প্রকাশিত: ৬:৫০ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২১
কৃষি ডেস্কঃ- পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষের প্রধান খাদ্য ‘ভাত’। ধান থেকেই প্রক্রিয়াজাতকরণের পর তৈরি হয় ভাত। আমাদের দেশের অধিকাংশ কৃষকই ধান চাষ করেন। ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রোগ, পোকামাড়ক আক্রামণসহ কৃষক নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন। ধান উৎপাদনে যেসব পোকার আক্রমণ হয় তার মধ্যে ক্ষতিকারক পোকা হচ্ছে পাতা মোড়ানো পোকা।
এ পোকা ধানের পাতা লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পাতায় সাদা লম্বা দাগ দেখা যায়। খুব বেশি ক্ষতি করলে পাতাগুলো পুড়ে পাওয়ার মতো দেখায়। ক্ষতিগ্রস্ত পাতার পাশ দিয়ে বিশেষ করে পাতার লালচে রেখা রোগও শুরু হতে পারে।
পাতা মোড়ানো পোকার পূর্ণ বয়স্ক মথের পাখায় ঢেউ খেলানো কমলা বাদামি রঙের রেখাবিশিষ্ট অসংখ্য কালো দাগ রয়েছে। মথের পাখা শাড়ির পাড়ের মতো দেখা যায়। পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী পোকা পাতার মধ্য শিরার কাছে ডিম পাড়ে। কীড়াগুলো পাতার সবুজ অংশ খায় এবং বড় হওয়ার সাথে সাথে তারা পাতা লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে একটা নলের মতো করে। মোড়ানো পাতার মধ্যেই কীড়াগুলো পুত্তলীতে পরিণত হয়।
জমিতে অতিরিক্ত মাত্রায় নাইট্রোজেন ব্যবহার করলে এ পোকার আক্রমণ হতে পারে। এছাড়া বৃষ্টির পর টানা দু-তিনদিন প্রখর রৌদ হলেও এ পোকার আক্রমণের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।
জৈবিক দমন ব্যবস্থা: প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত গাছ থেকে পোকার ডিম বা কীড়া সহ পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা যায়। ধানের পাতা মোড়ানো পোকা দমনে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে পূর্ণবয়স্ক মথ ধরে দমন করা যায়। জমিতে ডালপালা পুঁতে দিয়ে পাখি বসার স্থান তৈরি করলেও পাখি পূর্ণ বয়স্ক মথ ধরে খেয়ে ফেলে। জমিতে চারা রোপণের ৪০ দিন পর্যন্ত আগাছামুক্ত রাখতে হয়।
রাসায়নিক দমন ব্যবস্থা: ধানের জমিতে আক্রান্ত গাছে শতকরা ২৫ ভাগ পাতার ক্ষতি হলে রাসায়নিক পদ্ধতি ব্যবহার করে এ পোকা দমন করতে হয়। এক্ষেত্রে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার উত্তম। পাতা মোড়ানো পোকা দমনের জন্য ক্লোপাইরিফসজাতীয় কীটনাশক (যেমন- ডারসবান ২০ ইসি বা পাইক্লোরেক্স ২০ ইসি ২০ মিলিলিটার) অথবা ম্যালাথিয়নজাতীয় কীটনাশক (যেমন- ফাইফানন ২৫ মিলিলিটার) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর দু-তিনবার বিকালে স্প্রে করতে হয়। অথবা ফাইটার ২.৫ ইসি ১০ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হয়। অথবা কেয়ার ৫০ এসপি ২৪ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হয়।
এছাড়া স্থানীয় কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে কীটনাশক ব্যবহার করে দমন করতে হবে। জমিতে অতিরিক্ত মাত্রায় ইউরিয়া সার বা এলোপাতাড়ি বালাইনাশক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বাজারে অনেক নকল মানহীন কীটনাশকও পাওয়া যায়; সেগুলো ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়ে কৃষি অফিসের পরামর্শে কীটনাশক ব্যবহার করা উত্তম।
PUBLISHED FROM
2152-B WESTCHESTER AVE BRONX
NEW YORK 10462 USA
Email : voiceofkulaura2@gmail.com
Chief Editor : Shafiq Chowdhury
Editor : Abdul Quayyum Mintu
Managing Editor : Nurul Islam Emon
Design and developed by positiveit.us