কোরআন ও হাদিসে পরধর্মের মানুষকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করার কথা বলা হয়েছে।

প্রকাশিত: ৯:০১ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০২১

কোরআন ও হাদিসে পরধর্মের মানুষকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করার কথা বলা হয়েছে।
booked.net
Manual8 Ad Code

ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়িকে সমর্থন করে না ইসলাম।ইসলামের মূল উৎস কোরআনে কারিম এবং হাদিস পরধর্মের মানুষকে আপনের চেয়েও বেশি শ্রদ্ধা ও সম্মান করার কথা বলেছে। ইতিহাস সাক্ষী, আমরা দেখেছি শেষ নবী হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আপনজনের অনেকেই ছিল ইসলামের কট্টর দুশমন।

তথাপি নবী করিম (সা.) তাদের প্রতি নির্যাতন তো দূরের কথা, তাদের প্রতি মৌখিক অভিযোগও উত্থাপন করেননি। বরং কোনো বিরোধী যখন অসুস্থ হতো, তখন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে দেখতে যেতেন।


হযরত রাসূলে কারিম (সা.)-এর এমন আন্তরিকতায় ওই বিরোধীরাও ধীরে ধীরে ইসলামের পতাকাতলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এই যখন মুসলমানের নবীর চরিত্র, তাহলে তারা কীভাবে মন্দিরে হামলা করতে পারে?

একজন প্রকৃত মুসলমানের পক্ষে মন্দির ভাঙ্গা তো দূরের কথা মন্দির ভাঙ্গার চিন্তা করাও সম্ভব নয়।

Manual2 Ad Code

কারণ, ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘যারা মানুষকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে ডাকে, সাম্প্রদায়িকতার জন্য যুদ্ধ করে, সংগ্রাম করে এবং জীবন উৎসর্গ করে তারা আমাদের দলভুক্ত নয়। ’ -সুনানে আবু দাউদ : ৫১২৩

সাম্প্রদায়িকতার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে পবিত্র কোরআন।আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘ধর্মের ব্যাপারে জোরজবরদস্তি নেই। ভ্রান্ত মত ও পথকে সঠিক মত ও পথ থেকে ছাঁটাই করে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে ’ -সূরা বাকারা :২৫৬। সুতরাং ‘তোমাদের ধর্ম তোমাদের জন্য, আমাদের ধর্ম আমাদের জন্য ’ -সূরা কাফিরুন : ৫।

একে অন্যের ধর্ম পালন করতে গিয়ে কেউ কোনোরূপ সীমা লঙ্ঘন কিংবা বাড়াবাড়ি করবে না। অন্য কেউ যদি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করেও ফেলে তবে ভুলেও যেন কোনো ইমানদার এ ধরনের হীন ও জঘন্য কাজের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত না করে। এ বিষয়টিই নসিহতস্বরূপ মুমিনদের উদ্দেশে আল্লাহতায়ালা বলছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব দেবদেবীর পূজা-উপাসনা করে, তোমরা তাদের গালি দিও না। যাতে করে তারা শিরক থেকে আরো অগ্রসর হয়ে অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গালি দিয়ে না বসে। ’ -সূরা আনআম: ১০৮

যেখানে অন্য ধর্মের দেবতাকে গালি দেওয়া নিষিদ্ধ সেখানে মন্দির ভাঙচুর ও মানুষ হত্যা কীভাবে বৈধ হতে পারে? একজন প্রকৃত মুসলমান কখনোই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত আসে এমন কোনো কাজ করতে পারে না। 

হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলমান যদি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার ক্ষুন্ন করে কিংবা তাদের ওপর জুলুম করে, তবে কেয়ামতের দিন আমি মুহাম্মদ ওই মুসলমানের বিরুদ্ধে আল্লাহর আদালতে লড়াই করব। ’ –সুনানে আবু দাউদ : ৩০৫২

তিনি (সা.) আরও বলেছেন, ‘অন্যায়ভাবে কোনো অমুসলিমকে হত্যাকারী জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ চল্লিশ বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকেই ওই ঘ্রাণ পাওয়া যাবে। ’ –সহিহ বোখারি : ৩১৬৬

Manual1 Ad Code

অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো অমুসলিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করবে আল্লাহতায়ালা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। ’ -সুনানে নাসাঈ : ৪৭৪৭

Manual1 Ad Code

রাসূলুল্লাহ (সা.) ও খোলাফায়ে রাশেদিনের চিরাচরিত নিয়ম ছিল, যখন কোনো সেনাবাহিনী প্রেরণ করার প্রয়োজন হতো, তখন যুদ্ধ সম্পর্কিত বিভিন্ন নসিহত, দিকনির্দেশনার পাশাপাশি একথা অবশ্যই বলে দিতেন যে, ‘যুদ্ধকালীন সময়ে বা যুদ্ধের পর কোনো মন্দির-গীর্জা-উপাসনালয় ভেঙে ফেলবে না ’ -মুসান্নাফ আবি শায়বা : ৩৩৮০৪।

Manual5 Ad Code

Ad

Follow for More!