রমজানের প্রস্তুতি।

প্রকাশিত: ২:১২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩

রমজানের প্রস্তুতি।
booked.net

রমজান মাস মুমিনের জন্য রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের কারণ হয়ে আগমন করে। সুতরাং প্রত্যেক মুমিনেরই রমজানের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখা দরকার। শারীরিক, মানসিক, বৈষয়িক ও অভ্যাস গত- সবক্ষেত্রেই পরিপূর্ণ তৈয়ার থাকতে হয়। রমজান পর্যন্ত আয়ুষ্কাল প্রলম্বিত করার জন্য প্রভুর দরবারে অধিকহারে দোয়াও করতে উচিত।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) রজব মাস থেকেই রমজানের প্রতীক্ষায় থাকতেন। এ উপলক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণে মনোযোগী হতেন। রজবের চাঁদ দেখা দিলে অধিক পরিমাণে নফল রোজা রাখা শুরু করতেন। বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করতেন। কোরআনে কারিমের তেলাওয়াত বাড়িয়ে দিতেন। তাসবিহ-তাহলিলে আগের তুলনায় বেশি যত্নবান হতেন। সাথী-সঙ্গীদেরকেও রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতেন।

আকাশে রজবের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নবী করিম (সা.) রমজান পর্যন্ত আয়ু বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। সাহাবিদেরকেও দোয়া করতে বলতেন। বেশি বেশি এ দোয়া পাঠ করতেন- ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফী রাজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রমাজান। ’ অর্থাৎ হে আল্লাহ, তুমি রজব এবং শাবান মাসে আমাদের ওপর বরকত নাজিল কর এবং রমজান পর্যন্ত আমাদের হায়াত দীর্ঘায়িত করে দাও। সুতরাং প্রত্যেক মুসলমানের উচিৎ রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণে মনোযোগী হওয়া। রমজানের প্রস্তুতিকল্পে এ বিষয়গুলো মনে রাখা দরকার-

শারীরিক প্রস্তুতিঃ- অনেকেই গ্যাস্ট্রিক বা এ জাতীয় অন্য কোনো অসুখের দোহাই দিয়ে রোজা পালন থেকে বিরত থাকতে চায়। এটা ঠিক না। এ ব্যাপারে পরিপূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তা আগেভাগেই সেরে নেওয়া দরকার। শারীরিকভাবে পরিপূর্ণ সুস্থতা অর্জনের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

মানসিক প্রস্তুতিঃ- অনেকেই হিজরি সন বা চান্দ্রমাসের খবর রাখে না। ফলে হঠাৎ যখন শোনে, অমুক দিন থেকে রমজান আরম্ভ হবে- তখন অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। রমজানের গুরুত্ব-মাহাত্ম্য যথাযথভাবে অনুধাবন করে না বা করতে পারে না। ফলে সঠিকভাবে রোজা-পালন করতে পারে না। আর রোজা যদিও রাখে- তার জন্য এটি একটি ভারী আমল হিসেবে দেখা দেয়। যেকারণে রোজা তার জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনে না। অথচ চাঁদের হিসেব রেখে এখন থেকেই নিজের মন-মননে রোজাপালন ও এ মাসের প্রভূত কল্যাণ লুফে নেওয়ার মানসিকতা গ্রহণ করলে, পরিপূর্ণ ভক্তি-শ্রদ্ধার সঙ্গে রোজাগুলো পালন করতে পারবে- ইনশাআল্লাহ।

বৈষয়িক প্রস্তুতিঃ- বৈষয়িক কাজকর্ম ও দুনিয়ার নানাবিধ ঝুটঝামেলা রমজান আসার আগেভাগেই কমিয়ে ফেলা দরকার। যাতে রমজানে বৈষয়িক কাজের ভারে ইবাদতে বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়।

অভ্যাসগত প্রস্তুতিঃ- এখন থেকেই নফল ইবাদত ও জিকির-আজকারের অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার। যে কোনো জিনিস হঠাৎই খুব বেশি করে ফেলা যায় ন॥ পূর্ব থেকে অভ্যাস থাকলেই যে কোনো কাজ অধিক পরিমাণে করা যায়। এখন থেকে অভ্যাস গড়ে তুললে রমজানে ইবাদত-বন্দেগি বেশি বেশি করা যাবে বলে আশা করা যায়। সুতরাং এখন থেকেই বেশি বেশি ইবাদতের অভ্যাস গড়ে নেওয়া দরকার।

Ad