জয়চন্ডীতে ধর্ষণের ঘটনায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।

প্রকাশিত: ৫:০১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০২৩

জয়চন্ডীতে ধর্ষণের ঘটনায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।
booked.net

আব্দুল কুদ্দুসঃ- কুলাউড়ার জয়চণ্ডি ইউনিয়নে একটি ধর্ষণের ঘটনায় ওই এলাকার মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন স্থানীয় এলাকার লোকজন। গত মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) থেকে তাদের মাঝে এ ঘটনা নিয়ে চুলচেঁড়া বিশ্লেষন চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) উপজেলার জয়চণ্ডি ইউনিয়ন থেকে মেয়ে ধর্ষণের অভিযোগে পিতা চিনু মিয়া আটক হওয়ার ঘটনায় গণমাধ্যমের কিছু কর্মী নিয়ে থানায় প্রেসব্রিফিং করেন ওসি আব্দুস ছালেক। পরে ‘ওসি কুলাউড়া থানা’ পেইজ থেকে ভিকটিমের নাম, পরিচয় সহ প্রেস ব্রিফিংয়ের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হলে তুমুল হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। সচেতন মহলের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ওইদিন রাতেই পেইজ থেকে ভিডিওটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অনেকেই দাবী করেছেন।

সাংবাদিকরা বলেন, মঙ্গলবার ওসি’র কক্ষে প্রেস ব্রিফিংকালে ওসি সাংবাদিকদের জানান, ভিকটিমের (১২) নানির দায়ের করা একটি মামলার প্রেক্ষিতে সোমবার (২৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চিনু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। চিনু মিয়া ঈদের দিন দিবাগত রাতেই তার মেয়েকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর ২-৩ দিন মেয়েকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখেন যাতে কেউ ঘটনাটি না জানে।

এদিকে সরেজমিন জয়চণ্ডি ইউনিয়নে গেলে ভিকটিমের বাড়ীর পাশের লোকজন ভিন্ন কথা জানিয়েছেন। তারা জানান, চিনু মিয়া এবং তার স্ত্রী আয়েশা বেগমের মাঝে দীর্ঘদিন থেকে মনোমালিন্য চলছিলো। এ নিয়ে ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান একাধিকবার শালিস বৈঠক করেছেন।

গত ১৩ রমজান (৫ এপ্রিল) স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ফের ঝগড়া-ঝাটি হলে দুই মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি যান আয়েশা বেগম। ১৮ রমজান (১০ এপ্রিল) স্বামীকে না জানিয়ে তিনি বিদেশ পাড়ি জমান। ২৬ রমজান (১৮ এপ্রিল) নানার বাড়ি থেকে মেয়ে দুটি তাদের বাড়ি চলে আসে।

স্থানীয়রা আরো জানান, ঈদের আগের দিন চিনু মিয়া মেয়ে দুটো কে নিয়ে কুলাউড়া শহর থেকে নতুন জামা-কাপড় কিনে দিয়েছেন। ঈদের দিন এবং ঈদের পরের দিন ভিকটিম নতুন জামা-কাপড় পরে আশপাশের বাড়ি বেড়াতে যায়। সহপাঠী এবং আরো অনেকের সাথে খেলাধূলা করেছে। ঈদের পরদিন দুই মেয়েকে তাদের নানা বাড়ি (একই ইউনিয়নের দানাপুর গ্রাম) অটোরিকশায় করে পৌঁছিয়ে দিয়েছেন চিনু মিয়া। তিনি দীর্ঘদিন থেকে অভিমান করে তার শশুরবাড়ি যাননি। তাহলে ভিকটিমকে কিভাবে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হলো এমন প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা?

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জয়চণ্ডি ইউপি’র চেয়ারম্যান আব্দুর রব মাহবুব জানান, চিনু মিয়া ও তার স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল দীর্ঘদিন থেকে। আমি নিজেও শালিসের মাধ্যমে একাধিকবার বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি। হঠাৎ শুনলাম চিনু মিয়ার স্ত্রী বিদেশ চলে গেছে। তিনি পুলিশি তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনার তথ্য উদঘাটনের দাবী জানান।

Ad