হাজীপুরের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বকস ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন।

প্রকাশিত: ৪:২২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৪, ২০২১

হাজীপুরের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বকস ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন।
booked.net

আব্দুল কুদ্দুসঃ-  কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে নির্মাণাধীন সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলার অভিযোগে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বকস ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সিলেট মহানগর যুবলীগ নেতা ও হাজীপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মাজহারুল আলম। গতকাল কুলাউড়ায় স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাজহারুল আলম বলেন, প্রায় একমাস পূর্বে উপজেলার হাজীপুরের রনচাপ মৌজার জে.এল নং ৮৮, খতিয়ান নং ৬২ এবং ৭৩০ ও ৭৭৫ নং দাগের ৪৫ শতক জায়গার চারপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শুরু করেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনের আগে ওই ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ বকস ও তার ভাই ছালিক বকস ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ওয়াদুদ বকসের ইন্দনে জাহাঙ্গীর হোসেন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা প্রথমে সীমানা প্রাচীরের পিলার ভেঙ্গে ফেলেন। পরবর্তীতে  শুক্রবার ওয়াদুদ বকসের ভাই ছালিক বকস স্থানীয় লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণাধীন সীমানা প্রাচীর আবারও ভাঙচুর করেন। এতে কয়েক ললক্ষাধিক  টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এ ঘটনায় আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলন শেষে মাজহারুল আলম বাদী হয়ে নব্য চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বকস তার ভাই ছালিক বকস,  জাহাঙ্গীর হোসেন, সামছুল হক, লিয়াকত আলী, রইছ আলী, মখন মিয়া, সিয়াম মিয়াকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এদিকে নির্মাণাধীন সীমানা প্রাচীর ভাংচুরের বিষয়টি গতকাল সরেজমিন তদন্তেকালে স্থানীয় এলাকার লোকজন জানান, হাজীপুরের পাইকপাড়া বাজার থেকে সুলতানপুর ভায়া রাজাপুর ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তাটি একেবারে সরু। এই রাস্তা দিয়ে অন্তত ৮/৯টি গ্রামের লোকজন চলাচল করেন। রাস্তার দুইপাশে জায়গা তেমন বেশী না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে গাড়ী চলাচল করে। তাছাড়া সরু রাস্তায় গাড়ী পাস দেওয়ার সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। 

সরেজমিন দেখা যায়, পাইকপাড়া বাজারের অদূরে রাস্তার উত্তরপাশে এলজিইডি রাস্তা ঘেঁষে নির্মাণাধীন প্রায় দেড়শ’ ফুট সীমানা প্রাচীরের লিন্টার ও পিলারের কাজ চলছিল। সেই সাথে পূর্ব উত্তরদিকে মাদ্রাসামুখী রাস্তার পাশ দিয়েও সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু হতে দেখা যায়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি জানান, ২৮ নভেম্বরের আগে চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াদুদ বকস সীমানা প্রাচীরের কাজ বন্ধ রাখতে অনুরোধ করেন  এবং সীমানা প্রাচীর মাজহারুল আলমের ব্যক্তিগত জায়গা না সরকারি রাস্তার উপর নির্মিত হচ্ছে তা নির্বাচনের পর তিনি দেখিয়ে দেওয়ার’ও  আশ্বাস দেন। কিন্তু তারা তড়িঘড়ি করে কাজ শুরু করে। শুক্রবার সকাল ১০টায় পাশ্ববর্তী গ্রামের সহ শ’খানেক লোকজন জড়ো হয়ে উক্ত নির্মাণাধীন সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাজীপুরের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বকস জানান, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। রাস্তা নিয়ে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের সাথে মাজহারুল আলমের জায়গার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ নিয়ে বিরোধ ছিলো। এলাকার লোকজনের বাঁধা না মেনে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করায় এলাকার লোকজনই উত্তেজিত হয়ে সীমানা প্রাচীর ভাঙচুর করেছে বলে তিনি দাবি করেন।

কুলাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, হাজীপুরে রাস্তার ওপর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষের বিরোধ চলছে। গতকাল শুক্রবার সীমানা প্রাচীর ভাঙচুরের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। দুই পক্ষের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad