ব্রিটিশ বাংলাদেশি সাদিয়ার ভলটিক স্প্রে রাখবে দুই সপ্তাহ করোনামুক্ত!

প্রকাশিত: ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২১

ব্রিটিশ বাংলাদেশি সাদিয়ার ভলটিক স্প্রে রাখবে দুই সপ্তাহ করোনামুক্ত!
booked.net

Manual3 Ad Code

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে এ রকম একটি বিশেষ ধরনের জীবাণুনাশক স্প্রে আবিষ্কার করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক ব্রিটিশ নারী বিজ্ঞানী।

 

২৬ বছর বয়সী সাদিয়া খানম দেড় বছর ধরে গবেষণার পর ভলটিক নামের এই জীবাণুনাশক স্প্রে তৈরি করেছেন, যা যে কোনো বস্তুর সারফেসে স্প্রে করা হলে সেটি দুই সপ্তাহের জন্য জীবাণুমুক্ত থাকবে।

কোভিড মহামারি মোকাবিলায় এই উদ্ভাবনকে বড় ধরনের আবিষ্কার হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে এবং ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা এনএইচএসসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এটিকে অনুমোদন দিয়েছে।

আরো পড়ুনঃ  প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অফিসার পরিচয়ে প্রতারণা। টিলাগাও ইউনিয়নের হিমেল আটক।

ব্রিটেনে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর সাদিয়া খানম তার পিএইচডি গবেষণা স্থগিত রেখে উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের চেশায়ারে তার পিতার রেস্তোরাঁয় এই ভাইরাসটি নিয়ে প্রাথমিক গবেষণা শুরু করেন।

Manual8 Ad Code

একপর্যায়ে একটি কার্যকর ইকুয়েশন উদ্ভাবন করতে সক্ষম হন। তিনি এর নাম দিয়েছেন ভলটিক যা সংক্রামক রোগজীবাণু নাশের একটি প্রক্রিয়া এবং এটি উচ্চমানের সুরক্ষা দিয়ে থাকে। বিশেষ একটি মেশিন দিয়ে এই তরল স্প্রে করতে হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটির নাম ভলটিক।

সাদিয়ার ভলটিক স্প্রে করোনামুক্ত রাখবে দুই সপ্তাহ!

ভলটিক কী?

Manual3 Ad Code

সাদিয়া খানম বলেন, এই জীবাণুনাশ প্রক্রিয়ার একটি অংশ হচ্ছে—কোনো জীবাণু যদি কোনো কিছুর সংস্পর্শে আসে তখন তাকে ধ্বংস করে ফেলা। অর্থাৎ কোনো কিছুর পৃষ্ঠ বা সারফেসের ওপর যদি কোনো ভাইরাস থাকে, এর সাহায্যে তাকে সঙ্গে সঙ্গেই মেরে ফেলা যায়।

Manual7 Ad Code

তিনি জানান যে এটি চামড়া থেকে শুরু করে কাঠ, লোহা, কাপড় সব ধরনের সারফেসের ওপর কাজ করে বলে গবেষণায় তিনি দেখেছেন। এই প্রক্রিয়ায় কোনো কিছুর সারফেসের ওপর একটি কোভ্যালেন্ট বন্ড তৈরি হয় যা সেখানে ১৪ দিনের জন্য একটি শক্ত প্রাচীর তৈরি করে।

এই বন্ড খুবই শক্তিশালী, কোনো কিছুই এটিকে ভাঙতে পারে না। এভাবে এটি টানা দুই সপ্তাহের জন্য যে কোনো জীবাণু থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকে। এসব জীবাণুর মধ্যে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক, করোনা ভাইরাস, ইবোলা ভাইরাস, এইচআইভি-বি ইত্যাদি।

সাদিয়ার ভলটিক স্প্রে করোনামুক্ত রাখবে দুই সপ্তাহ!

কীভাবে কাজ করে?

বিজ্ঞানী সাদিয়া খানম জানান, এই ভলটিক স্প্রে খুবই উচ্চচাপের মধ্যে কাজ করে। ধ্বংস করতে পারে জীবাণুর ডিএনএ এবং যে কোনো ধরনের ডিএনএ। বর্তমানে বাজারে যেসব জীবাণুনাশক পাওয়া যায়, তার বেশির ভাগই খুব বেশি সময় ধরে সুরক্ষা দিতে পারে না।

কিন্তু এই ভলটিক স্প্রে অন্যান্য জীবাণুনাশকের চেয়ে আলাদা এবং একবার স্প্রে করার পর সেটি ১৪ দিন কার্যকর থাকে। এই নারী বিজ্ঞানী আরো বলেন, অনেক জীবাণুনাশক বিষাক্ত। কিন্তু তার ভলটিক স্প্রে যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিকর না হয় কিংবা বর্তমানে ও ভবিষ্যতে যাতে এর কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না দেয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয়েছে।

 

ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কাজ করে!

সাদিয়া খানম দাবি করছেন, তার আবিষ্কৃত ভলটিক সব ধরনের করোনা ভাইরাস ধ্বংস করতে সক্ষম। আমি এমন একটা জিনিস তৈরি করতে চেয়েছি, যা সবাই ব্যবহার করতে পারে।

ভলটিক সব ধরনের ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কাজ করে, কারণ আমি এই ভাইরাসের আসল স্ট্রেইন নিয়ে কাজ করেছি। যেহেতু আমি করোনা ভাইরাসের আসল জিনিসটিকে মেরে ফেলতে সক্ষম হয়েছি, তাই এটি অন্যান্য ধরনের করোনা ভাইরাসও ধ্বংস করতে পারবে।

 

Manual8 Ad Code

সাদিয়ার স্বপ্ন

শৈশব থেকেই সাদিয়া খানমের স্বপ্ন ছিল তিনি বিজ্ঞানী হবেন। বিশেষ করে তার দাদা আলঝেইমারস রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি স্বপ্ন দেখেন যে এক দিন তিনি এই রোগের ওষুধ আবিষ্কার করবেন। তখন থেকেই তিনি এ নিয়ে পড়াশোনা করতে শুরু করেন।

সাদিয়া খানম বলেন, ভলটিক স্প্রের উদ্ভাবন আলঝেইমারস রোগের ওষুধ আবিষ্কারের ব্যাপারে তাকে অনেক আশাবাদী করে তুলেছে। তিনি বিশ্বাস করেন তার স্বপ্ন এক দিন পূরণ হবে। সাদিয়া স্যালফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োমেডিক্যাল সায়েন্স এবং চেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে জিনোমিক মেডিসিন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।

Ad

Follow for More!