ফেসবুকে ট্রল করাকে ইসলাম কী বলে?

প্রকাশিত: ৮:১৩ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০২২

ফেসবুকে ট্রল করাকে ইসলাম কী বলে?
booked.net
Manual5 Ad Code

মানুষের ভুল হয়। ভুল হয় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। এ ভুল নিয়ে সামনা-সামনি কিংবা ফেসবুক, টুইটার ও ইন্সটাগ্রাম সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই ট্রল করে থাকে। অনেকেই ট্রল করাকে স্বাভাবিক মনে করে থাকেন। তাই মানুষ কোনো চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই কারো ভুল কাজে অহরহ ট্রল করে থাকেন। অথচ ট্রল করা মারাত্মক অন্যায় ও গোনাহের কাজ। ইসলামে ট্রল করাকে হারাম ঘোষণা করেছেন। আর হারাম কাজ করা নিঃসন্দেহে কবিরা গোনাহ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এ যুগে মানুষ নানা কারণে কিংবা সামান্য তুচ্ছ বিষয় নিয়ে একে অপরকে ট্রল কিংবা উপহাস করে থাকে। অথচ ইসলাম ট্রল করাকে বিশেষ গুরুত্বসহকারে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

Manual3 Ad Code

‘হে মুমিনরা! কোনো পুরুষ যেন অপর কোনো পুরুষকে উপহাস না করে, কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। আবার কোনো নারী যেন অপর নারীকে উপহাস না করে। কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অপরের মন্দ নামে ডেকো না। ঈমান লাভের পর মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা তাওবা না করে (ফিরে না আসে) তারা জালেম।’ (সুরা হুজরাত : আয়াত ১১)

Manual5 Ad Code

উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহ তাআলা দেড় হাজার বছর আগে মুসলিম উম্মাহর নারী-পুরুষকে ট্রল তথা ব্যঙ্গ করতে নিষেধ করেছেন। এ কাজকে হারাম ঘোষণা করেছেন।

যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাউকে ট্রল বা ব্যঙ্গ করছেন, তারা কিন্তু এ বিষয়টি কখনো চিন্তাই করে না যে, এ ট্রলের ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সম্মানহানি ঘটে। অথচ এ হারাম কাজটি অহরহ ঘটছে। কখনো প্রকাশ্যে আবার কখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে সামাজিক মাধ্যমে ট্রলের এ প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ প্রসঙ্গে বার বার মানুষকে সাবধান করে গেছেন। তিনি বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে কারো রক্ত ঝরানো, কারো সম্পদ হরণ করা বা কারো সম্মানহানি করা হারাম।
অথচ বর্তমানে এ কাজটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব বেশি ঘটছে। মানুষের সম্মানহানি করা হচ্ছে এমনটি বরং এটি মারাত্মক গিবতে পরিণত করা হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো একটি বিষয় নজরে আসলেই সে বিষয়টি নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায়, ব্যঙ্গ করা। যার যা ইচ্ছা তাই লিখে বেড়ায়। সাধরণত যে ভুলগুলো মানুষ ধরতে পারে না, ট্রলের কারণে সাধারণ মানুষও সে ভুলগুলো জেনে যাচ্ছে। আর তাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মান-ইজ্জত নষ্ট হচ্ছে।

Manual6 Ad Code

অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্যের ভুল গোপন সম্পর্কে হাদিসে নসিহত পেশ করে বলেছেন, ‘কেউ যেন তার অপর মুসলিম ভাইয়ের দোষত্রুটি প্রচার না করে।’ যদি কোনো মুসলিম তার অপর ভাইয়ের দোষ-ত্রুটি গোপন করে তবে আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন তার দোষ গোপন করবেন।’

আবার অনেকে বলেন আমরা ট্রল করছি সংশোধন হওয়ার জন্য। অথচ ইসলামে ইসলাহ বা সংশোধনেরও রয়েছে উত্তম পদ্ধতি। যদি কারো দোষ-ত্রুটি প্রকাশ হয় তবে তাকে একান্তে সংশোধন হওয়ার জন্য বলতে হবে। তা না করে তার সম্মানহানি ঘটে এভাবে তার দোষ-ত্রুটি প্রকাশ কিংবা ট্রল করা যাবে না।

Manual3 Ad Code

যদি কোনো মুসলিম ভাইয়ের দোষ-ত্রুটি ধরা পড়ে তাহলে তার ইসলাহের জন্য জনসম্মুখে না বলে ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি তাকে বলা জরুরি।

আসুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব জায়গায় ট্রল বা ব্যঙ্গকে না বলি। এ গর্হিত কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখি। ইসলামের সৌন্দর্য ও আদর্শ তুলে ধরি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রামসহ সব পর্যায়ে ট্রল করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Ad

Follow for More!