প্রকাশিত: ৪:৩৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৯, ২০২১
করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে দুনিয়াজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। কোভিডের আগের স্ট্রেইনগুলোর তুলনায় এটি কতটা শক্তিশালী? আক্রান্ত হলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কেমন? এটি কি করোনার প্রচলিত টিকাগুলোকে ফাঁকি দিতে সক্ষম? এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মানুষের মনে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় গত বুধবার শনাক্ত হওয়া এই স্ট্রেইন নিয়ে বিশেজ্ঞরা এখনই খুব বেশি কিছু ধারণা দিতে পারছেন না। তবে তাদের আশঙ্কা, এটি অতি সংক্রামক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও ধরনটিকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বা উদ্বেগজনক হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করেছে।
সাউথ আফ্রিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (এসএএমএ)-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ড. অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজি। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে মেডিক্যাল প্র্যাকটিস করছেন তিনি। তার মতে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টটি ‘অস্বাভাবিক কিন্তু মৃদু’। তিনি নতুন করে বেশ কয়েকজনকে পরীক্ষা করেছেন। তাদের মধ্যে একাধিক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত। তাদের অধিকাংশই করোনার টিকা নেননি।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত যাদের শরীরে এই ধরনটি শনাক্ত করেছি, তাদের স্বাদ বা গন্ধ চলে যায়নি। তবে তাদের হালকা কাশি হতে পারে। এর বিশেষ কোনও উপসর্গ এখন পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি। আক্রান্তদের বেশ কয়েকজন বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
এদের মধ্যে ছয় বছর বয়সী এক শিশুও আক্রান্ত। তার নাড়ির স্পন্দন এবং শরীরের তাপমাত্রাও বেশি ছিল। এদের সবারই নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন প্রবীণ এই চিকিৎসক।
দক্ষিণ আফ্রিকার চিকিৎসক কোয়েটেজি ব্যাখ্যা করেন, ওমিক্রনে মৃদু উপসর্গ হিসেবে মাংসপেশির ব্যথা এবং দুই একদিনের মধ্যে ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। দেশের হাসপাতালগুলো এখনও এতে আক্রান্ত রোগীদের ভিড় দেখা যায়নি। তবে প্রবীণ এবং যারা এখনও টিকা নেননি তারা এতে আক্রান্ত হলে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সেন্টার ফর এপিডেমিক অ্যান্ড ইনোভেশন-এর পরিচালক টুলিও ডি অলিভিয়েরা এক টুইট বার্তায় বলেন, এই ভ্যারিয়েন্টটি অস্বাভাবিকভাবে মিউটেশন করেছে। ভাইরাসের যে অংশটি রিসিপটর বাইন্ডিং ডোমেইন, আমাদের শরীরের কোষের সঙ্গে প্রথম সংযোগ ঘটায়, নতুন ভ্যারিয়েন্টে সেটির ১০টি মিউটেশন রয়েছে। ভয়াবহ ক্ষতিকর হিসেবে আলোড়ন তৈরি করা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে এই মিউটেশন ছিল মাত্র দুটি। যেহেতু আফ্রিকার একাধিক দেশে এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে, ফলে আইসোলেশন না করে দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানোর উচিত পুরো বিশ্বের।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওমিক্রন এখন পর্যন্ত ৫০ বার রূপ বদল করেছে। স্পাইক প্রোটিনের বদল ঘটেছে ৩০ বারের বেশি। এটি সহজেই মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। দেহকোষে ঢুকে পড়ার জন্য যে কোনও ভাইরাস মূলত এ স্পাইক প্রোটিন ব্যবহার করে। আর স্পাইক প্রোটিনকে লক্ষ্য করেই বেশিরভাগ টিকা তৈরি করা হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এটি আগের ছড়িয়ে পড়া ভ্যারিয়েন্টের মতো ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, আফ্রিকার একাধিক দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন।
এর লক্ষণ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউট (এনআইসিডি) বলছে, বি.১.১.৫২৯ ভ্যারিয়েন্টে এখন পর্যন্ত অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা যায়নি। ডেল্টাসহ অন্যান্য ধরনের মতোই এখনও ওমিক্রনের প্রায় একই রকম লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। সার্চ-কোভ-২ ভ্যারিয়েন্টগুলোকে ভালোভাবে অনুধাবন এবং এই বিষয়ে অধিক গবেষণার পরই জানা যাবে, জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
PUBLISHED FROM
2152-B WESTCHESTER AVE BRONX
NEW YORK 10462 USA
Email : voiceofkulaura2@gmail.com
Chief Editor : Shafiq Chowdhury
Editor : Abdul Quayyum Mintu
Managing Editor : Nurul Islam Emon
Design and developed by positiveit.us