কুলাউড়ায় ৫ ইউনিয়ন ও পৌরসভা বন্যায় প্লাবিত। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২২টি আশ্রয়কেন্দ্র।

প্রকাশিত: ৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২৪

কুলাউড়ায় ৫ ইউনিয়ন ও পৌরসভা বন্যায় প্লাবিত। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২২টি আশ্রয়কেন্দ্র।
booked.net

আব্দুল কুদ্দুস:-গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল এবং নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হঠাৎ করে কুলাউড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ও কুলাউড়া পৌরসভার কয়েকটি গ্রামে বন্যা প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত এলাকায় গত ২দিন থেকে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব এলাকার অধিকাংশ গ্রামীণ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

 

গত সোমবার ভারী বর্ষনে ঈদের জামাত মসজিদে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। হাওর তীরবর্তী এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হওয়ায় অনেকেই ঈদের দিন কুরবানি দিতে পারেননি। পানিবন্দি অবস্থা থেকে কেউ কেউ আবার আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও আশ্রয় নিয়েছেন। ভারী বর্ষন অব্যাহত থাকলে নতুন করে উপজেলার আরও বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। টানা বৃষ্টিপাতে সোমবার রাতেই প্লাবিত হয়ে যায় কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ এলাকা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

 

কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত উপজেলার ভূকশিমইল, জয়চন্ডি, ব্রাহ্মণবাজার, কাদিপুর ও কুলাউড়া সদর ইউনিয়ন এবং কুলাউড়া পৌরসভায় ২২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৯৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে ভূকশিমইল ইউনিয়নের ৮টিতে ৭০ পরিবার, জয়চন্ডির দুটিতে ৬ পরিবার, ব্রাহ্মণবাজারের ৩টিতে ৪০ পরিবার, কাদিপুরের ৬টিতে ৪৪ পরিবার ও কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ২টি পরিবার এবং কুলাউড়া পৌরসভার দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৫টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এসব কেন্দ্রের আশ্রিত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ঈদের দিন রাতে মেয়র সিপার উদ্দিন আহমদ পৌরসভার আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার বিতরণ করেন। তিনি সার্বক্ষণিক বন্যার্তদের খোঁজ নিচ্ছেন।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাকালুকি হাওর তীরবর্তী ভূকশিমইল ইউনিয়নের অন্তত ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও জয়চন্ডি ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম, পৌরসভার ১২টি গ্রাম, সদর ইউনিয়নের ২টি গ্রাম, ব্রাহ্মণবাজারের ৫/৬টি গ্রামসহ ভাটেরা, বরমচাল ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ভারি বর্ষন ও উজানের পানির কারণে বন্যার সৃষ্টি হওয়ায় প্লাবিত এলাকার অনেকে কোরবানি দিতে পারেননি। ঘরবাড়ি রাস্তা ঘাট প্লাবিত হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কুলাউড়া উপজেলার কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোছাদ্দিক আহমদ নোমান জানান, তার ইউনিয়নের ২টি ওয়ার্ডের ২ শত মানুষ পানিবন্দি। ভূকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির জানান, ভূকশিমইল ইউনিয়নের ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ জানান, পৌরসভার ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তিনি খাবার সহায়তা দিচ্ছেন।

 

কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী জানান, বন্যায় যাদের বাড়িঘরে পানি উঠেছে তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে রয়েছে প্রশাসন। তিনি জানান, দুর্গতদের খাবার সহ বরাদ্দের জন্য উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

 

এদিকে ঈদের দিন ও পরদিন মঙ্গলবার বৃষ্টি উপেক্ষা করে কুলাউড়ার বন্যা কবলিত এলাকা ও বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। তিনি পানিবন্দি এবং আশ্রয় কেন্দ্র গুলোয় আশ্রিত মানুষের খোঁজ খবর নেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad