প্লেনের ‘কার্গো হোল্ডে’ ঘুম, জেগে দেখলেন পৌঁছে গেছেন আবুধাবি!

প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১

প্লেনের ‘কার্গো হোল্ডে’ ঘুম, জেগে দেখলেন পৌঁছে গেছেন আবুধাবি!
booked.net

অনলাইন ডেস্কঃ- ‘কার্গো হোল্ড’ অর্থাৎ প্লেনের পেটে যাত্রীদের মালপত্র রাখার জায়গায় জিনিসপত্র তোলার কাজ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন এক কর্মী। সেই অবস্থায় বিমান তাকে নিয়ে চলে গেল আবুধাবি!

সম্প্রতি আশ্চর্য এই ঘটনা ঘটেছে  ভারতের মুম্বাইয়ে। ইন্ডিগোর ওই কর্মী আপাতত আবুধাবিতে রয়েছেন বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর। তাকে দেশে ফেরানো হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) এবং ব্যুরো অব সিভিল এভিয়েশন সিকিউরিটি (বিসিএএস)।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে দেশ যখন জেরবার, হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পরে কাশ্মীরে জঙ্গি হানা— একের পর এক ঘটনা যখন ঘটেই চলেছে, তখন এই ঘটনাকে নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিশাল ফাঁক, বড়সড় গাফিলতি বলে মনে করছেন বিমান বিশেষজ্ঞেরা। প্রশ্ন উঠছে, প্লেন সংস্থার কর্তাদের, বিশেষত প্লেনের পাইলটের দৃষ্টি এড়িয়ে এমন‌ ঘটনা ঘটল কীভাবে?

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিমানের কার্গো হোল্ডে তাপমাত্রা ও বায়ুচাপ ঠিকঠাক ছিল বলেই জীবিত অবস্থায় ওই কর্মী আবুধাবি পৌঁছতে পেরেছেন। তাপমাত্রা বা বায়ুচাপের হেরফের হলে ওই কর্মীকে হয়তো বাঁচানোই যেত না।

আবুধাবি পৌঁছে কার্গো হোল্ড খুলতেই স্থানীয় কর্মীদের চোখ কপালে উঠে যায়। কোনও বৈধ পাসপোর্ট বা ভিসা ছাড়াই এক ভারতীয় আবুধাবি পৌঁছে যাওয়ায় বিষয়টি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও জানাতে হয়। সেখান থেকে তার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে তবেই তাকে ভারতে আনা হবে বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর।

বিমানবন্দর সূত্রে আরও জানা যায়, গত রবিবার মাঝরাতে মুম্বাই-আবুধাবি ফ্লাইটের যাত্রীদের ওঠার সময় তাদের মালপত্রও তোলা হচ্ছিল কার্গো হোল্ডে। মুম্বাই বিমানবন্দরে ইন্ডিগো তার নিজস্ব এজেন্সিকে দিয়ে এই কাজ করায়। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ওই কর্মী সেই এজেন্সিতেই কাজ করেন। অন্য কর্মীদের সঙ্গে তিনি কার্গো হোল্ডে মালপত্র তোলার সময়েই সেখানে ঘুমিয়ে পড়েন। সেটা তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মীরা খেয়ালও করেননি বলে অভিযোগ। সব মালপত্র তোলা হয়ে গেলে ওই ঘুমন্ত কর্মীকে ভিতরে রেখেই কার্গো হোল্ডের দরজা ‘লক’ করে দেওয়া হয়।

প্রশ্ন উঠছে, সহকর্মীরা কেন খেয়াল করলেন না যে, ওই যুবক কার্গো হোল্ড থেকে বেরিয়ে আসেননি?
বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানায়, এই ধরনের কর্মীদের দিয়ে দিন-রাত কাজ করানো হয়। কিছু ক্ষেত্রে উপরি রোজগারের জন্য তারা ওভারটাইম করেন। ফলে দিনে কাজ করার পরেও রাতের শিফটে কাজ করতে হয় তাদের। মনে করা হচ্ছে, ওই কর্মীও এভাবে দিন-রাত কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে মালপত্র তোলার সময়েই বিমানের পেটে ঘুমিয়ে পড়েন।

এক পাইলট বলেন, “যাত্রী কেবিনের হাওয়াই ঘুরে কার্গো হোল্ডে যায়। তাই সেখানে অক্সিজেনের অভাব থাকে না। কিন্তু বায়ুচাপ ও তাপমাত্রার তারতম্য হলে সেখানে কোনও প্রাণীর বেঁচে থাকার কথা নয়। সেই জন্য যখন কেউ কার্গো হোল্ডে খাঁচায় ভরে কোনও পোষ্যকে নিয়ে যান, তখন আমাদের বলে দেওয়া হয়। আমরা বায়ুচাপ ও তাপমাত্রা ঠিক রেখে দিই। ”

সূত্র: এনডিটিভি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad