আজ অমর একুশে। কৃতজ্ঞ চিত্তে ভাষা শহীদদের স্মরণ করছে কুলাউড়া।

প্রকাশিত: ৮:৪৩ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২

আজ অমর একুশে। কৃতজ্ঞ চিত্তে ভাষা শহীদদের স্মরণ করছে কুলাউড়া।
booked.net

স্টাফ রিপোর্টঃ- (১) বাঙালির মননে অনন্য মহিমায় ভাস্বর চিরস্মরণীয় একুশে ফেব্রুয়ারি। ইতিহাসের পাতায় রক্ত পলাশ হয়ে ফোটা সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, সফিউর, আউয়াল, অহিউল্লাহর রক্তে রাঙানো অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি আজ। রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবহ মহান শহীদ দিবস। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

(২) মাথা নত না করার চির প্রেরণার অমর একুশের এই দিনে সারা বিশ্বের কোটি কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে একুশের অমর শোকসংগীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি…।’ ভাষা শহীদদের রক্তে শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছিল দুঃখিনী বর্ণমালা, মায়ের ভাষা। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে সংগ্রামের সূচনা সেদিন ঘটেছিল, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে।

(৩) একুশে ফেব্রুয়ারি ইতিমধ্যে বাঙালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও যথাযথ মর্যাদায় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালিত হচ্ছে মহান শহীদ দিবস। রাত বারটা এক মিনিটে একুশের প্রথম প্রহর থেকেই কুলাউড়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে কৃতজ্ঞ চিত্তে ভাষা শহীদদের স্মরণ করেছে উপজেলা প্রশাসন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, সংবাদিক বৃন্দ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ক্রিয়াশীল সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

(৪) ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথে ঘটেছিল বাঙালির ইতিহাস পাল্টে দেওয়ার ঘটনা। ‘বাংলা ভাষা প্রাণের ভাষা’ স্লোগানে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দেয় বাঙালি তরুণ প্রজন্ম। একুশের চেতনা আমাদের আত্মমর্যাদাশীল করেছে। ‘একুশ মানে মাথা নত না করা’ চিরকালের এ স্ল্লোগান তাই আজও সমহিমায় ভাস্বর।

(৫) ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে পূর্ববঙ্গের প্রধানমন্ত্রী নুরুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ঘোষণা করেন, ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। পাকিস্তানকে আমরা ইসলামী রাষ্ট্ররূপে গঠন করতে যাচ্ছি।’ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রদেশের ভাষা কী হবে, তা প্রদেশবাসীই স্থির করবেন, কিন্তু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হয়। ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে পুলিশ ছাত্রদের মিছিলে গুলি চালায়। এতে রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, সফিউরসহ নাম না জানা অনেকে নিহত হন। এরপর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাষা আন্দোলন।

(৬) সারাদেশের মতো কুলাউড়া উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজে ও পাড়া-মহল্লায় শিশু-কিশোরদের নিজ হাতে গড়া শহীদ মিনারও সেজে উঠেছে নতুন প্রজন্মের ফুলেল শ্রদ্ধায়। আজ সরকারি ছুটির দিনে কুলাউড়ায় অর্ধনমিত রাখা হয়েছে জাতীয় পতাকা। একই সাথে জাতীয় সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও বেতারে ভাষা দিবসের বিশেষ ক্রোড়পত্র ও অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হচ্ছে।

ছবিঃ- শহীদ মিনার, কুলাউড়া।

Ad