হজ যাত্রার আগে করণীয়।

প্রকাশিত: ৭:০৯ পূর্বাহ্ণ, মে ২৮, ২০২৩

হজ যাত্রার আগে করণীয়।
booked.net

কালেমা, নামাজ, রোজা ও জাকাতের মতো হজও ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরজ বিধান। শারীরিক এবং আর্থিক সক্ষমতার সমন্বয়ে এই ইবাদত পালন করা হয়। কোনো ব্যক্তির নিজের মৌলিক খরচ বাদে হজের মৌসুমে মক্কায় যাওয়া-আসা-থাকার একান্ত প্রয়োজনীয় খরচ এবং এই সময়ে পরিবারের ভরণপোষণের প্রয়োজনীয় খরচ জমা থাকলে তার ওপর হজ ফরজ হয়।

প্রতিবছর হজে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মানুষ একত্রিত হন সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে। আর হজ শুরুর প্রায় এক দেড় মাস আগে থেকে সৌদি আরবে উপস্থিত হন হজযাত্রীরা।

হজের ঘোষণা সম্পর্কিত আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, এবং মানুষের মাঝে হজের ঘোষণা দাও, তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে ও সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উটের পিঠে (সওয়ার হয়ে), তারা আসবে দূর-দূরান্তর পথ অতিক্রম করে। (সুরা: হজ, আয়াত, ২৭)

হজ সফরের আগে অগ্রিম প্রস্তুতি হিসেবে আলেমদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়। এখানে হজের প্রস্তুতিমূলক কিছু জরুরি বিষয় তুলে ধরা হলো–

হজ যাত্রার আগে করণীয়ঃ-

১। সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে যারা হজে যাবেন; তাদের জন্য হজ এজেন্সি বা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা জরুরি।

২। বেসরকারিভাবে যারা হজে যাবেন; তাদের মক্কা-মদিনায় থাকার স্থান ও হজের আনুসাঙ্গিক কাজ সম্পাদনের বিষয়গুলো দেশে থাকতেই জেনে নেয়া জরুরি।

৩। হজ পালনকালীন সময়ে মক্কা, মিনা, আরাফা, মুজদালেফা ও অন্যান্য জিয়ারায় অভিজ্ঞ মুয়াল্লিম থাকবে কিনা তা জেনে নেয়া। থাকলে মুয়াল্লিমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা আবশ্যক। কারণ, মুয়াল্লিমের যথাযথ তত্ত্বাবধান না থাকলে হজ সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হবে।

৪। হজের নিয়তকারী সব মানুষই মহান আল্লাহর মেহমান। তাই মুয়াল্লিমের ওপর পুরোপুরি ভরসা না রেখে দেশে থাকতে হজের নিয়ম-কানুনগুলোর ওপর প্রশিক্ষণ নেয়া জরুরি।

৫। সুষ্ঠুভাবে হজ সম্পাদনের জন্য হজের সফর শুরু করার আগে হজ সম্পর্কিত বই, মোবাইল অ্যাপসসহ অপর সঙ্গীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে হজের কাজ সম্পাদনের বিষয়ে আলোচনা করে নেয়া।

৬। হজের সফরে হজ এজেন্সি কিংবা মুয়াল্লিমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে বাংলাদেশ দূতাবাস ও হজ সম্পর্কিত যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের ঠিকানা, মোবাইল নম্বর বা অন্যান্য পরিচয়ের বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ-খবর জেনে নেয়া আবশ্যক।

৭। হজের সফরকে জীবনের শেষ সফর মনে করে নিজের মন মানসিকতা সেভাবে তৈরি করা। বয়স্ক হাজিদের জন্য হজের বই বা গাইড এবং মক্কা-মদিনায় অবস্থানের সময় থাকার বাসা ও ঠিকানা সম্পর্কিত তথ্য নিজের সংরক্ষণে রাখা।

৮। হজে রওনা হওয়ার আগে দেশের পরিচয়পত্র, মুয়াল্লিম কার্ড, হোটেলের কা কব্জি বেল্ট এবং কোমর বেল্ট, ইহরামের কাপড়, পাসপোর্ট, বিদেশি মুদ্রা ইত্যাদি সংগ্রহ করা। এবং এগুলো ব্যবহারের প্রশিক্ষণ নেয়া।

৯। বিমানে ওঠার আগে থেকেই আপনার হ্যান্ড ব্যাগে পাতলা জায়নামাজ এবং স্প্রে করা যায় এমন পানির বোতল সবসময় সঙ্গে রাখা। যাতে সহজে অজু এবং নামাজ আদায় করা যায়।

১০। প্রয়োজনীয় লাগেজ বা ব্যাগের গাঁয়ে বাংলাদেশের পতাকার ছাপ, বাংলা, ইংরেজি ও আরবিতে নিজের নাম, পাসপোর্ট নম্বর, মুয়াল্লিম নম্বর চোখে পড়ার মতো বড় করে মার্কার দিয়ে লেখা এবং রশি, টেপ, ড্রাই মার্কার পেন, সুঁই-সুতা ও র‍্যাপিং পেপার সঙ্গে রাখা।

১১। হাত বেল্ট বা কোমর বেল্টে বহনযোগ্য ছোট একটি ফোনবুকে দেশের ও বিদেশের এবং সফর সঙ্গীদের জরুরি প্রয়োজনীয় মোবাইল নাম্বারগুলো সংগ্রহ করে রাখা। যাতে সমস্যা বা বিপদে-আপদে সহযোগিতা নেয়া যায়।

১২। যাওয়ার আগে নিয়মিত হাঁটা-হাঁটি ও ব্যয়ামের মাধ্যমে নিজের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা সুদৃঢ় করার চেষ্টা করা।হজ পালনেচ্ছু হজযাত্রীগণ যাতে সুন্দরভাবে হজের প্রস্তুতি নিতে পারেন, সেভাবে প্রস্তুতিগুলো সম্পন্ন করা জরুরি।

Ad