প্রকাশিত: ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০২৩
যে সম্পদের ওপর জাকাত ফরজ তার ৪০ ভাগের এক ভাগ (২.৫০%) জাকাত দেওয়া ফরজ। সম্পদের মূল্য নির্ধারণ করে শতকরা আড়াই টাকা, হাজারে ২৫ টাকা বা লাখে আড়াই হাজার টাকা হারে নগদ অর্থ কিংবা ওই পরিমাণ টাকার কাপড়চোপড় অথবা অন্য কোনো প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে দিলেও জাকাত আদায় হবে। (আবু দাউদ: ১৫৭২; সুনানে তিরমিজি: ৬২৩)
সোনা-রুপা, ব্যবসায়িক পণ্য, গবাদি পশু ও কৃষি ফসলের জাকাতঃ-
সোনা-রুপার নিসাব- সোনার নিসাব হলো সাড়ে সাত ভরি (তোলা)। রুপার নিসাব হলো সাড়ে বায়ান্ন ভরি (তোলা)। সোনা ও রুপা উভয়টি যদি কারও কাছে থাকে এবং এর কোনোটাই নিসাব পরিমাণ না হয়; তবে উভয়টির মূল্য হিসাব করে দেখতে হবে। মূল্য যদি একত্রে রুপার নিসাব পরিমাণ হয়ে যায়, অর্থাৎ ৫২.৫ ভরি রুপার মূল্যের সমান হয়ে যায়, তবেই জাকাত আদায় করতে হবে।
নগদ টাকার নিসাব- নগদ টাকার নিসাব হলো বাজারদর হিসাবে অন্তত সাড়ে ৫২ ভরি রুপার মূল্যের পরিমাণ টাকা এক বছরকাল জমা থাকলে এর জাকাত আদায় করতে হবে। হাতে ও ব্যাংকে রক্ষিত নগদ অর্থ ছাড়াও সঞ্চয়পত্র, সিকিউরিটি, শেয়ার সার্টিফিকেট ইত্যাদি নগদ অর্থ বলে গণ্য হবে।
ব্যবসায়ী পণ্যের নিসাব- ব্যবসায়ী পণ্যের নিসাব হলো কোনো জিনিস বিক্রি করার উদ্দেশ্যে রাখা হলে তাকে ব্যবসার পণ্য মনে করা হবে। সাড়ে ৫২ ভরি রুপার মূল্যের সমান মূল্যমানসম্পন্ন ব্যবসার পণ্যের জাকাত দিতে হবে। বছরান্তে তখনকার বাজারদর হিসাবে মূল্য ধরতে হবে। খরিদমূল্য ধরলে চলবে না।
কৃষি ফসলের নিসাব- কৃষি ফসলের ক্ষেত্রে প্রতিটি শ্রেণির ফসলের নিসাব পৃথকভাবে হিসাব করে নিসাব পরিমাণ ফসল হলে উশর দিতে হবে।
উদাহরণ স্বরূপ ধান যদি ৩০ মণ বা তার বেশি হয়, পাট যদি ৩০ মণ বা তার বেশি হয়, তাহলে ফসল তোলার সময়ই তার উশর দিতে হবে। তেমনিভাবে কলাই, সরিষা, মধু ইত্যাদি প্রতিটির নিসাব পৃথকভাবে ধরতে হবে। খনিজ সম্পদের ক্ষেত্রে কোনো নিসাব নেই। খনিজ সম্পদ ব্যক্তি মালিকানায় থাকলে সম্পদ উত্তোলনের পরই হিসাব করে জাকাত দিতে হবে। খনিজ সম্পদের জাকাতের হার হচ্ছে ২০ শতাংশ।
গবাদি পশুর নিসাব- নিজের কাজে খাটে এবং বিচরণশীল বা ‘সায়েমা’ নয় এমন গরু-মহিষ বাদ দিয়ে ৩০টি হলেই তার ওপর জাকাত দিতে হবে। জাকাতের হার হবে প্রতি ৩০টির জন্য একটি এক বছর বয়সের গরু এবং প্রতি ৪০টি বা তার অংশের জন্য দুই বছর বয়সের একটি গরু। আর ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ৪০টি হলে একটি, ১২০টি পর্যন্ত দুটি, ৩০০টি পর্যন্ত তিনটি এবং এর ওপরে প্রতি ১০০টি ও তার অংশের জন্য আরও একটি করে ছাগল জাকাত দিতে হবে।
যেসব সম্পদের জাকাত দিতে হবে না-
১। সোনা-রুপা ছাড়া অন্য কোনো ধাতুর অলংকার ইত্যাদির ওপর জাকাত ফরজ নয়। তদ্রূপ হীরা, মণি-মুক্তা ইত্যাদি মূল্যবান পাথর ব্যবসার পণ্য না হলে সেগুলোতেও জাকাত ফরজ নয়। (মুসান্নাফেআবি শায়বা: ৬/৪৪৭-৪৪৮)
২। নিজ ও অধীনস্থ পরিবার-পরিজনের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও বাহনের ওপর জাকাত ফরজ নয়। (মুসান্নাফে আবি শায়বা: ১০২০৭)
৩। গৃহের আসবাবপত্র যেমন: খাট-পালঙ্ক, চেয়ার-টেবিল, ফ্রিজ, আলমারি ইত্যাদির জাকাত ফরজ নয়। অনুরূপ গার্হস্থ্য সামগ্রী যেমন: হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাটি, গ্লাস ইত্যাদির ওপর জাকাত ফরজ নয়।
(মুসান্নাফে আবি শায়বা: ১০৫৬০)
৪। পরিধানের বস্ত্র, জুতা যদি প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশিও থাকে, তবুও তাতে জাকাত ফরজ হয় না।
(রদ্দুল মুখতার: ২/২৬৫)
৫। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এমন আসবাবপত্র যা ব্যবসার পণ্য নয়, তার ওপর জাকাত ফরজ নয়।
৬। ঘরবাড়ি বা দোকানপাট তৈরি করে ভাড়া দিলে তাতেও (মূল দামের ওপর) জাকাত ফরজ নয়। তবে এসব ক্ষেত্রে ভাড়া বাবদ বছরে যে অর্থ পাওয়া যাবে, তা যদি প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়ে নিসাব পরিমাণ হয়, তবে সেই ভাড়ার ওপর জাকাত ফরজ।
৭। ভাড়া দেয়ার উদ্দেশ্যে ঘরবাড়ি বা অন্য কোনো সামগ্রী যেমন: ডেকোরেটরের বড় বড় ডেগ, থালাবাটি ইত্যাদি ক্রয় করলে তার ওপরও জাকাত ফরজ নয়। তবে ভাড়া বাবদ প্রাপ্ত অর্থের ওপর জাকাত আসবে।
Published From
Positive International Inc,
73-16, Roosevelt Ave Floor 2, Jackson Heights, New York 11372.
Email : voiceofkulaura2@gmail.com
Chief Editor : Shafiq Chowdhury
Editor : Abdul Quayyum
Managing Editor : Nurul Islam Emon
Design and developed by positiveit.us