জয়চন্ডীতে ফের চমক দেখাতে পারেন কমরু।

প্রকাশিত: ৭:৫৫ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০২১

জয়চন্ডীতে ফের চমক দেখাতে পারেন কমরু।
booked.net

এইচ ডি রুবেলঃ- আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কুলাউড়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৮ নভেম্বর। সেই নির্বাচনে চা-বাগান অধ্যুষিত জয়চন্ডী ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ কমরু (আনারস) প্রতীকে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তিনি এই ইউনিয়নের টানা তিন বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান।

কমরু কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া এই ইউনিয়নে দ্বিতীয় বারের মতো আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী হলেন জয়চন্ডী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর রব মাহাবুব।

জানা যায়, বিগত ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার হেভিওয়েট প্রার্থী আব্দুর রব মাহাবুবকে ১১০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন কমর উদ্দিন আহমদ কমরু। ওই নির্বাচনে কমর উদ্দিন আহমদ কমরু ভোট পান ৭৪০০। তাঁর প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী আ’লীগের আব্দুর রব মাহাবুব পান ৬৩০০ ভোট। এর আগে ২০০৩ সালে ৪৬০৫ ভোট পেয়ে তৎকালীন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে ইউপি নির্বাচনে অংশ নেয়া সাবেক এমপি মোঃ আব্দুল মতিনকে ২০৫ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন চমক দেখান। ওই নির্বাচনে মোঃ আব্দুল মতিন পান ৪৪০০ ভোট। এরপর ২০১১ সালে কারাগারে থেকে ৭৭০০ ভোট পেয়ে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী মোঃ ফারুক আহমদকে পরাজিত করে ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ওই নির্বাচনে ফারুক আহমদের প্রাপ্ত ভোট হলো ২৬০০। একটানা তিন বার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে কুলাউড়ায় ইতিহাস সৃষ্টি করেন চমক দেখান জনপ্রিয় চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ কমরু।

জয়চন্ডী ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা হলো ২৩ হাজার ১৭৯ ভোট। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার হলো ১১ হাজার ৮১৬ ও মহিলা ভোটার ১১ হাজার ৩৬৩ ভোট। মোট ভোট কেন্দ্র হলো ১১টি। তফসীল অনুযায়ী ১২ নভেম্বর প্রতীক বরাদ্ধের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা। প্রতীক পাওয়ার পর প্রার্থীরা প্রচারণায় ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ইউনিয়নের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার বাজারে ও চায়ের দোকানে চলছে নির্বাচনী আড্ডা। নিজের কর্মী-সমর্থক ও অনুসারীদের নিয়ে তিনি প্রতিদিন চা-বাগানসহ ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ চালাচ্ছেন এবং আনারস প্রতীকে ভোট কামনা করছেন।

ইতিমধ্যে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়ে করছেন আলোচনা। এই আলোচনায় শীর্ষে রয়েছেন ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ কমরু। এদিকে সরকার দলীয় প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণা চালালেও অনেকটা নীরবেই সুনসান পরিবেশে মাঠে থেকে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে মাঠ নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন বলে দাবি করেন তিনি। প্রতিদিন প্রচারণা শুরুর আগ মুহুর্তে সকালে বাড়িতে এরপর ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে বসে এলাকার লোকদের নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি প্রচারণার সময়কালেও সেবা নিতে আসা নাগরিকদের জন্মসনদ, নাগরিক সনদসহ বিভিন্ন সনদে স্বাক্ষর করছেন। এতে এলাকার সাধারণ মানুষ তাঁর প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আস্থা রাখছেন।

সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী কমর উদ্দিন আহমদ কমরু একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি। তিনি তাঁর ব্যক্তি জনপ্রিয়তা ও কাজের দক্ষতার মধ্যে দিয়ে ২০১১ সালের ইউপি নির্বাচনে কারাগারে থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন। ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের মাঝে তিনি একজন আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। সর্বোপরি তিনি তাঁর নিজের ব্যক্তিগত গুণাবলী দিয়ে তিনি ইউনিয়নবাসীর মন জয় করেছেন। ইউনিয়নের নাগরিকরা বিরামহীনভাবে তাঁর কাছে নাগরিক সেবা পেয়ে যাচ্ছেন। ভোট শুরু হলেও অন্যান্য প্রার্থীরা যেখানে প্রচারণায় ব্যস্ত সেখানে চেয়ারম্যান কমরু প্রচারণায় সময় কম দিয়ে ইউনিয়ন কার্যালয়ে বসে ইউনিয়নের লোকজনদের নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার লোকজন জানান, টানা ১৯ বছর এই চেয়ারম্যানের সময়কালে জয়চন্ডী ইউনিয়নে বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালর্ভাট নির্মাণ, বিদ্যুৎ উন্নয়নসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে। যারজন্য পুনরায় কমর উদ্দিন কমরু চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হবেন বলে মনে করছেন ইউনিয়নের সাধারণ নাগরিকরা।

চেয়ারম্যান প্রার্থী কমর উদ্দিন আহমদ কমরু বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘ ১৯ বছরের অভিজ্ঞতা ও আমার কর্মযজ্ঞকে মূল্যায়ন করবে আমার এলাকার মানুষ এটা আমি দৃঢ় প্রত্যয়ে বিশ্বাস করি। আমার সময়কালে ইউনিয়নের সাধারণ জনগণকে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আসন্ন ইউপি নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে বিপুল ভোটে আমি বিজয়ী হবো বলে আশা করি। তিনি আরো বলেন, এবারকার নির্বাচনে ইউনিয়নের ১১টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছি। কারণ সরকার দলীয় প্রার্থীর কর্র্মী-সমর্থকরা বিভিন্নভাবে আমার কর্মী-সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচারণায় বিভিন্নভাবে বাঁধা দিচ্ছেন। সকল বাঁধা ডিঙ্গিয়ে ইউনিয়নের জনগণের রায়ে পুনরায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবো বলে আশাবাদী।

Ad