শরীফপুর প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে চলছে দশ চাকার বালুবাহী ট্রাক।

প্রকাশিত: ১২:৪৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০২৩

শরীফপুর প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে চলছে দশ চাকার বালুবাহী ট্রাক।
booked.net

 

স্টাফ রিপোর্টঃ- কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের চাতলাপুর ঘাট থেকে ১০ চাকার ডাম্পার ট্রাকে করে দিন-রাতে ওভারলোড বালুর গাড়ি কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছে। ১০ চাকার ডাম্পার বালুবাহী ট্রাক প্রতিদিন নামছে চাতলাপুরস্থ মনু নদীর তীরে। পাঁচ টন বহন ক্ষমতার ট্রাকে বালু যাচ্ছে অন্তত ১১ থেকে ১৪ টন। আর বেশিরভাগ অনভিজ্ঞ চালকরাই এসব বালুবাহী ট্রাক চালাচ্ছে। তাছাড়া অতিরিক্ত বালু বোঝাইয়ের কারণে পিচ রাস্তা ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। দণ্ডবিধিতে বলা আছে, কোনো সরকারি সম্পদের ক্ষতি করলে এর শাস্তি বিধান রয়েছে। ৪৩১ ধারা মোতাবেক সরকারি রাস্তার ক্ষতি সাধন দণ্ডনীয় অপরাধ। এ অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তি পাঁচ বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম জেলসহ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে। অথচ রহস্যজনক কারণে প্রশাসন নীরব।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শরীফপুর ইউনিয়নের চাতলাপুর ঘাটের বালু কমলগঞ্জ উপজেলা সদরের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, প্রশাসনের সামনে দিয়ে অবাধে চলাচল করছে বালুবাহী ডাম্পার ট্রাক। কিন্তু এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে কোনো আইনি প্রয়োগ হচ্ছে না। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি গাড়িতে বালুর পরিমাণ উল্লেখ করার কথা থাকলেও টোকেনে বালুর পরিমাণ উল্লেখ থাকে না। ডাম্পার ট্রাকের একজন চালক বলেন, আমরা ৮শ’ ৫০ ফুট বালু নেওয়ার কথা, কিন্তু আমাদেরকে অভারলোড করে তারা দিচ্ছেন।

এলাকাবাসী জানায়, বালু বহনকারী বেপরোয়া যান চলাচলে ধূলোবালি উড়ে রাস্তার দু’পাশের ঘরবাড়ী বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা।

শমশেরনগরের বাসিন্দা সাংবাদিক মুজিবুর রহমান রঞ্জু জানান, আমি নিজে একজন ভুক্তভোগী। আমার বাড়ি রাস্তার পাশে। আমার বাড়ির পাশ দিয়ে প্রতিদিন ১০ চাকার ডাস্পার বালুবাহী ট্রাকসহ ছোট ছোট ট্রাম ট্রাক দিয়ে মাটি বালু আনা-নেওয়া করা হয়। তিনি এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা নিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সড়কের ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ মৌলভীবাজারের সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়ছার হামিদ বলেন, সড়ক নষ্টের অন্যতম কারণ ওভার লোড বহন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

শমশেরনগর বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল হান্নান জানান, বালু বহনকারী বেপরোয়া যান চলাচলে ধুলো-বালি উড়ে রাস্তার দু’পাশের দোকা পাঠের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়েছে। হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য। ওভার লোড বহনের কারণে চাতলাপুর রোডে যানজট লেগেই থাকে।

অভার লোড বিষয় জানতে চাইলে চাতলাপুর বালু ঘাটের ম্যানেজার জুয়েল মিয়া বলেন, সারাদেশে বালুঘাট অবৈধভাবে চলছে। আমাদের এখানে ঘাটে মাপ দেওয়া হয়না। বিক্রি গাড়িতে শুধু টোকেন দেওয়া হয়। তিনি আরো বলেন, কুলাউড়ার ইউএনও সাহেব বলার পর ব্রিজের পাশ থেকে অন্যত্র মেশিন সরিয়ে বালু উত্তোলন করছি।

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার বলেন, চাতলাপুর ব্রিজের পাশ থেকে বালু উত্তোলনের মেশিনগুলি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভার লোডের বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad