প্রকাশিত: ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০২১
ডেস্কঃ টানা তিন হারে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্বপ্নের সূর্যাস্ত এখন দৃষ্টিসীমায়। খালিজ টাইমস, গালফ নিউজে বড় বড় করে ছাপা হয়েছে পাকিস্তানের আসিফ আলীর ছবি। বাংলাদেশের হারও ঠাঁই পেয়েছে বটে।
তবে সেখানে স্নায়ুর লড়াই পেরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়টাই ফোকাস করেছে বিখ্যাত এই দুটি পত্রিকা। বিশ্বকাপে আসিফ আলীর ব্যাটের দুর্বিনীত নাচনের খবর এখন ক্রিকেট বিশ্বে রমরমা। দুই ম্যাচে মাত্র ১৯ বল খেলেছেন তিনি। রান তুলেছেন ৫২।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১২ বলে অপরাজিত ২৭, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭ বলে চার ছক্কায় অপরাজিত ২৫ রান করে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক আসিফ আলী। দুই ইনিংসে স্ট্রাইক রেট যথাক্রমে ২২৫.০০, ৩৫৭.১৪।
ঠিক এতটা বিস্ফোরক, খুনে ব্যাটিংয়েরও দরকার ছিল না বাংলাদেশের। আস্কিং রান রেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়ছিলেন মাহমুদউল্লাহ-লিটন। বিশ্বকাপ স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ ১২ বলে ২২, ৬ বলে ১৩ রান এবং শেষ বলে চার রান প্রয়োজন ছিল টাইগারদের। কিন্তু বাংলাদেশের ছিল না একজন ‘আসিফ আলী’। ৩ রানে হারে মাঠ ছাড়ে মাহমুদউল্লাহরা।
দূর-দুরান্ত থেকে ঘাটের পয়সা খরচ করে শারজাহ স্টেডিয়ামে আসা প্রবাসী বাংলাদেশের আক্ষেপ হৃদয় ছুঁয়েছে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশ টি-২০ দলে কেন পাওয়ার হিটার নেই?
এ প্রশ্নের যথার্থ উত্তর গতকাল পাওয়া গেছে জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশারের কাছে। বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে থাকা সাবেক এই অধিনায়ক বলেছেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো উইকেট, রানের উইকেট করলেই এমন পাওয়ার হিটার তৈরি হবে। পাওয়ার হিটার তৈরি করার পূর্বশর্ত রান প্রসবা উইকেট।
গতকাল হাবিবুল বাশার বলেছেন, ‘আমাদের যেটা দরকার, বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য, ভবিষ্যতের জন্য, আমাদের ঘরোয়া যে টুর্নামেন্ট গুলো খেলি, সেখানে ব্যাটিং উইকেট তৈরি করা। আমরা খুব বেশি যখন ম্যাচ খেলি, বিপিএল বা টি-২০ টুর্নামেন্ট খেলি, তখন একই উইকেটে বারবার খেলার জন্য অনেক সময় আমরা ভালো উইকেট পাই না। যার জন্য আমাদের পাওয়ার হিটার তৈরি হচ্ছে না।’
ভালো উইকেট তৈরির দাবিই যেন বিসিবির কাছে জানালেন জাতীয় দলের এই নির্বাচক। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের যদি টি-২০ ফরম্যাটে ভালো করতে হয়, পাওয়ার হিটার তৈরি করতে হয়, আমি মনে করি আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেটগুলো অনেক উন্নতি করতে হবে। যেখানে ২০০-১৮০ রানের খেলা হবে ধারাবাহিকভাবে। আমরা আসলে এটা খুব বেশি পাই না, যখন ঘরোয়া টুর্নামেন্ট হয়। পাওয়ার প্লে ব্যবহার করা, পাওয়ার হিটার তৈরি করা সেটা খুব বেশি হচ্ছে না।’
কখনোই রান মৃগয়া ক্ষেত্র হিসেবে দেখা যায়নি বাংলাদেশের হোম অব ক্রিকেট মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটগুলোকে। স্লো, লো ধরনের নির্বিষ উইকেটই ব্যাটসম্যানদের সাহস, সক্ষমতা বাড়ানোর পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। কারণ বছরের সিংহভাগ সময়ই এমন নিম্নমানের উইকেটে খেলে থাকেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।
এসব উইকেট বানিয়ে প্রায় ১ যুগ ধরে মিরপুর স্টেডিয়ামে বহাল তবিয়তে আছেন শ্রীলঙ্কান কিউরেটর গামিনি ডি সিলভা। দেশীয় ভালো কিউরেটরকে ঢাকার বাইরে পাঠিয়ে মিরপুরে তাকে ধরে রাখার পেছনেও এক পরিচালকের হাত রয়েছে। বিশ্বকাপ মিশনে এই ভরাডুবিতে তাদের অবদানও অনস্বীকার্য।
তিন পরাজয়ের পর গতকাল বিশ্রামে ছিল বাংলাদেশ দল। আজও অনুশীলনে ছুটি টাইগারদের। আগামীকাল অনুশীলন করবেন ক্রিকেটাররা। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বাকি দুটি ম্যাচ খেলেই দেশে ফিরবে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী।
বিশ্বকাপে লক্ষ্য পূরণ না হলেও শেষ দুটি ম্যাচে ভালো করতে চায় বাংলাদেশ। এবার না হলেও পরবর্তীতে বৈশ্বিক আসরে ভালো করতে হাবিবুলের পরামর্শ মানার বিকল্প নেই বিসিবির হাতে। এখন বিসিবির শুভবুদ্ধির উদয় হলে’ই হয়।
Published From
Positive International Inc,
73-16, Roosevelt Ave Floor 2, Jackson Heights, New York 11372.
Email : voiceofkulaura2@gmail.com
Chief Editor : Shafiq Chowdhury
Editor : Abdul Quayyum
Managing Editor : Nurul Islam Emon
Design and developed by positiveit.us