বর্ণীল ঈদ আজ সাদাকালো ফ্রেমে বন্দী!

প্রকাশিত: ১:৫৬ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০২১

বর্ণীল ঈদ আজ সাদাকালো ফ্রেমে বন্দী!
booked.net

মুসলিম সম্প্রদায়ের দুটি সর্ববৃহৎ উৎসব হচ্ছে ঈদ। কর্মব্যস্ত নাগরিক জীবনে যখন বছর ঘুরে ঈদের কয়েক দিনের ছুটি সঞ্চয় হয়; তখন আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব মিলে কী জম্পেশ আড্ডাই না হয়! এই মহো উৎসবে কোন রকম ভেদাভেদ থাকে না। বিত্তবান কিংবা হত দরিদ্র সকলেই, এই আনন্দের অংশীদার হয়।
.

ইদানীং বিশ্বব্যাপী করোনার থাবা সব বদলে দিয়েছে! চিরচেনা সমাজ ব্যবস্থা, ধ্যান-ধারণা, মানুষে-মানুষে আন্তরিকতা এমনকি দর্শন পর্যন্ত। সবাই করোনা কালে নতুন করে পরিচিত হচ্ছে চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে।

.

তাইতো অনেক টা কাচের দেওয়ালে’ই সীমাবদ্ধ রাখতে হচ্ছে এই ঈদ উৎসবের আনন্দ। এমনকি করোনার মহামারিতে বিধিনিষেধের ঘেরাটোপে, অদৃশ্য কাচের দেওয়ালে বন্দী হয়েছে শিশুদের বর্ণিল ঈদ।
.
হৈ-হুল্লোড় আর উল্লাসের আওয়াজে প্রকম্পিত হয়ে ওঠা ঈদ উৎসব যেন আজ নিরুত্তাপ আর প্রাণহীন।
বাধভাংগা আনন্দের আড়ম্বরহীনতা,  অনাবিল খুশির ঈদকে যেন একেবারেই নিস্তব্ধ করে দিয়েছে। উৎসবের সড়কে নেমেছে আতঙ্ক আর শোকের ছায়া।
.
শুধুই কি ঈদ আনন্দ! কোভিড-১৯’য়ে শিশুদের স্কুল বন্ধ থাকার কারণে বিশ্বে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর সংখ্যা ৩৮ শতাংশ বেড়েছে, যা সংখ্যার হিসাব করলে প্রায় ৩২ কোটি। বিশ্বব্যাপী শিশুদের শিক্ষা গ্রহণের অগ্রগতি ও সার্বিক বিকাশে মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছে করোনার এ বিধিনিষেধ ।
.
সম্প্রতি করোনায় কয়েক দফা লকডাউনে মানুষ শুধু কর্মহীন’ই হয়নি, হয়েছে উপার্জনহীন, স্বপ্নহীন। করোনা মহামারীর কারণে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশই বেকার হয়ে পড়েছেন।এমনকি দেউলিয়া হয়ে পড়েছে অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান।ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) এর সমীক্ষায় দেখা যায়, করোনা ভাইরাস এর কারণে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত ৩৭ শতাংশ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। তাছাড়া আশংকার বিষয় তা আরও বাড়বে।

.

বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২০ শতাংশ আসে এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান থেকে। প্রায় দুই কোটি নারী-পুরুষ এই খাতে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করেন। কর্মহীন এ সব মানুষগুলোর জন্য বর্ণীল ঈদ যেন আজ সাদাকালো ফ্রেমে বন্দী।
.
এমন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সবচাইতে কঠিন অবস্থায় সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেণি। জীবন-জীবিকা নিয়ে ঘোর অন্ধকারে পতিত এই শ্রেণির মানুষ মুখ খুলে কিছু বলতেও পারছেন না।
.

উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে, প্রথম নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। চীনের সীমানা ছাড়িয়ে ক্রমে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস টি , আজ মহামারীর আকার ধারণ করেছে।
.

সব কিছু ছাপিয়ে করোনার কাচের দেয়াল ভেদ করে, বেরিয়ে আসুক গোটা পৃথিবী। প্রতিটি গৃহ থাকুক নিরাপদে। ঈদের আনন্দ যেন পাড়া, মহল্লার অলিগলি, শহর ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এমনটাই প্রার্থনা আমাদের।

ঈদ মোবারক। ঈদ মোবারক।

আব্দুল কাইয়ুম মিন্টু

সম্পাদক, ভয়েস অব কুলাউড়া। 

Ad