এমন বিপদে ধৈর্য ধারণ কারীদের জন্য জান্নাতে বায়তুল হামদ নামক একটি ঘর তৈরি রয়েছে’ (তিরমিজি, হাদিস-১০২১)।

Manual6 Ad Code

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন- আমীন।

Ad

Follow for More!