কর্মধার লুতিজুরী পানজুমের সহস্রাধিক পান গাছ কেটেছে দুষ্কৃতিকারীরা।

প্রকাশিত: ৭:৫৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪

কর্মধার লুতিজুরী পানজুমের সহস্রাধিক পান গাছ কেটেছে দুষ্কৃতিকারীরা।
booked.net

আব্দুল কুদ্দুস:- কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে একটি পান জুমের প্রায় এক হাজার ২০০টি পান গাছ কেটে ফেলেছে দুষ্কৃতিকারীরা। গত রবিবার লুতিজুরী পানজুমে ভোরের দিকে এই ঘটনা ঘটছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ওই জুমের মালিক পল নকরেক।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লুতিজুরী পানজুম উপজেলার সীমান্তবর্তী কর্মধা ইউনিয়নে অবস্থিত। পানের ভরা মৌসুমে ওই জুমে প্রচুর পানের ফলন হয়েছিল। শনিবার দিনের বেলায়ও খাসিয়ারা ওই জুমে কাজ করছিলেন। কিন্তু রবিবার সকালের দিকে পাশ্ববর্তী ইছাছড়া পুঞ্জির বাসিন্দা মন পাপাং লুতিজুরী পান জুমের মালিককে পানগাছ কাটার বিষয়টি মুঠোফোনে জানান।

 

লুতিজুরী পানজুমের মালিক পল নকরেক জানান, রবিবার দিন তারা জুমে কাজ বন্ধ রাখেন। ঠিক এর আগের দিন তার লোকজন ওই জুমে কাজে ছিলেন। কিন্তু রবিবার সকাল ১০টার দিকে তিনি খবর পেয়ে জুমে গিয়ে দেখেন প্রায় সবগুলোই পানগাছ কেটে সাবাড় করেছে দুষ্কৃতকারীরা। তিনি জানান, তার জুমে দেড় হাজার পানগাছ ছিল। জুমের এক কোনোয় আড়াই-তিনশ’র মতো পানগাছ রয়েছে, বাকীগুলো কাটা। এখন পানের ভরা মৌসুম ছিল। প্রচুর ফলনও হয়েছিল ওখানে। কিন্তু দুষ্কৃতিকারীরা এমনভাবে পানগাছের গোড়া কেটে ফেলছে, যেখানে ওই কাটা গাছ থেকে আর ফসল উৎপাদন হবে না। গাছের গোড়া পচে একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে।

 

পুঞ্জির বাসিন্দা টমাস রিছিল, আইরিরিউস রুরাং ও পলাশ রিছিল আরো জানান, জুমগুলোয় অবাধে বস্তিবাসীর গরু বিচরণ করছে। গরু বিচরণে বাধা দিলে তারা (বস্তিবাসী) পানগাছ কেটে ফেলার হুমকিও দেয়। তবে ওই জুমের পানগাছ কারা কেটেছে তা তারা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না।

 

কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩নং ওয়ার্ড সদস্য সিলভেষ্টার পাঠাং বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা বারবার পানগাছ কেটে ফেলে। এখানে পানগাছের তো কোনো দোষ নেই। এই পানের উপর খাসিয়ারা নির্ভরশীল। অথচ দুষ্কৃতিকারীরা জুম থেকে পান সহ সুপারির গাছ কেটে সাবাড় করেছে। এগুলো দেখার কেউ নেই।

 

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও আদিবাসী নেত্রী ফ্লোরা বাবলী তালাং বলেন, লুতিজুরী পানজুমের সহস্রাধিক পানগাছ কেটে ফেলার ঘটনায় এখানকার আদিবাসীরা আতঙ্কে রয়েছেন। গত শুক্রবার বরমচাল ইউনিয়নের ইছলাছড়ার একটি জুমের অন্তত ২শ’ পানগাছ কেটেছে দুষ্কৃতিকারীরা। এতে খাসিয়ারা চরম হুমকিতে রয়েছেন। তাছাড়া পান গাছ কেটে ফেলায় ওই পরিবারের লোকজন অর্থনৈতিকভাবে চরম সংকটে পড়েছে। দেশের অর্থনীতিতেও ক্ষতির প্রভাব পড়বে। এসব বন্ধ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad