ব্রাহ্মণবাজার-শমসেরনগর সড়কে সংস্কার কাজে কচ্ছপগতি! নেই নজরদারি।

প্রকাশিত: ১২:৪৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৫, ২০২২

ব্রাহ্মণবাজার-শমসেরনগর সড়কে সংস্কার কাজে কচ্ছপগতি! নেই নজরদারি।
booked.net

আব্দুল কুদ্দুসঃ- কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজার থেকে কমলগঞ্জের শমসেরনগর পর্যন্ত প্রায় ১৬ কি.মি সড়কে পিচ উঠে নাজুক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এই সড়কে কুলাউড়া উপজেলার তিনটি অংশে ১০ মাসেও সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়নি। যদিও যানবাহন চলাচলের দিক দিয়ে এই সড়ক খুবই ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ। শুরু থেকেই কাজের গুণগত মান তেমন ভালো না হওয়ায় অধিকাংশ স্থানে পিচ উঠে গিয়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে এই সড়কের ৩টি অংশে সংস্কার কাজ (আরসিসি ও বিটুমিনাস কাজ) শুরু হলেও অদ্যাবদি শেষ হয়নি। আর কবে শেষ হবে তাও নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারছেনা। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফলাতির পাশাপাশি সওজ কর্তৃপক্ষেরও কাজে নজরদারি নেই বলে অনেকেই জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, ব্যস্ততম আঞ্চলিক এই সড়কের দু’এক জায়গায় হঠাৎ লোক দেখানো সংস্কার কাজ নামে মাত্র হয়। গত ডিসেম্বর থেকে এ সড়কের ৩টি অংশে প্রায় ৬৫০ মিটার পিচঢালাই তুলে নতুন পাথর-বালু দিয়ে রাখা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে কাজ না হওয়ায় বৃষ্টিতে সড়কের ওই অংশগুলোতে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া খরায় ধুলা-বালু উড়ে পরিবেশ দুষিত হয়। তখন পথচারীসহ যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আবার বৃষ্টির সময় গর্তে পানি জমে অতিরিক্ত কাঁদার সৃষ্টি হয়। এতে করে ওই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হয় যানবাহন ও মানুষ।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) মৌলভীবাজার কার্যালয় ও উক্ত কাজের কার্যাদেশ এর তথ্যমতে, কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজার হতে শমসেরনগর হয়ে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত সড়কের ভাঙ্গা অংশের সংস্কার কাজের প্রকল্পের আওতায় ৩০০০ মিটার আরসিসি ঢালাই ও ১৪০০ মিটার বিটুমিনাস দিয়ে কাজ করার কথা রয়েছে। এছাড়াও ১৩টি কালভার্ট ও একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। এ কাজটি সম্পাদনের দায়িত্ব পায় জামিল ইকবাল নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। গত বছরের ডিসম্বরে কাজ শুরু করে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় লোকজন আরো জানান, ব্রাহ্মণবাজার-শমসেরনগর সড়কের কুলাউড়া অংশের টিলাগাঁও বাংলাটিলা এলাকার প্রায় ২০০ মিটার, বাঘেরটিকি এলাকার ৩০০ মিটার ও হাজীপুরের কুনিমোড়া এলাকার ১৫০ মিটার রাস্তার পুরাতন পিচঢালাই তুলে নতুন করে বালু-মাটি-পাথর দিয়ে রাখা হয়। বৃষ্টি হলেই এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ভারী যানবাহন ও পণ্যবোঝাই ট্রাক প্রায়ই দেবে যায়। এতে যোগযোগ বিচ্ছিন্নের ঘটনাও ঘটে। চলতি বর্ষায় সড়কের ওই অংশগুলোতে বালু-পাথর ওঠে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও হাজীপুরের কটারকোনা বাজার থেকে প্রায় আধাকিলোমিটার সড়কে ভাঙাচোরা ও বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্তে জমে থাকা কাঁদা-পানিতে প্রতিনিয়ত বিড়ম্বানায় পড়তে হয় গাড়ি চালক ও যাত্রীদের।

বাস ও সিএনজি অটোরিকাশা চালক কামরুল, রফিক, মাছুম, সুমন ও রুবেল জানান, পুরো সড়ক জুড়েই গর্ত ও ভাঙাচোরা রয়েছে। এই অবস্থায় সড়কে গাড়ি চলাচল করায় অনেক ক্ষতি হয়। প্রায় গাড়ির চাকা ও যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। গত এক বছর ধরে সড়কের কাজ শুরু হয়েছে। এখনো শেষ হয়নি। নির্দিষ্ট করে কিছু জানা যাচ্ছেনা। গর্ত ও ভাঙাচোরা সড়কে একদিন গাড়ি চালালে আরেকদিন শরীর অসুস্থ থাকে। বাধ্য হয়ে এ পথে গাড়ি চালাতে হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী জামিল ইকবালের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (মৌলভীবাজার কার্যালয়) মো. জিয়া উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, কয়েক মাস ধরে টানা বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাথর ও বালু ভিজা থাকে। এগুলো পুরোপুরি না শুকালে বিটুমিন প্রয়োগ করা যাবে না এবং বৃষ্টি না থামা পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন করা যাবে না।

ছবিঃ- সড়কের একটি দৃশ্য।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad