রজব মাসের আমল ও ফজিলত।

প্রকাশিত: ৬:৪৮ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩

রজব মাসের আমল ও ফজিলত।
booked.net

Manual8 Ad Code

আল্লাহ তাআলা হিজরি সনের চারটি মাসকে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী ঘোষণা করেছেন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আসমান-জমিন সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর কিতাবে মাসের সংখ্যা হলো বারো। তার মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত দ্বীন। কাজেই ওই সময়ে নিজেদের ওপর জুলুম কোরো না।’ (সুরা তওবা: ৩৬)

এই চার মাসের একটি হলো রজব। মহানবী (সা.) বলেন, ‘বারো মাসে বছর। তার মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। তিনটি ধারাবাহিক—জিলকদ, জিলহজ, মহররম আর চতুর্থটি রজব, যা জামাদিউস সানি ও শাবান মাসের মাঝের মাস।’ (বুখারি: ২ / ৬৭২)

আলেমগণ বলেন, চার সম্মানিত মাসের ফজিলত হলো, এই মাসগুলোতে ইবাদতের প্রতি যত্নবান হলে বাকি মাসগুলোতেও ইবাদতের তৌফিক হয়। আর এই মাসগুলোতে কষ্ট করে গুনাহ থেকে বিরত থাকতে পারলে, অন্যান্য মাসেও গুনাহ পরিহার করা সহজ হয়। (আহকামুল কোরআন: ৩ / ১১১; মাআরিফুল কোরআন: ৪ / ৩৭২)

মহানবী (সা.) রজব মাসকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতেন। এই মাসের চাঁদ দেখার পর থেকেই তিনি বছরের সেরা মাস রমজানের প্রস্তুতি শুরু করতেন। যেমন হাদিসে এসেছে, আনাস (রা.) বলেন, রজব মাস শুরু হলে নবী (সা.) আল্লাহর কাছে দোয়া করে বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করে দিন এবং রমজান মাস পর্যন্ত আমাদের হায়াত বাড়িয়ে দিন।’ (আল-মুজামুল আওসাত: ৩৯৩৯)

Manual1 Ad Code

রজবের প্রথম রাতে দোয়া কবুল হওয়ার কথা হাদিসে এসেছে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘পাঁচ রাতে বান্দার দোয়া আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না। রাতগুলো হলো—জুমার রাত, রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৫ তারিখের রাত, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার রাত।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৭৯২৭)

এ ছাড়া এই মাসের বিশেষ কোনো ফজিলতের কথা কোরআন-হাদিসে পাওয়া যায় না। তাই সাধারণভাবে নফল রোজা রাখা এবং ইবাদতের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। তবে রজবের রোজার বিশেষ সওয়াব অর্জনের নিয়ত করা ইসলাম অনুমোদন করে না। কারণ এ বিষয়ে আলাদা কোনো ফজিলত বর্ণিত নেই। ইবনে হাজার (রহ.) লিখেছেন, ‘বিশেষভাবে রজব মাসে রোজার ফজিলত সম্পর্কে সহিহ ও আমলযোগ্য কোনো হাদিস নেই।’ (তাবইনুল আজার বিমা ওরাদা ফি ফজলি রজব: পৃ. ১১)

Manual3 Ad Code

প্রসিদ্ধ মতানুযায়ী রজব মাসের ২৭ তারিখ রাসুল (সা.)-এর মিরাজের ঘটনা ঘটেছিল। তাই এ দিনটি নিঃসন্দেহে বড় মর্যাদাপূর্ণ দিন ছিল। তবে এই দিনকে কেন্দ্র করে কোনো নির্দিষ্ট আমলের কথা কোরআন, হাদিস ও সাহাবিদের আমল থেকে প্রমাণিত নয়। তাই এই দিনে রোজা রেখে হাজার রোজার সওয়াব পাওয়ার আশা করা ঠিক নয়। কারণ এ ব্যাপারে কোনো গ্রহণযোগ্য বর্ণনা পাওয়া যায় না। ইবনুল জাওযি, হাফেজ জাহাবিসহ অনেক মুহাদ্দিস এই ফজিলতকে বানোয়াট বলেছেন। (কিতাবুল মাওদুয়াত: ২ / ২০৮)

Manual7 Ad Code

রজব মাসকে কেন্দ্র করে মক্কার মুশরিকদের মধ্যে প্রতিমার নামে পশু জবাইয়ের রীতি ছিল। একে ‘আতিরা’ বলা হতো। মহানবী (সা.) এ কাজকে শিরক ঘোষণা করেন এবং বলে দেন, ‘ইসলামে উট বা বকরির প্রথম বাচ্চা প্রতিমার উদ্দেশ্যে জবাই করার কোনো প্রথা নেই এবং ‘আতিরা’ও নেই; অর্থাৎ রজব মাসে প্রতিমার সন্তুষ্টির জন্য পশু জবাই করার প্রথাও নেই।’ (বুখারি)

Manual8 Ad Code

Ad

Follow for More!