আজ ১৭ সেপ্টেম্বর ‘শিক্ষা দিবস’।

প্রকাশিত: ৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩

আজ ১৭ সেপ্টেম্বর ‘শিক্ষা দিবস’।
booked.net

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ- ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৬২ সাল, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রসমাজ শরিফ শিক্ষা কমিশনের বাণিজ্যমুখীন শিক্ষাব্যবস্থা চালুর সুপারিশের বিরুদ্ধে সারা দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচী পালন করে। ছাত্রদের সাথে সাধারণ মানুষও পিকেটিংয়ে অংশগ্রহণ করে।

সকাল ১০ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার ছাত্র জনতা সমাবেশে উপস্থিত হয়। সমাবেশ শেষে মিছিল বের হয়। খবর আসে জগন্নাথ কলেজে গুলি হয়েছে। মিছিল তখন দ্রুত নবাবপুরের দিকে ধাবিত হয়। হাইকোর্টে পুলিশের সাথে সংঘাতে না গিয়ে মিছিল আব্দুল গনি রোড ধরে যেতে থাকে। পুলিশ তখন পিছন থেকে মিছিলে হামলা চালায়। পুলিশের সাথে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ বাঁধে ঢাকা কোর্টের সামনে। এখানেও পুলিশ ও ইপিআর গুলি চালায়।

এতে বাবুল, গোলাম মোস্তফা ও ওয়াজিউল্লাহ – ৩ জন শহীদ হন, আহত হন শতাধিক এবং শত শত ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। ঐ দিন শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশে মিছিলের উপর পুলিশ হামলা চালায়। টঙ্গিতে ছাত্র-শ্রমিক মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা করে সুন্দর আলী নামে এক শ্রমিককে।

সেই থেকেই ১৭ সেপ্টেম্বর পালিত হয়ে আসছে ছাত্র সমাজের শিক্ষার অধিকার আদায়ের লড়াই-সংগ্রামের ঐতিহ্যের দিবস- ‘শিক্ষা দিবস’।

বাংলাদেশ নামক ভুখন্ডের অভ্যুদয়ের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে আছে শিক্ষার সার্বজনীন অধিকার আদায়ের এই আন্দোলন। এই আন্দোলন ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, শিক্ষার পণ্যায়ন ও সাম্প্রদায়িকীকরণের বিরুদ্ধে, শিক্ষার সার্বজনীন অধিকার সংরক্ষণের আন্দোলন, সর্বোপরি এর সাথে যুক্ত হয়েছিল প্রায় ঔপনেবেশিক শোষণের বিরুদ্ধে জাতীয় মুক্তির আকাঙ্খা। যদিও স্বাধীনতার এতো বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও শিক্ষার সার্বজনীন অধিকার বাস্তবায়িত হয়নি।

আজও যখন শিক্ষার উপর দেশী–বিদেশী লুটেরাদের শ্যেনদৃষ্টি, সাম্রাজ্যবাদীদের অর্থের মোড়ল বিশ্বব্যাংকের নির্দেশে নতজানু শাসকশ্রেণী উচচ শিক্ষার মেয়াদী কৌশলপত্রের নামে শিক্ষাকে একটা শ্রেণীর হাতে তুলে দিতে চায়- তখন ছাত্রসমাজের সামনে শিক্ষার অধিকার আদায়ের এই আন্দোলন লড়াই-সংগ্রামে প্রেরণা যোগায়।

‘শিক্ষা দিবসে’ শিক্ষার সার্বজনীন অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।

Ad