প্রকাশিত: ২:২১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১, ২০২২
নিজস্ব সংবাদ দাতাঃ- কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের বন্দে আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও সহকারী শিক্ষিকাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা। গত ৩০ অক্টোবর ১৩০ জন অভিভাবক স্বাক্ষরিত অভিযোগ পত্রটি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর দাখিল করা হয়েছে। এই অভিযোগের অনুলিপি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার এবং জয়চন্ডী ইউপি’র চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার ২৫নং বন্দে আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন মোট ৭ জন শিক্ষিকা। শ্রেণীকক্ষে পাঠদান ও নিজস্ব ছুটি নিয়ে সহকারী শিক্ষিকাদের মধ্যে প্রায়ই উত্তপ্ত বাক্য মিনিময় ও ঝগড়াঝাটি হয়। এমনকি এসব বিষয়াদি নিয়ে দু’জন শিক্ষিকাদের মধ্যে চুল টানাটানির ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা অপর এক শিক্ষিকার মোবাইল ফোন ও জুতা এক ছাত্রের মাধ্যমে অন্যত্র লুকিয়ে রাখেন। তাঁরা ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে একে অপরকে হেনস্তা করার লক্ষে অবুঝ শিশুদের দিয়ে এমন ন্যাক্কারজনক কাজ করাচ্ছেন। এসব বিষয়াদি নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের মাঝে দু’টি গ্রুপ এখন দৃশ্যমান। তাঁদের এমন ঘৃনিত কর্মকান্ড দেখে শিশুরা হাসাহাসি করে আর নিজেদের বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের জানাচ্ছে। সহকারী শিক্ষিকাদের এমন কর্মকান্ড কে নিয়ন্ত্রন করতে বার বার ব্যর্থ হয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা নিভা রানী দেব।
স্থানীয় বাসিন্দা মোতাহির আলী চৌধুরী কনা, হোসেন রাজা, ঝুমুর আক্তার, আফজালুর রব শুভ, কামাল হোসেন, ফাহিম চৌধুরী জানান, প্রধান শিক্ষিকা নিভা রানী দেব বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই নিজের খেয়াল-খুশি মতো কাজ করেন। নিজেই ঠিকমত বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করেন না, কিভাবে সহকারী শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রন করবেন। সহকারী শিক্ষিকারও নিজেদের খেয়াল-খুশি মতো চলেন। চলমান ক্লাস ফেলে রেখে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। অনেকেই আবার নিজের সন্তানদের বিদ্যালয়ে এনে তাদেরকে নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এমনকি নিজেদের খাবার রান্না করা ও মাছ-তরকারী বানানোর কাজও শিক্ষার্থীদের দিয়ে করিয়ে থাকেন। এছাড়াও প্রধান শিক্ষিকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রদত্ত রুটিনের তোয়াক্কা না করে নিজের মনগড়া রুটিন বানিয়ে পাঠদান করান। তাছাড়া করোনাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের ভবন মেরামত বাবত আসা টাকা আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন দুর্নীতি করেছেন, আর এসব কারণেই স্কুলের স্বাভাবিক পরিবেশ এবং শিক্ষার মান বিনষ্ট হচ্ছে। এতে অভিভাবকরা তাঁদের বাচ্চাদের অত্র বিদ্যালয়ে পাঠাতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নিভা রানী দেব দু’জন শিক্ষিকার গ্রুপিংয়ের কথা স্বীকার করলেও নিজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো অস্বীকার করে জানান, করোনার সময়ে দীর্ঘ ছুটির কারণে কিছু শিক্ষার্থী পিছিয়ে পড়েছে। এমনিতে বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও শিক্ষার মান বেশ ভালো রয়েছে।
কুলাউড়া উপজেলা শিক্ষা (প্রাথমিক) অফিসার ইফতেখায়ের হোসেন ভুঞা জানান, অভিভাবকদের অভিযোগটি এখনও আমার হাতে এসে পৌঁছায়নি। তবে আমি সব ঘটনা শুনেছি এবং খোঁজ-খবর নিয়ে এর অনেক সত্যতাও পেয়েছি। এর আগেও এসব বিষয়াদি নিয়ে দু’বার তাঁদেরকে ডেকে এনে সতর্ক করা হয়েছিলো। তবে এবার আর ছাড় নয়, বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও শিক্ষার মান ফিরিয়ে আনতে খুব দ্রুত বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ছবিঃ- বন্দে আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
Published From
Positive International Inc,
73-16, Roosevelt Ave Floor 2, Jackson Heights, New York 11372.
Email : voiceofkulaura2@gmail.com
Chief Editor : Shafiq Chowdhury
Editor : Abdul Quayyum
Managing Editor : Nurul Islam Emon
Design and developed by positiveit.us