করোনায় বিনিয়োগ কমেছে ৩২৫৯৬ কোটি টাকা।

প্রকাশিত: ১:৪৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০২১

করোনায় বিনিয়োগ কমেছে ৩২৫৯৬ কোটি টাকা।
booked.net
Manual1 Ad Code

ডেস্কঃ- করোনার কারণে গেল বছরে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমেছে ৩৭৯ কোটি ৩ লাখ ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ৩২ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ। করোনার আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের পর গত দুই অর্থবছর ধরেই বিদেশি বিনিয়োগ কমছে। আলোচ্য সময়ে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) এফডিআইয়ের অবদানও কমেছে। তবে ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছরে বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় ৯ শতাংশ বেড়েছে। করোনার প্রভাব কমার কারণে চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্টেও বিনিয়োগ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ৩০ জুন পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে নিট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল ১১৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার। করোনার প্রকোপ শুরু হলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৭২ কোটি ৭৯ লাখ ডলারে। করোনার প্রকোপ কিছুটা কমায় গত অর্থবছরে তা সামান্য বেড়ে ৮১ কোটি ৬২ লাখে দাঁড়ায়। অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছরে নিট বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ৯ শতাংশ। তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় কমেছে ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ।

Manual6 Ad Code

২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে এফডিআই এসেছে ২৩৭ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে এসেছে ২৫০ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। করোনার প্রকোপ কমায় আলোচ্য সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। এর মধ্যে মূলধন বাবদ বিনিয়োগ ২০১৯-২০ অর্থবছরে এসেছিল ৭২ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। গত অর্থবছরে এসেছে ৮১ কোটি ৬২ লাখ ডলার। আলোচ্য সময়ে বেড়েছে ১২ দশমিক ১ শতাংশ।

নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশি কোম্পানিগুলোর দেশে বিনিয়োগ থেকে ব্যবসা করে অর্জিত মুনাফা যে কোনো দেশে নিয়ে যেতে পারেন বা দেশেই বিনিয়োগ করতে পারেন। অর্জিত মুনাফা বিনিয়োগ করলে তা নতুন বিনিয়োগ হিসাবে ধরা হয়। এ হিসাবে অর্জিত মুনাফা থেকে পুনরায় বিনিয়োগ ২০১৯-২০ অর্থবছরে করা হয়েছিল ১৫১ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে করা হয়েছে ১৫৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ওই সময়ে মুনাফা থেকে পুনরায় বিনিয়োগ বেড়েছে ৫ শতাংশ। দেশে কার্যরত এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানি ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করতে পারে। এ ধরনের বিনিয়োগকেও এফডিআই হিসাবে ধরা হয়। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ খাতে করা হয়েছিল ১৩ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত অর্থবছরে করা হয়েছে ১০ কোটি ৫২ লাখ ডলার। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ কমেছে ২০ দশমিক ২৬ শতাংশ। করোনার কারণে এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানিকে ঋণ দেওয়ার প্রবণতা এখনো বাড়েনি। কারণ তারা এখনো করোনার ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারেনি। যেজন্য বিদেশি কোম্পানিগুলোর এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানির ঋণ বাবদ বিনিয়োগ কমেছে। তবে চলতি অর্থবছরে এ খাতের বিনিয়োগ বাড়তে শুরু করেছে।

Manual8 Ad Code

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছরে এফডিআই ৪ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়লেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। একইভাবে মূলধন বা বিদেশ থেকে পুঁজি হিসাবে আনা বিনিয়োগ ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়লেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। নিট এফডিআই ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছরে ১২ শতাংশ বাড়লেও ২০১৮-১০ অর্থবছরের তুলনায় কমেছে ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ।

Manual7 Ad Code

অর্থাৎ করোনার আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে গত দুই অর্থবছরের তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগ বেশি এসেছে। করোনার পর গত অর্থবছরে বিনিয়োগ পরিস্থিতি করোনার আগের অবস্থায় এখনো ফিরে যায়নি।

করোনার পরও দেশে বিদেশি বিনিয়োগের স্থিতি বেড়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছরে স্থিতি বেড়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

দেশের মোট জিডিপিতে নিট এফডিআইয়ের অবদান করোনার আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ১ দশমিক ৬৩ শতাংশ। করোনার প্রথম আঘাতে তা গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ শতাংশে নেমে আসে। করোনার দ্বিতীয় আঘাতে গত অর্থবছরে তা আরও কমে ১ শতাংশের নিচে (০.৯৫) নেমে আসে।

Manual4 Ad Code

গত অর্থবছরে দেশে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ এসেছে উৎপাদন খাতে, যা মোট বিনিয়োগের প্রায় ৪০ শতাংশ। পাওয়ার, গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম খাতে এসেছে ২৪ শতাংশ। ট্রেড অ্যান্ড কমার্স খাতে ১৬ শতাংশ, ট্রান্সপোর্ট ও যোগাযোগ খাতে ১০ শতাংশ, সেবা খাতে ৬ শতাংশ ও অন্যান্য খাতে ৪ শতাংশ।

সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র সাড়ে ১৬ শতাংশ। এরপরই রয়েছে সিঙ্গাপুর ১৬ শতাংশ। নেদারল্যান্ডস সাড়ে ৭ শতাংশ, চীন সাড়ে ৬ শতাংশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত সাড়ে ৬ শতাংশ, মালয়েশিয়া ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, যুক্তরাজ্য ৬ শতাংশ, মিসর ৫ দশমিক ৭ শতাংশ, হংকং ৩ দশমিক ২ শতাংশ ও অন্যান্য দেশ ২৫ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে বাংলাদেশে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad

Follow for More!