কুলাউড়ায় ভুল চিকিৎসায় শিক্ষার্থীর ভোগান্তি। ভেঙে পড়লো কলেজে পড়ার স্বপ্ন।

প্রকাশিত: ৯:২৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৮, ২০২৩

কুলাউড়ায় ভুল চিকিৎসায় শিক্ষার্থীর ভোগান্তি। ভেঙে পড়লো কলেজে পড়ার স্বপ্ন।
booked.net

Manual5 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টঃ- কুলাউড়ায় ভুল চিকিৎসার কারণে প্রায় ৬ মাস যাবৎ যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমান। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ভুল চিকিৎসার কারণেই তার এই ভোগান্তি। ক্ষত স্থানে এখন দ্রুত সার্জারী করাতে হবে। এদিকে ভোগান্তির কারণে কলেজে পড়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না তার। লেখাপড়া অনেকটাই অনিশ্চিত বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের তেতইগাঁও গ্রামের মাসুক মিয়ার পুত্র এসএসসি উত্তীর্ণ জাহিদুর রহমানের (১৮) ডান হাতের কনুইয়ে টিউমার সদৃশ্য সমস্যা দেখা দিলে ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর কুলাউড়ায় ডাক্তার এম এ ইসলামের শরনাপন্ন হন। এম এ ইসলাম একজন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। কিন্তু তিনি নিজেকে সিনিয়র মেডিকেল সার্জারী বিশেষজ্ঞ হিসেবে তাদেরকে পরিচয় দেন। পাশাপাশি কম খরচে হাতে অপারেশন করে দিবেন যা অন্য কোন এমবিবিএস ডাক্তার পারবে না বলেও তাদেরকে জানান। জাহিদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, নির্ধারিত তারিখে একটি ব্লেড দিয়ে তার ডান হাতের কনুইয়ে অপারেশন করেন। ওইদিন রাতেই জাহিদ তার হাতের প্রচন্ড ব্যাথায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে।

Manual3 Ad Code

জানা যায়, এম এ ইসলাম এই রোগের কোন চিকিৎসক নন কিংবা অপারেশন করার কোন ডিগ্রীও তার নেই। এর আগেও তিনি এই রকম ভুল চিকিৎসার কারণে একটি মামলার শিকার হয়ে জেল পর্যন্ত কেটেছেন। আইন ও মেডিকেল বহির্ভূত তার এই চিকিৎসা বলে জানান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তবে এখনও তিনি বহাল তবিয়তে কুলাউড়ায় বিভিন্ন চেম্বারে বসে এ রকম চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে জাহিদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, তার কলেজে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে পড়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য জাহিদকে নিয়ে সর্বশেষ গত ২২ মার্চ সিলেট নর্থইস্ট মেডিকেলের চিকিৎসক ডা. মো. জসিম উদ্দীনের কাছে যান।

Manual3 Ad Code

ওই চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জাহিদের মা রত্না বেগম জানান, জাহিদের ডান হাতের ক্ষত স্থানে পুঁজ দেওয়ায় এখন হাত অপারেশনের বিকল্প নেই। প্রথম অবস্থায় ক্ষত স্থানের মাংসের টুকরো কেটে ঢাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে পাঠাতে হবে। কিন্তু এ চিকিৎসায় যে টাকার প্রয়োজন তা যোগাড় করা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

Manual1 Ad Code

জাহিদের মা আরো জানান, পুরো বিষয়ে আইনী সহায়তার জন্য মৌলভীবাজার জজ কোর্টের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আলমগীরের শরনাপন্ন হলে তিনি গত ৬ ফেব্রুয়ারি ডাক্তার এম এ ইসলামকে একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন।

এরপর আইনী পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে ওই আইনজীবীর সাথে বারবার যোগাযোগ করি। কয়েকদিন মৌলভীবাজার কোর্টে গিয়ে তার সাথে দেখা করি। কিন্তু তিনি আমাদেরকে কোন পাত্তাই দেননি। পাল্টা আমাদেরকে হয়রানি করছেন। যা ভয়েস রেকর্ড আমাদের কাছে রয়েছে। আনীত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. এম এ ইসলাম বলেন, আমার চিকিৎসা ভুল নয়। চিকিৎসার নিয়ম না মানায় হয়তো এমন সমস্যা হয়েছে। তাছাড়া বিজ্ঞ আইনজীবীর লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার পরপরই বিষয়টি নিস্পত্তির লক্ষ্যে আমি স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে আইনজীবীর কথামতো তার হাতে নগদ ৩৬ হাজার টাকা দিয়েছি। যার ভিডিও ফুটেজ আমার কাছে রয়েছে।

মৌলভীবাজার জজ কোর্টের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আলমগীরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ডা. এম এ ইসলামের দেওয়া ৩৬ হাজার টাকা আমার কাছে রয়েছে। জাহিদের পরিবারের লোকজন আমার সাথে যোগাযোগ করলে বিষয়টা দেখব।

ছবিঃ- শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমান।

Manual4 Ad Code

Ad

Follow for More!