ভালোবাসা দিবস। ইসলাম কি বলে।

প্রকাশিত: ১:১০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২

ভালোবাসা দিবস। ইসলাম কি বলে।
booked.net

অনলাইন ডেস্কঃ- ভালোবাসা হলো খোদায়ি অনুভূতি, আত্মার তৃপ্তি ও মনের প্রশান্তি। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা আমাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা শিক্ষা দিয়েছেন, যা কোনো বিশেষ দিবসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ভালোবাসা, সম্প্রীতি ও উত্তম চরিত্রমাধুর্য দ্বারা আমাদের প্রিয় নবী (সা.) জয় করে নিয়েছেন শত কোটি মানুষের হৃদয়; বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছেন ইসলামের বিকিরণ।

প্রেম-ভালোবাসা, মায়া-মমতা ও ভক্তি-শ্রদ্ধা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। এসব মানবিক গুণ আছে বলেই এখনো টিকে আছে এ নশ্বর পৃথিবী। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা নিজেই ঘোষণা করেছেন-
وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

‘আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে (সূরা: আর রুম, আয়াত: ২১)।

প্রতিটি ভালোবাসা হতে হবে আবেগ, বিবেক ও স্রষ্টার সম্মতির সমন্বয়। কিন্তু যে ভালোবাসার পরিচালক হয় শুধু আবেগ বা কুপ্রবৃত্তি, সে ভালোবাসা মানুষের ইহকাল-পরকাল উভয়কে ধ্বংস করে দেয়। ধ্বংস করে মানুষের মনুষ্যত্ব, জাগরিত করে পশুত্বের হিংস্র বৈশিষ্ট্য।

দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান বিশ্বে ভালোবাসা দিবসের নামে উৎপত্তি হচ্ছে নানান অপসংস্কৃতি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, ছড়িয়ে পড়ছে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা। ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির আগ্রাসন; যা ইসলামের নীতি ও আদর্শবহির্ভূত।

আজ পবিত্র ও সত্যিকার ভালোবাসার অভাবে সর্বত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে হিংসা-বিদ্বেষ, ছড়িয়ে পড়ছে গুম, খুন ও ধর্ষণের মতো অসংখ্য অপরাধ। তাই মহান স্রষ্টার সমীপে এই মিনতি যে, সমাজ থেকে চিরতরে নির্মূল হোক সব ধরনের অশ্লীলতা, বেলেল্লাপনা ও অপসংস্কৃতি। জয় হোক পবিত্র, অকৃত্রিম ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসার।

বর্তমানে ভালোবাসা মানেই যুবক-যুবতীর অবৈধ মেলামেশা, নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা, যা ইসলাম কোনোভাবেই সমর্থন করে না। ইসলামের দৃষ্টিতে প্রত্যেক বালেগ নারী-পুরুষের ওপর পর্দার বিধান রক্ষা করা ফরজ। ইসলাম বিয়েপূর্ব নারী-পুরুষের কোনো সম্পর্ককেই বৈধতা প্রদান করে না। চাই তা যেভাবেই হোক না কেন। দেখা-সাক্ষাৎ, চিঠিপত্র আদান-প্রদান, পারস্পরিক কথাবার্তা এই সবই নাজায়েজ ও মারাত্মক গুনাহ। এ বিষয়ে অসংখ্য কোরআনের আয়াত ও হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

ভালোবাসা একটি আপেক্ষিক বিষয়। এটি মূলত বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষিত হওয়ার ফল। মানুষ ভালোবাসার ক্ষেত্রে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না। বিষয়টির ওপর মানুষের হাত না থাকায় রাসূল (সা.)-ও আপন স্ত্রীদের পালা বণ্টন করে বলেছেন, ‘হে আল্লাহ, আমার যতটুকু সাধ্য ছিল আমি ইনসাফ করার চেষ্টা করেছি, আর যে বিষয়টি আমার সাধ্যে নেই (অর্থাৎ কোনো স্ত্রীর প্রতি বেশি ভালোবাসা), সে বিষয়ে আমাকে ভর্ৎসনা করবেন না।’ (সুনানে তিরমিজি : ৩/১৮৫, হাদিস নম্বর ১১৪০, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৪/৪১৪)। তবে ভালোবাসা মানেই অবৈধ নয়। কিছু কিছু ভালোবাসা শরীয়তে কাম্য। সেটার প্রতি শরীয়ত উৎসাহ প্রদান করেছে।

সবচেয়ে বড় কথা হলো, ছেলে মেয়ের মাঝে যদি ভালোবাসা থাকে এবং তারা বিয়ের প্রতীক্ষায় থাকেন সে ক্ষেত্রে অভিভাবকদের উচিত ছেলেমেয়ের সেই সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়া। ছোটখাটো বিষয় বিবেচনায় না এনে তাদের মাঝে বিচ্ছেদ না ঘটিয়ে বিয়ে দিয়ে দেয়াই উত্তম। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ভালোবাসায় আবদ্ধ দুইজন পুরুষ-নারীর মাঝে বিয়ের চেয়ে উত্তম কোনো ব্যাপার নেই।’ এই হাদিসটির প্রেক্ষাপটের দিকে দৃষ্টিপাত করলে আমাদের কাছে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়। এক ব্যক্তি রাসূল (সা. এর নিকট এসে বলল, আমার যত্নে একটি ইয়াতিম বালিকা আছে। দুইজন ব্যক্তি তাকে বিয়ে করতে চায়। একজন দরিদ্র্য, অন্যজন ধনী। কিন্তু ইয়াতিম বালিকাটি দরিদ্র্য লোকটিকে ভালোবাসে এবং তাকেই বিয়ে করতে চায়। তার কথা শুনে রাসূল (সা.) বলেন, ‘ভালোবাসা আবদ্ধ দুইজনের মাঝে বিয়ের চেয়ে আর কী উত্তম হতে পারে?’

অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে যে, ইসলাম একটি প্রায়োগিক ধর্ম। কারো সঙ্গে ভালোবাসা হয়ে যাওয়াটা একটি স্বভাবগত বিষয়। ইসলাম এই স্বভাবগত বিষয়টিকে শরীয়তসম্মত রূপদানের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে। যাতে ছেলেমেয়ে অবৈধ কোনো কর্মে লিপ্ত না হতে পারে। বেশির ভাগ বাবা-মা সামান্য কারণ দেখিয়ে, বা নিজেদের বংশমর্যাদা রক্ষার অজুহাতে ভালোবাসায় আবদ্ধ দুইজনের মাঝে প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান। ফলে তারা নিজেরাও বিপদে পড়েন, সন্তানদেরও বিপদে ফেলেন। অনেক সন্তান জেদি হয়ে থাকে। তারা বাবা-মায়ের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে অন্য জীবন বেছে নেয়। বাবা-মায়ের সিদ্ধান্তের প্রতি বিদ্রোহ ঘোষণা করে অনেক সময় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তা ছাড়া বাবা-মা যখন জোর করে তাদের পারিবারিক সিদ্ধান্তকে সন্তানের ওপর চাপিয়ে দেন, তখন সন্তান পরিবারে নিজেকে নিঃস্ব ও অসহায় ভাবে। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েই পরে সে তালাক-ডিভোর্সের মতো জঘন্য কোনো অপরাধ করে।

মোদ্দাকথা পরিবারের কোনো সন্তানের প্রতি যখন জোর করে কোনো বিষয় চাপিয়ে দেয়া হয় অথবা তাদের সিদ্ধান্ত ও আবেগকে পূর্ণরূপে অবজ্ঞা করা হয়, তখন তাদের মাঝে জেদ, হিংসা-বিদ্বেষ, নিষ্ঠুরতার মতো ভয়ঙ্কর অমানবিক দোষগুলো তাদের অবচেতন মনেই আয়ত্ত হয়ে যায়। আর এগুলো নিজের বাবা-মা, ভাইবোন এমনকি নিজের জীবনের প্রতি প্রয়োগ করতেও দ্বিধা করে না। পরিবারে যদি ভালোবাসা ও হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করে তাহলে সেই পরিবারের সন্তানেরা মানবীয় জঘন্য প্রবৃত্তিগুলোর ঊর্ধ্বে উঠে নৈতিকতা চর্চা করতে পারে। তখন পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সহজ হয়। অনেকে প্রিয় মানুষকে না পেয়ে মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে মাদকাসক্ত হয়ে যায়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও জড়িয়ে পড়ে।

ভালোবাসার প্রকারভেদঃ-

★ বৈধ ভালোবাসাঃ- স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা হলো পবিত্র, বৈধ ও অহংকার মুক্ত ভালোবাসা। ইসলাম এই ভালোবাসার প্রতি খুবই গুরুত্ব দিয়েছে। রাসূল (সা.) তাঁর স্ত্রীদের ভালোবাসতেন। তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করতেন। তাদের মন জয় করার চেষ্টা করতেন। তাদের নিয়ে আনন্দ-ফুর্তি করতেন। হাদিস শরিফে আছে, ‘রাসূল (সা.) হজরত আয়েশা (রা.) এর সঙ্গে দৌঁড় প্রতিযোগিতা করেছেন।’ আয়েশাকে নিয়ে মসজিদে তিনি আবিসিনীয়দের খেলা দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সে ব্যক্তি পূর্ণ মুমিন, যার চরিত্র সুন্দর, তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম।’ (রিয়াদুস সালিহিন, ১/১৯৭)।

বিয়ের আসল উদ্দেশ্য হলো, শান্তি, ভালোবাসা ও দয়া। হাদিসে আছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যদি কোনো স্বামী স্ত্রীর দিকে দয়া ও ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকায় তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার দিকে দয়া ও রহমতের দৃষ্টি নিয়ে তাকান।’ এই হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা, তাদের প্রতি রহম করা ইসলামি শরীয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রত্যেক স্ত্রীই তার স্বামীর কাছে ভালোবাসা চায়। স্বামীদের উচিত, স্ত্রীদের ভালোবাসা ও তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা। বিয়ের দ্বারা অনেক জৈবিক চাহিদা পূরণ হয়। তবে তা শুধু বৈষয়িক ব্যাপারের মধ্যে সীমিত নয়। বরং বিয়ের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ভালোবাসাপূর্ণ ও আবেগময় পারিবারিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

★ অবৈধ ভালোবাসাঃ-আজ আমাদের সমাজে যুবক-যুবতীদের মাঝে বিবাহপূর্ব যে অনৈতিক সম্পর্ক সৃষ্টি হচ্ছে এবং ভালোবাসা সৃষ্টি হচ্ছে ইসলামের দৃষ্টিতে তা অবৈধ ভালোবাসা এবং সম্পূর্ণ হারাম। ইসলাম কখনো এ ধরনের ভালোবাসা সমর্থন করে না। এটি মূলত যৌন তাড়নাপ্রসূত একটি বিষয়। যুবক-যুবতীরা পাশবিকতা চরিতার্থ করার জন্য ভালোবাসায় আবদ্ধ হন। যখন যৌন তাড়না নিঃশেষ হয়ে যায় তখন ভালোবাসায় ভাটা পড়ে। তবে একে-অপরের ভালোবাসা যদি শুধু তাদের মনে লুকায়িত থাকে, ভালোবাসা প্রকাশ করতে গিয়ে শরীয়ত লঙ্ঘন না করে, তাহলে সে ভালোবাসায় কোনো ক্ষতি নেই। হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি কাউকে ভালোবাসে, তা লুকিয়ে রাখে, নিজেকে পবিত্র রাখে এবং এই অবস্থায় মারা যায় সে শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করবে।’ (কানজুল উম্মাল : ৩০/৭৪)।

সবচেয়ে বড় কথা হলো, নিজেকে পবিত্র রাখার জন্য তিনি তো আল্লাহর কাছে অবশ্যই বিনিময় পাবেন। তবে ভালোবাসার কারণে যদি অবৈধ কাজে লিপ্ত হয়ে যায় তাহলে তা অবশ্যই হারাম। এটি একটি মানসিক রোগ। যার আশু চিকিৎসা প্রয়োজন।

ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তি যেভাবেঃ- ১৪ ‘ই  ফেব্রুয়ারি! বর্তমান বিশ্বে এ দিনকে ভ্যালেন্টাইন ডে (বিশ্ব ভালোবাসা দিবস) নামে উদ্যাপন করা হয়। ইউরোপ-আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশে এ দিবস অত্যন্ত আড়ম্বর, জাঁকজমকপূর্ণ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয়। এর সূচনা মধ্যযুগে হলেও নব্বই দশকের শুরু থেকে বিশ্বব্যাপী এর প্রসার ঘটে। আশির দশকেও বাংলাদেশের মানুষ এ দিবসটির সঙ্গে ছিল অনেকটা অপরিচিত। তবে নব্বইয়ের দশক থেকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সহযোগিতায় ও মিডিয়ার কল্যাণে এ দেশের যুবসমাজের মাঝে তা ছড়িয়ে পড়ে।

ভালোবাসা দিবসের উৎস নিয়ে নানা মত প্রচলিত আছে। এ সম্পর্কে যতদুর জানা যায়, লুপারকালিয়া নামে প্রাচীন রোমে এক উৎসব ছিল, যা ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি অবধি হতো। যে উৎসবে নারী-পুরুষ সমানতালে মদ পান করত এবং লটারির মাধ্যমে সঙ্গী বেছে নিয়ে তার সঙ্গে একান্তে মিলিত হতো। অতঃপর রোমানরা যখন তাদের প্রাচীন ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টধর্মে ধাবিত হচ্ছিল, তখন তারা প্রাচীন দেবীর নামে লুপারকালিয়া উৎসবকে মেনে নিতে পারছিল না। আবার উৎসবটি খুব জনপ্রিয় ছিল বলে ছেড়েও দিতে পারছিল না। অবশেষে উৎসবটিকে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামে উৎসর্গ করে উদযাপন করত।

বিখ্যাত ইতিহাসবিদ নোয়েল লেন্সকি বলেছেন, লুপারকালিয়া উৎসবে পুরুষরা দেবী লুপারকাসের নামে একটি ছাগল আর একটি কুকুর বলি দিত। তারপর মৃত ছাগল বা কুকুরের চামড়া দিয়ে উৎসবে অংশগ্রহণকারী মেয়েদের বেদম প্রহার করত। তাদের বিশ্বাস, এ প্রহারের কারণে মেয়েদের প্রজননক্ষমতা বাড়ে।

ভালোবাসা দিবসের সূচনা ইতিহাস সম্পর্কে আরো যা জানা যায়, ২৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস বিবাহিত পুরুষদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ বন্ধ করে দেন এবং আইন জারি করেন, তার সাম্রাজ্যে কেউ বিয়ে করতে পারবে না। কারণ বিবাহিত সেনারা স্ত্রী-সন্তানদের মায়াজালে আবদ্ধ হয়ে যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যুর ঝুঁকি নিতে চাইত না। কিন্তু রোমান এক ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন সম্রাটের ন্যায়ভ্রষ্ট নিয়মের প্রতিবাদ করেন এবং বিয়ে করেন। এ খবর সম্রাট ক্লডিয়াসের কাছে পৌঁছলে তিনি সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে গ্রেফতার করে মৃত্যুদণ্ড দেন। আর সে মৃত্যুদণ্ডটি কার্যকর হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এ দিবসকে ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।

আবার কারো কারো মতে, ভ্যালেন্টাইন ছিলেন একজন খ্রিস্টান পাদরি ও চিকিৎসক। সে সময় রোমানরা ছিল দেব-দেবীর অনুসারী। ২৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস খ্রিস্টধর্ম প্রচারের অভিযোগে ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। বন্দী অবস্থাতেই ভ্যালেন্টাইন জেলারের অন্ধ মেয়ের চোখের চিকিৎসা করেন। ফলে মেয়েটি তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দিন ভ্যালেন্টাইন মেয়েটিকে লিখে যান, Love From your valentine. আর এ দিনটি ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি।

আমাদের যুবক-যুবতীর মাঝে ভালোবাসা দিবস (ভ্যালেন্টাইন ডে) পালনের রেওয়াজ বিস্তার লাভ করেছে। প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি তারা এ দিবসটি উদযাপন করে, উপহার-উপঢৌকন ও লাল গোলাপ বিনিময় করে থাকে, লাল রঙের পোশাক পরিধান করে থাকে।

এ ধরণের বেদাতি উৎসব পালন করা নাজায়েয। এটি নবউদ্ভাবিত বেদাত। শরীয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই। এটি আয়েশা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত হাদিসের বিধানের আওতায় পড়বে যে হাদিসে এসেছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীন বা শরীয়তের মধ্যে এমন কিছু চালু করবে যা এতে নেই সেটি প্রত্যাখ্যাত।’

Ad