আরাফার দিনের আমল, গুরুত্ব ও ফজিলত।

প্রকাশিত: ৫:২৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০২১

আরাফার দিনের আমল, গুরুত্ব ও ফজিলত।
booked.net

Manual6 Ad Code

 

আরবি জিলহজ মাসের নবম দিনটিকে আরাফার দিন বলা হয়। এ দিনে হাজিরা মিনা থেকে আরাফার ময়দানে সমবেত হন এবং সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন।এটিই হজের প্রধান রুকন।

ফজিলত হিসেবে এ দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম।

হাদিসে আছে, হজরত আনাস (রা.) বলেন, জিলহজ মাসের প্রথম দশকের প্রতিটি দিন ১ হাজার দিনের সমতুল্য আর আরাফার দিনটি ১০ হাজার দিনের সমান মর্যাদাপূর্ণ। -ফতহুল বারি

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আরাফার দিনটি সব দিবসের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, শপথ উষার। শপথ ১০ রজনীর, শপথ জোড় ও বেজোড়ের। (সূরা ফজর : আয়াত নং-১-৩)। এ আয়াতে জোড় বলতে ঈদুল আজহার দিন আর বেজোড় বলতে আরাফা দিবসকে বুঝানো হয়েছে।

আরাফার দিন গুনাহ মাফ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের দিন। যেমন হাদিসে এসেছে—

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ স. বলেন : ‘আরাফার দিন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার বান্দাদের এত অধিক সংখ্যক জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন যা অন্য দিনে দেন না।

তিনি এ দিনে বান্দাদের নিকটবর্তী হন ও তাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করে বলেন : ‘তোমরা কি বলতে পার আমার এ বান্দাগণ আমার কাছে কি চায় ?’

আরাফার দিনে রোযা রাখার ফযীলতঃ

আবু কাতাদাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুল (সাঃ) কে আরাফার দিনের রোজার ব্যপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আরাফার দিনের রোজা বিগত ও সামনের এক বছরের গুনাহ সমূহের জন্য কাফফারা স্বরূপ।”
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬২।

আরো পড়ুনঃ  নামাজ যে কারনে আল্লাহ্‌র কাছে প্রিয় আমল।

কারণ, আরাফার ময়দানের দুয়া আল্লাহ সবচাইতে বেশি কবুল করেন। সেজন্য যারা হজ্জ করবেন তারা রোযা না রেখে বেশি বেশি দোয়া করবেন, আর যারা বাড়িতে থাকবেন তারা ঐদিন রোযা রাখার চেষ্টা করবেন। এই দিনের যেকোন ইবাদত আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয় ও বেশি মর্যাদার।

আরাফার দিনে হজ পালনরত ব্যক্তি রাসূলে কারীম স.-এর আদর্শ অনুসরণ করেই ঐ দিনের সওম পরিত্যাগ করবেন। যেন তিনি আরাফাতে অবস্থানকালীন সময়ে বেশি বেশি করে জিকির, দোয়াসহ অন্যান্য আমলে তৎপর থাকতে পারেন।

আর এদিনে শরীরের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলোকে সকল হারাম ও অপছন্দনীয় কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

হাদিসে এসেছে—
মুসনাদে আহমদে ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে যে, এ দিনে যে ব্যক্তি নিজ কান ও চোখের নিয়ন্ত্রণ করবে তাকে ক্ষমা করা হবে।

Manual2 Ad Code

মনে রাখা দরকার যে শরীরের অঙ্গ সমূহ হারাম ও অপছন্দনীয় কাজ থেকে হেফাজত করা যেমন সওমের দাবি তেমনি হজেরও দাবি। কাজেই সর্বাবস্থায় এ দিনে এ বিষয়টির প্রতি যত্নবান হতে হবে। আল্লাহ ও তার রাসূলের আদেশ বাস্তবায়ন ও নিষেধগুলোকে পরিহার করতে হবে।

নবী কারীম স. বলেছেন :—
‘সবচেয়ে উত্তম দোয়া হল আরাফাহ দিবসের দোয়া। আর সর্বশ্রেষ্ঠ কথা যা আমি বলি ও নবীগণ বলেছেন, তাহল : আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার কোন মাবুদ নেই। তিনি একক তার কোন শরিক নেই। রাজত্ব তারই আর সকল প্রশংসা তারই প্রাপ্য, এবং তিনি সর্ব বিষয়ে শক্তিমান।’

Manual2 Ad Code

এ হাদিসের ব্যাখ্যায় ইবনে আব্দুল বার বলেন : ‘এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে আরাফা দিবসের দোয়া নিশ্চিতভাবে কবুল হবে আর সর্বোত্তম জিকির হল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’

ইমাম খাত্তাবী বলেন : এ হাদিস দ্বারা বুঝে আসে যে দোয়া করার সাথে সাথে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রশংসা ও তার মহত্ত্বের ঘোষণা দেয়া উচিত।

আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদেরকে এমন আমল করার তাওফীক দান করেন যাতে তিনি সন্তুষ্ট হবেন।

তিনি যেন আমাদেরকে দীনের জ্ঞান দান করেন এবং ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভুক্ত করেন যারা কেবল তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নেক আমল সম্পাদন করে।

Manual5 Ad Code

আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লাইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।

Manual7 Ad Code

Ad

Follow for More!