আজ বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের মৃত্যুবার্ষিকী।

প্রকাশিত: ৭:৫১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১

আজ বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের মৃত্যুবার্ষিকী।
booked.net

স্টাফ রিপোর্টঃ- একুশে পদকপ্রাপ্ত গণসংগীতের রচয়িতা বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী-আজ। কিংবদন্তীতুল্য এই শিল্পী ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৯৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর সর্বস্তরের বিশেষ করে সাধারণের কাছে আরো বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন শাহ্ আব্দুল করিম।

দারিদ্র্য ও জীবন সংগ্রামের মাঝে বড় হওয়া শাহ আব্দুল করিমের সংগীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। শৈশব থেকেই একতারা ছিল তার নিত্যসঙ্গী। সাদাসিধে ও অত্যন্ত সহজ সরল জীবন যাপন কারী এই বাউল সাধক আধ্যাত্মিক গানের তালিম নেন কমর উদ্দিন, সাধক রসিদ উদ্দিন, শাহ ইব্রাহিম মোস্তান বকসের কাছ থেকে।গানের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন প্রখ্যাত বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ, পুঞ্জু শাহ এবং দুদ্দু শাহের দর্শন থেকে।

শাহ আবদুল করিম বাংলার লোকজ সংগীতের ধারাকে আত্মস্থ করেছেন অনায়াসে। ভাটি অঞ্চলের সুখ-দুঃখ তুলে এনেছেন গানে। নারী-পুরুষের মনের কথা ছোট ছোট বাক্যে প্রকাশ করেছেন আকর্ষণীয় সুরে। ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তার গান কথা বলে সব অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে।

বাউল শাহ আব্দুল করিম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলাধীন ধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ইব্রাহিম আলী ও মায়ের নাম-নাইওরজান। তিনি জীবিকা নির্বাহ করেছেন কৃষি কাজ করে। কিন্তু কোনো অভাবই তাকে গান থেকে বিরত রাখতে পারেনি। অসংখ্য গণজাগরণের গানের রচয়িতা এই বাউল গানে-গানে অর্ধ শতাব্দীরও বেশি লড়াই করেছেন ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে। এজন্য মৌলবাদীদের দ্বারা নানা লাঞ্ছনারও শিকার হয়েছিলেন তিনি।

বন্দে মায়া লাগাইছে, কেন পীড়িতি বাড়াইলারে বন্ধু, আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম, গাড়ি চলে না, আমি কুলহারা কলঙ্কিনী সহ শাহ আবদুল করিম লিখেছেন ও সুর দিয়েছেন ১৬শ’র বেশি গান। সাতটি বইয়ে গ্রন্থিত আছে তার এসব গান। তাছাড়া বাংলা একাডেমির উদ্যোগে ১০টি গান ইংরেজিতে অনুদিত হয়েছে। ২০১৭ সালে শাহ আব্দুল করিমের জীবনভিত্তিক প্রথম উপন্যাস লিখেন সাইমন জাকারিয়া। নাম ‘কুলহারা কলঙ্কিনী’।

বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের গানের মধ্যে দিয়ে তাকে খুঁজতে প্রতিদিন তার স্বজনরা গানের আসর বসান। গানের মধ্যে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে চান তার ভক্ত ও অনুরাগীরা।

Ad