আসছে গরম। ত্বকের নিতে হবে বাড়তি যত্ন।

প্রকাশিত: ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩

আসছে গরম। ত্বকের নিতে হবে বাড়তি যত্ন।
booked.net

 

অনলাইন ডেস্কঃ-বৈশাখ শুরুর আগেই চোখ রাঙাচ্ছে সূর্য। জানান দিচ্ছে গ্রীষ্মের আগমনী বার্তা। গরমে অতিষ্ঠ হলেও থাকতে হবে সুস্থ। পোশাক, খাদ্যাভাসের মতো প্রাত্যহিক জীবনের কিছু বিষয়ে আনতে হবে পরিবর্তন। আর গরমের খরতাপ, ধুলো বালুতে ত্বকের যত্ন না নিলে হারাবে সতেজতা।

হালকা রং, কাপড় সুতি:- গরমে আরাম পাওয়ার জন্য পোশাক নির্বাচনে প্রাধান্য দিতে হবে কাপড়ের ধরন, রং ও ডিজাইনকে। সুতি কাপড় সহজেই ঘাম শুষে নেয় এবং পরতেও আরামদায়ক। মেয়েরা চাইলে সুতির পাশাপাশি অ্যান্ডি, শিফন, কটন, কোটা, ধুপিয়ান, লিলেনের পোশাক নির্বাচন করতে পারেন। সুতির ওপর ব্লকপ্রিন্ট, এমব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট ও হালকা সুতার কাজ পোশাকে আনতে পারে বৈচিত্র্য।

পোশাকের ক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে মানান সই এমন রং বেছে নেওয়া ভালো। কালো রংকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। কারণ, গ্রীষ্মে রোদের তীব্রতা অনেক বেশি থাকে। আর কালো রঙের পোশাক সূর্যের তাপ বেশি শোষণ করে। ফলে এ রঙের পোশাক পরলে বেশি গরম লাগবে।গরম কালে সাদা রঙের পোশাকের জয় জয়কার সব সময়ই। গরমে সাদা ও অন্যান্য হালকা রঙের পোশাক আরামের পাশাপাশি চোখকে দেয় প্রশান্তি। হালকা গোলাপি, হালকা বেগুনি, হালকা নীল, বাদামি, আকাশি, হালকা হলুদ, ধূসর সহ হালকা রঙের পোশাক এই গরমে প্রাধান্য দিতে পারেন।

ছেলেদের পোশাকের ক্ষেত্রে গরমে একরঙা, ছাপার বা চেক কাপড়ের শার্ট আরামদায়ক। একটু ঢিলেঢালা শার্ট পরলে ঘামে কাপড় নষ্ট হবে না। হাতের কাজ করা ফতুয়া বা পাঞ্জাবি হতে পারে আপনার উৎসবের পোশাক। সঙ্গে পরতে পারেন জিনস বা একরঙা ট্রাউজার। এতে গরমে যেমন আরাম পাবেন, তেমনি আপনাকে দেখে চোখ জুড়াবে সবার।

এ ছাড়া এ সময়ে আরামদায়ক পোশাক হিসেবে টি-শার্টের বিকল্প পোশাক কমই পাওয়া যাবে। বিশেষ করে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছেলেদের কাছে এই পোশাকের কোনো বিকল্প নেই। কারণ, টি-শার্ট জিনস, গ্যাবার্ডিন কিংবা অন্য প্যান্টের সঙ্গে বেশ মানিয়ে যায়। এ ছাড়া রং ও নকশায় একটু ফ্যাশনসচেতন হলে টি-শার্ট পরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও যাওয়া যায়।

পানীয় বেশি, গুরুপাক কম: বাজারে উঠতে শুরু করেছে গ্রীষ্মকালীন নানা ফল। তরমুজ, বাঙ্গি, আনারস ইত্যাদি ফল বা ফলের রস খেলে শরীর সতেজ থাকবে। এ ছাড়া লেবুর সঙ্গে একটু লবণ ও চিনি মিশিয়ে শরবত বানিয়ে পান করতে পারেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নাজমা শাহীন বলেন, ‘গরমে আমাদের শরীর থেকে পানি দ্রুত কমে। শরীর থেকে পানি বের হয়ে গেলে তা পূরণ করতে পানি ও পানিজাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে।’

গরমে ক্যাফেইন ও কার্বনেটেড-জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলাই ভালো। অনেকে কাজের মাঝে ঘন ঘন চা ও কফি পান করেন। আবার কেউ গরম তাড়াতে কোমল পানীয়ের দ্বারস্থ হন। এগুলো হয়তো সাময়িকভাবে আরাম দেয়, কিন্তু তৈরি করতে পারে হজমের সমস্যা সহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা।

ঠান্ডা-গরমের ভারসাম্য মেনে চললে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে। গরম লাগছে, তাই বলে বাইরে থেকে ঘর্মাক্ত অবস্থায় ফিরে ঠান্ডা পানি পান করবেন না। সর্দি-কাশির সমস্যায় পড়তে হবে। গরমে আমাদের পরিপাকতন্ত্র দুর্বল থাকে, তাই গুরুপাক খাবার কম খাওয়াই ভালো। মসলাযুক্ত, ভাজাপোড়া ও পচা-বাসি খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।

ত্বক-সাজে সাবধান:- রোদ ও ধুলোবালুতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ত্বক। যাঁরা দীর্ঘ সময় রোদে থাকেন, ত্বকের প্রতি অতিরিক্ত উদাসীন, তাঁরাই ক্ষতির শিকার হন বেশি। রোদে রয়েছে ভিটামিন-ডি, যা ত্বকের পুষ্টি জোগায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে রোদে পোড়াটা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।

মিউনিজ ব্রাইডালের স্বত্বাধিকারী তানজিমা শারমিন বলেন, ‘গরমে ত্বক ভালো রাখতে গেলে খাবারদাবারে সতর্ক হওয়া জরুরি। খাওয়াদাওয়া ঠিক থাকলে ত্বকে তার প্রভাব পড়ে। এ সময় সানবার্ন সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া ঘামাচি, র্যা শসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।’

ধুলোবালুতে লোমকূপে ময়লা জমে মুখে ব্রণ হয় এবং রোদে পোড়া ছোপ ছোপ দাগ পড়ে। এসব থেকে বাঁচতে তানজিমা শারমিনের পরামর্শ, ‘বাইরে বের হওয়ার আগে এবং ঘরে ফেরার পর ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। বাইরে বের হলে গরমের দিনে সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করবেন।’

Ad