প্রকাশিত: ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ, মে ৮, ২০২১
আত্মহত্যার ঘটনায় প্রথমে একটি ইউডি বা অপমৃত্যুর মামলা হয়। প্রশ্ন আসতে পারে ইউডি মামলা কি। ইউডি শব্দের অর্থ “আন-ন্যাচারাল ডেথ”। যে মৃৃত্যুটি স্বাভাবিক হয়নি, যাকে বলে অস্বাভাবিক মৃত্যু বা অপমৃত্যু। আশা করি বুঝা গেছে। পরবর্তীতে মৃতের স্বজনরা যদি মনে করেন এ মৃত্যুর পেছনে কারো প্ররোচনা বা সহায়তা রয়েছে তবে তার বা তাদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেন বা করে থাকেন।
তবে এরূপ ‘মনে কারা’র বিষয়টি মনে করলেই হবেনা, তার পারিপাশ্বিক অকাট্য প্রাথমিক প্রমাণ লাগবে যা পরবর্তীতে বিচারিক প্রক্রিয়ায় চুড়ান্ত হলে আসামী বা আসামীরা দোষী সাব্যস্ত হয়ে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক আইনে নির্দেশিতমতে দন্ডপ্রাপ্ত হবেন। আত্মহত্যা না হত্যা, সে বিষয়টি ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হবে। এক্ষেত্রে যদি হত্যা রিপোর্ট আসে তবে আত্মহত্যার প্ররোচনার বা ইউডি মামলাটি ‘হত্যামামলায়’ রূপান্তরিত হবে।
তবে এ জাতীয় মামলাগুলো খুবই স্পর্শকাতর মামলা। খুব সাবধানে এগুতে হয়। বিচার প্রক্রিয়ার শেষে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত যদি মনে করেন, মামলাটি কেবল আসামীকে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, তবে বাদির হিতে বিপরীত হতে পারে। মিথ্যা মামলা করার দায়ে বাদি নিজেই অভিযুক্ত হবেন।
এখানে আরকটি বিষয় এই যে, আমাদের দ-বিধিতে অর্থাৎ প্যানাল কোডে ‘প্ররোচনা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি, সেখানে বলা হয়েছে “আত্মহত্যায় সহায়তা করা”। এ ধারায় আত্মহতায় প্রত্যক্ষ সহায়তাকেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যেমন, সহায়তাকারী ভিকটিমের মানসিক অবস্থা এমনভাবে তৈরী করেছে যে, সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। ভিকটিম তার মানসিক অবস্থা ভাল করার জন্য চেষ্টা চলাচ্ছে, কিন্তু আভিযুক্ত ব্যক্তি তার সকল সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।
একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি স্পষ্ট করা যায়। মনে করুন, মর্জিনা নামের একটি মেয়েকে, তার স্বামী ও স্বামীর বাড়ীর লোকেরা কার্যতঃ এমনভাবে আবদ্ধ রেখে নিদারুণ শারিরীক বা মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে, সে শত চেষ্টা করেও তার বাপের বাড়ীর লোকজন কিংবা পাড়াপড়শী কারো সাথেই যোগাযোগ করে তার এ নির্যাতনের কথা জানাবার সুযোগ পায়নি বা তাকে দেয়া হয়নি। অতঃপর সে নিজেকে শেষ করার মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকে আর বলতে থাকে আমাকে বাঁচতে দাও নচেৎ বিষ এনে দাও আমি মরে যাবো, আমার আর সহ্য হয়না। তখন স্বামীর বাড়ীর কেউ একটি বিষের বোতল কিনে এনে সুকৌশলে করে মর্জিনার ঘরের সহজলভ্য কোনো স্থানে রেখে দেয় যাতে ইচ্ছে করলেই তা মর্জিনা পেতে পারে। এমতাবস্থায় সে একদিন বিষ খেয়ে মরে গেলো।
স্বামীর বাড়ীর লোকজন বললো, মর্জিনা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। সবাই দেখলোও তাই। কারণ, ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। পোস্টমর্টেম রিপোর্টেও মর্জিনার আত্মহত্যার বিষয়টি আসলো। পরে মর্জিনার বাপের বাড়ীর লোকজন কোনোকোনোভাবে জানতে পারলো মর্জিনার উপর নীরব অত্যাচার করা হয়েছে। তারা মর্জিনার স্বামীসহ তার বাড়ীর সন্দেহভাজন লোকদের বিরুদ্ধে একটি আত্মহত্যার সহায়তা বা প্ররোচনার মামলা করলো। মামলার তদন্তপর্যায়ে সাক্ষ্যপ্রমাণে দেখা গেলো মর্জিনার মৃত্যুর কয়েকদিনপূর্বে মর্জিনার স্বামী স্থানীয় বাজারের একটি দোকান থেকে একটি বিষের বোতল কিনেছিল। দোকানদারও সাক্ষী দিল যে, ক্ষেতের পোকামাকড় মারার জন্য মর্জিনার স্বামী এই বিষের বোতলটি কিনেছিল এবং মর্জিনার ঘরে প্রাপ্ত বিষের বোতলটি সনাক্ত করলো। ব্যাস্, আত্মহত্যার সহায়তার বিষয়টি স্পষ্ট প্রমাণিত হয়ে গেলো। প্রিয় পাঠক, সমাজে এরকম ভিন্নভিন্ন অনেক ঘটনা আপনারা দেখেছেন এবং আমরাও পেশাগত জীবনে এরকম অনেক মামলা বিজ্ঞ বিচারিক আদালতে পরিচালনা করার সুযোগ পেয়েছি এবং উচ্চ আদালতে করছিও।
এখানে মনে রাখতে হবে, ‘প্ররোচনা’ ও ‘সহায়তা’ দুটো শব্দের অর্থ ভিন্ন। আইনের ভাষায় প্ররোচনাকে আমরা এভাবে বুঝতে পারি, যেমন প্ররোচনা হলো- কাউকে কোনো কিছু করতে মানসিকভাবে উদ্ভূদ্ধ করা আর সহায়তা অর্থ ঐ কাজে সরাসরি সহায়তা করা। যেমন, একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত লোককে আত্মহত্যা করার জন্য প্রভাবিত করে দড়ি, টেবিল বা যা দিয়ে আত্মহত্যা করা যায় এমন বস্তু প্রত্যক্ষভাবে ব্যবস্থা করে দেয়া, যাতে সে সহজেই আত্মহত্যা করতে পারে।
প্ররোচনাকে একটু সহজ করি- যেমন, কোনো এক গুরুব্যক্তি জড়বুদ্ধি বা কমবুদ্ধিসম্পন্ন তার এক শিষ্যকে বললো, তুমি যাদি অমাবস্যার রাতের শেষ প্রহরে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে দেবতার উদ্দেশ্যে আত্মহুতি দাও, তবে তোমার জন্য স্বর্গ নিশ্চিত হয়ে যাবে। আর এ পদ্ধতি হলো দুনিয়ার অশান্ত ক্ষণস্থায়ী জীবনের মুক্তির উপায়। এ কথায় প্ররোচিত হয়ে শিষ্যটি আত্মত্যাগে উদ্ভূদ্ধ হয়ে আত্মহত্যা করলো। সে যখন আত্মহত্যা করে, গুরুব্যক্তিটি তখন হয়তো তার থেকে বহু ক্রোশ মাইল দুরে ছিল। তাতে কি, তিনি তো তাকে আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা দিয়েছিলেন।
এখানে তিনি অভিযুক্ত হবেন। স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন সাবালক কোনো ব্যক্তিকে কেউ হয়তো বললো, “তুই এতো নিকৃষ্ট যে, তোর এদুনিয়ায় বেঁচে থেকে লাভ নেই, তুই শুধু আমার যন্ত্রণার কারণ হবে, তোর মরে যাওয়া উচিৎ” অথবা, কেউ বললো, “তুই মরে গিয়ে নিজেও বাঁচ, আমাদেরও বাঁচা” ইত্যাদি বহুরকমের কথা আছে। একথা কথাগুলোর ভার সইতে না পেরে কেউ যদি আত্মহত্যা করে, তবে যারা এ কথাগলো বলেছেন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এক্ষেত্রে তাদেরকে আত্মহত্যার প্ররোচনার বা সহয়াতার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হলেও আইনের অনেক জটিল ফাঁফোকের কারণে পরে অধিকাংশক্ষেত্রেই দেখা যায় তারা খালাস পেয়ে যায়।
১ম পাতা থেকে আগত- (“আত্মহত্যার প্ররোচনার” মামলার আইনের বিধি-বিধান এবং অধিকাংশক্ষেত্রে খারিজ হবার বাস্তবতা!)
আত্মহত্যার প্ররোচনা বা সহায়তার মামলা দুটো আইনে করা যায়। এক. বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৩০৫ ও ৩০৬ ধারায়।
ধারা দুটো এখানে উল্লেখ করছি, ধারাঃ ৩০৫- “শিশু কিংবা উম্মাদ ব্যক্তিকে আত্মহত্যায় সহায়তাকরণঃ “আঠারো বছর বয়সের কম বয়সের কোনো ব্যক্তি, কোনো উম্মাদ ব্যক্তি, কোনো বিকারগ্রস্ত ব্যক্তি, কোনো জড়বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি অথবা কোনো প্রমত্ততাগ্রস্ত (মাদকাসক্ত বা মাতাল) ব্যক্তি আত্মহত্যা করিলে, অনুরূপ আত্মহত্যা অনুষ্ঠানে সহয়তাকারী ব্যক্তি মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা অনধিক দশ বৎসরকাল মেয়াদি কারাদন্ডে-দন্ডিত হইবে এবং তদুপরি অর্থ দন্ডে-দন্ডনীয় হইবে।”
ধারাঃ ৩০৬- আত্মহত্যায় সহায়তাকরণঃ “কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করিলে, অনুরূপ আত্মহত্যা অনুষ্ঠানে সহায়তাকারী ব্যক্তি যেকোনো বর্ণনার কারাদ– যাহার মেয়াদ দশ বৎসর পর্যন্ত হইতে পারে- দন্ড ও অর্থদন্ড হইবে এবং তদুপরি অর্থদন্ডও দন্ডনীয় হইবে।” (অর্থাৎ দশ বৎসর হতে পারে বা তার কমও হতে পারে) এখানে দঃ বিধির ৩০৫ধারার সাজা কঠিন। কারণ, এ ধারায় বিকারগ্রস্ত, মাতাল, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের আত্মহত্যার সহয়তার বিষয়ে বলা হয়েছে এবং ৩০৬ধারায় স্বাভাবিক মানুষের আত্মহত্যার সহায়তার বিষয়ে বলা হয়েছে। তাই এখানে আগের ধারার চেয়ে শাস্তি কম। যা আমরা ধারা দুটি পাঠ করলেই সহজে অনুধাবন করতে পারি।
দুই. নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এ আত্মহত্যার প্ররোচনার বিরুদ্ধে কোনো বিধান ছিলনা। অত্র আইন (সংশোধিত-২০০৩) এ ৯এর‘ক’ নামে নতুন একটি ধারা সংযোজন করা হয়েছে। যারফলে বর্তমানে এই আইনেও এমামলা করা যায়। তবে এক্ষেত্রে নারীর সম্ভ্রমহানীর বিষয়টি যুক্ত থাকতে হবে। অর্থাৎ কেউ এমনভাবে কোনো নারীর সম্ভ্রমহানি বা যৌন নির্যাতন করলো, যার অপমান সইতে না পেরে ঐ নারী বা শিশুটি আত্মহ্যতা করল, সেক্ষেত্রে সম্ভ্রমহানিকারী বা নির্যাতনকারী আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে অভিযুক্ত হবেন। ধারাটি হুবহু উল্লেখ করছি যাতে বিষয়টি আমাদের কাছে পরিস্কার হয়।
উক্ত আইনের ৯-ক ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা, ইত্যাদির শাস্তির কথা বলা হয়েছে, “কোনো নারীর সম্মতি ছাড়া বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত কোনো কার্য দ্বারা সম্ভ্রমহানী হইবার প্রত্যক্ষ কারণে কোনো নারী আত্মহত্যা করিলে উক্ত ব্যক্তি উক্ত নারীকে অনুরূপকার্য দ্বারা আত্মহত্যা করিবার অপরাধে অপরাধী হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনধিক দশ বৎসর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বৎসর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।” এ আইনে দ-বিধির ৩০৫ধারার কোনো বক্তব্য নাই। অপ্রাপ্ত বয়স্ক, বিকারগ্রস্ত বা মাতাল বা জড়বুদ্ধিসম্পন্ন কারো আত্মহত্যার সহায়তার জন্য দঃবিঃ’র ৩০৫ধারায়ই মামলা করা যুক্তিযুক্ত।
এখানে একটি বিষয় বলাবাহুল্য, কেউ যদি আত্মহত্যা করতে গিয়ে না মরে বেঁচে যান, তবে নিজেকে হত্যার চেষ্টা করার জন্য দন্ডবিধির ৩০৯ধারায় এক বৎসর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডই তার হতে পারে।
এসব মামলা স্পর্শকাতর কেন বললাম, বাস্তবজীবনে দেখেছি, বছরের পর বছর মামলাগুলো বিজ্ঞ আদালতে সুন্দরভাবে পরিচালানা করার পরেও সিংহভাগ মামলার আসামীরা খালাস পেয়ে যায়। এর কিছু অনাকাঙ্খিত কারণ আছে। প্রশ্ন আসতে পারে এডভোকেটরা কি জানতেন না আইনের এ বিধি বিধানগুলো! হ্যাঁ, হয়তো জানতেন।
এখানে দুটো বিষয়, এক. শেষ পর্যন্ত মামলা চলুক, দেখি না কি হয়, এই একটা মানসিকতা পোষণ করা; দুই. মামলা দীর্ঘায়িত করতে না পারলে হয়তো অনেকেই পেশাগত ক্ষতির আশংকা করে থাকেন। আর যাঁরা এসবের ধার ধারেনা, মামলা নিজের কাছে থাকুক বা না থাকুক, তাঁরা যা জানেন সত্য ও ন্যায়নিষ্ঠার সাথে বাদিকে সেমতে একটি ভাল পরামর্শ দিয়ে দেন। এর বেশীরভাগক্ষেত্রেই তাঁকে মামলা হারাতে হয়। কারণ এই ভাল কথাগুলো বাদির পছন্দ হয়না।
তখন তিনি অন্য জাদরেল কাউকে খুঁজেন এবং কেউ না কেউ মামলাটি করেন এবং দু’চার বছর পর ঠিকই আসামী খালাস পেয়ে যায় আর বাদি হন ক্ষতিগ্রস্ত। তবে মামলা বিলম্ব কিংবা নষ্ট হবার পিছনে অনেক বিষয় জড়িত থাকে। তাই কোন্ পর্যায়ে সমস্যা হয়ে থাকে তা মোটাদাগে বলা মুসকিল। এখানে প্রথমেই বাদির বক্তব্যের প্রকৃত সত্যতা, মামলার তদন্ত পর্যায়ের স্তরগুলো, মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ায় নানান জটিলতা, বাদী কর্তৃক যথাযথ সাক্ষীপ্রমাণ উপস্থাপনে সমস্যা, মামলা পরিচালনায় খামখেয়ালী ইত্যাদি নানান উপকরণ আছে, যা বিবেচনা করতে হয়।
একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, “সত্য সর্বদাই সত্য” এবং একজন ভালমানুষ সর্বদা সত্যের পথেই হাঁটেন, হোক তাঁর যতো ক্ষতি। অনেক সত্য ও বাস্তবেকৃত অপরাধ আছে যেগুলোকে সরাসরি মামলার ধারায় ফেলা যায়না, তখন ঘটনার মধ্যে কিছুটা রংচং মাখিয়ে সংশ্লিষ্ট আইনের ধারার জন্য উপযুক্ত করতে হয়, এটি দোষের কিছুনা। কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা প্রায়শই যে ভূলটা করি, তুচ্ছ ঘটনাও বাদী চায় আসামীদের জনমের মতো শিক্ষা দিয়ে দিতে। এমতাবস্থায় উকিল সাহেবরা বা যিনি মামলা লিখেন তিনি বাদীকে সন্তুষ্ট করার জন্য মামলাটাকে কঠিন করতে মামলার মূল বা প্রকৃত ঘটনার সাথে এতো বেশী পরিমাণ রংচং মাখিয়ে দেন যে মামলাটি যখন বিচারক প্রক্রিয়ায় যায় তখন বিজ্ঞ আদালতে ঐ রংচং মাখানো কল্পিত ঘটনা প্রমাণের দিকেই বেশী নজর দিয়ে থাকেন। কারণ প্রকৃত ঘটনার চেয়ে রংচং মাখানো ঘটনার বিষয়বস্তু যেহেতু কঠিন তাই ন্যায়বিচারের স্বার্থে ওগুলো প্রমাণ করা দরকার হয়ে পড়ে তাই মূল ঘটনা আড়ালে পড়ে যায়। কিন্তু রংচং মাখানো ঘটনাগুলো তো কল্পিত বা সৃজিত। তাই স্বাভাবিকভাবে যখন এগুলো প্রমাণ করা যায়না বা বাদীপক্ষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়, তখন বাদির মামলার প্রকৃত ঘটনাটি বিজ্ঞ আদালতের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেনা। ফলাফল, মামলা খারিজ হয় এবং আসমীরা খালাস পায়। ফৌজদারী মামলার ক্ষেত্রে এরকম ঘটনাগুলোই বেশীই ঘটে। তাই মামলা খারিজ হবার ঘটনাও অধিক থাকে। দোষ হয় ফৌজদারী বিচারব্যবস্থার, প্রশ্নের সম্মুখিন হন উকিলসাহেবরা! বাদী তখন তার নিজের দোষটি দেখেনা। এটাই বাস্তবতা। ন্যায়বিচার নিশ্চিৎ করতে চাইলে এগুলো থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। নচেৎ ন্যায়বিচার ডুঁকরে-ডুঁকরে কাঁদবে! যারয মামলায় অতিরিক্ত রংচং মাখান তাদেরকেই এর দায় নিতে হবে।
পরিশেষে বলতে চাই, প্রকৃত অপরাধ ও অপরাধীর বিচার হোক, মানুষ যেনো ন্যায়-বিচার পায়। আর এর জন্য আমাদের সচেষ্ট ও সচেতন থাকতে হবে। ধন্যবাদ।
লেখক- এড্ মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট।
সাবেক সহসভাপতি (১৯৯৩-৯৪)- জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা, ঢাকা।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি- জুড়ী প্রেসক্লাব(১৯৯৮), মৌলভীবাজার।
কলামিস্ট ও আইনগ্রন্থ লেখক।
Published From
Positive International Inc,
73-16, Roosevelt Ave Floor 2, Jackson Heights, New York 11372.
Email : voiceofkulaura2@gmail.com
Chief Editor : Shafiq Chowdhury
Editor : Abdul Quayyum
Managing Editor : Nurul Islam Emon
Design and developed by positiveit.us