যে কাজগুলো করলে দ্রুত মিটবে হেঁচকির সমস্যা।

প্রকাশিত: ৩:৫৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০২২

যে কাজগুলো করলে দ্রুত মিটবে হেঁচকির সমস্যা।
booked.net

লাইফ ষ্টাইল ডেস্কঃ- খাবার খাওয়ার সময় গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজের মধ্যে অথবা অবসর কাটানোর সময় হঠাৎ হেঁচকির প্রকোপ শুরু হওয়াটা খুব সাধারণ একটি বিষয়। এমনকি কোনো কারণ ছাড়াই যখন তখন মানুষের হেঁচকি শুরু হলে তা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। হেঁচকি ওঠাটা খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং সাধারণত মিনিটখানেকের মধ্যেই তা স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিপাকতন্ত্রের গোলমালের কারণেই মানুষের হেঁচকি আসে। আবার অনেকেই বলে থাকেন শরীরে হঠাৎ করে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেলে হেঁচকি ওঠে।

চলুন আগে জেনে নেওয়া যাক মানুষের হেঁচকি আসে কেন?

বিজ্ঞানীরা শত শত বছর ধরে আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিহীন এই শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যার সুনির্দিষ্ট কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছেন। তাদের মতে-

১।হেঁচকির সময় শ্বাসনালীতে সামান্য খিঁচুনির মত হয় যার ফলে শ্বাসযন্ত্রে দ্রুত বাতাস প্রবেশ করে। তখন ভোকাল কর্ড হঠাৎ বন্ধ হয়ে ‘হিক’ শব্দ তৈরি হয়।

২।ফুসফুসের নীচের পাতলা মাংসপেশীর স্তর, যেটিকে ডায়াফ্রাম বলে, হঠাৎ সংকোচনের ফলেই হেঁচকি তৈরি হয়।

৩।দ্রুত খাওয়ার কারণে খাবারের সাথে সাথে পেটের ভেতর বাতাস প্রবেশ করার কারণে ‘ভ্যাগাস’ নার্ভের কার্যকলাপ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে হেঁচকি তৈরি হয়।

৪।চেতনানাশক, উত্তেজনাবর্ধক, পার্কিনসন্স রোগ বা কেমোথেরাপির বিভিন্ন ধরণের ওষুধ নেয়ার ফলেও হেঁচকি তৈরি হতে পারে।এছাড়া কিছু অসুখের ক্ষেত্রেও মানুষের হেঁচকি হতে পারে।

৫। কিডনি ফেল করলে, স্ট্রোকের ক্ষেত্রে, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস বা মেনিনজাইটিসের ক্ষেত্রেও অনেকের হেঁচকি তৈরি হতে পারে।

৬।হাসি বা কাশির মধ্যে, অতিরিক্ত মদ্যপান, অতিদ্রুত খাবার গ্রহণ করা বা ঝাঁঝ সহ পানীয় বেশি পরিমাণে খেলে হেঁচকি শুরু হতে পারে।

হেঁচকি থামানোর উপায়ঃ-

ঘরোয়াভাবে হেঁচকি থামানোর প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে মূলত দুইটি মূলনীতি অনুসরণ করা হয়। একটি হলো রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া যেন শ্বাসনালীতে খিঁচুনি বন্ধ হয়। আরেকটি হলো শ্বাসপ্রশ্বাস ও গলধকরণের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা ‘ভ্যাগাস’ স্নায়ুকে উদ্দীপ্ত করা। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী কয়েকটি পদ্ধতিতে হেঁচকি থামানো যায়। যেমনঃ-

১। কাগজের ব্যাগে নিশ্বাস ফেলা তবে ব্যাগ মাথা দিয়ে ঢুকাবেন না।

২। দুই হাঁটু বুক পর্যন্ত টেনে ধরে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়া।

৩। বরফ ঠাণ্ডা পানি খাওয়া।

৪।কিছু দানাদার চিনি খাওয়া।

৫।লেবুতে কামড় দেয়া বা একটু ভিনেগারের স্বাদ নেয়া।

৬।স্বল্প সময়ের জন্য দম বন্ধ করে রাখা।

৭। হেঁচকি কমাতে ঘাড়ে ম্যাসাজ করলেও অনেকটা উপকার পাওয়া যায়। এতে রক্তাসঞ্চাল বাড়ে ও হেঁচকি কমে।

৮।এক চামচ মাখন খেয়ে নিলে তাড়াতাড়ি হেঁচকি কমে যেতে পারে।

৯।হাতে ম্যাসাজ করুন। আপনার বুড়ো আঙুলের গোড়ার দিকে ম্যাসাজ করলে হেঁচকি কমতে পারে। এ ছাড়া নিজের মনকে যদি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে পারেন, তাহলেও হেঁচকি কমে যায়।

Ad