কুলাউড়ায় পিডিবি’র ভুতুড়ে বিলে অতিষ্ট গ্রাহকরা

প্রকাশিত: ৯:৩৮ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৬, ২০২১

কুলাউড়ায় পিডিবি’র ভুতুড়ে বিলে অতিষ্ট গ্রাহকরা
booked.net

স্বপন কুমার দেবঃ কুলাউড়ার পিডিবি’র ভুতুড়ে বিলে অতিষ্ট গ্রাহকরা। বিদ্যুৎ বিভাগের দূর্ণীতিবাজ কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দূর্ণীতির মাশুল গুণতে হচ্ছে পিডিবি’র নিরীহ গ্রাহকদের।

 

কুলাউড়া পিডিবি’র আওতাভুক্ত বেশকিছু এলাকায় এখনও এনালগ মিটার ব্যবহার করে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে গ্রাহকদের অভিযোগ রয়েছে। বরং ডিজিটাল মিটারের গ্রাহকদের দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত বিল।

কুলাউড়া পিডিবি’র বেশকিছু এলাকায় বাসা বা গ্যারেজে অবৈধ বিদ্যুতের লাইন নিয়ে শ’শ’ ব্যাটারী চালিত রিকশার ব্যাটারী চার্জ করা হচ্ছে। এতে যে বিদ্যুতের হাজার হাজার ইউনিট চুরি হয় তা পোষিয়ে নিতে বৈধ গ্রাহকদের বাড়তি বিল বা অতিরিক্ত হারে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে।

আর মিটার রিডাররা অনৈতিকভাবে নিয়োগ নিয়ে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়া নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। নিয়মিত মিটার না দেখে মনগড়া বিল দিয়ে গ্রাহকদের প্রতিমাসে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে আসলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।

এনিয়ে প্রতিদিনই পিডিবি’র অফিসে দেন দরবার করতে দেখা যায় গ্রাহকদেরকে। বাধ্য হয়ে গ্রাহকরা কিস্তি করে উচ্চ হারের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছেন। এতে লাভবান হচ্ছে অবৈধ বিদ্যুতের লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ চুরি করা কর্মচারী ও মিটার রিডাররা। তারা যে বিদ্যুৎ চুরি করে তা অন্য গ্রাহককে উচ্চহারে বিল করে নিরিহ গ্রাহকদের ঘাড় থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে চুরির বিষয়টি সমন্বয় করে ম্যানেজ করে আসছে।

কোন কোন মিটার রিডার গ্রাহককে কম বিল দেয়ার কথা বলে উৎকোচ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ কয়েকমাস পরে সেই গ্রাহকদের একসাথে হাজার ইউনিট বিল দিয়ে উচ্চহারে বৈদ্যুতিক বিল আদায় করছে।

আরো পড়ুনঃ লুহাইউনি বাগানে বিক্ষোভ। বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

বিদ্যুৎ ইউনিটের বিভিন্ন স্লাভে মূল্য নির্ধারিত হয় তা অনেক গ্রাহকই জানেন না। তাই মাসিক বিল ১-২শ’ ইউনিট হলে যে হারে বিল(টাকা) পরিশোধ করতে হয় সেই গ্রাহককে যখন ৪-৫শ’ ইউনিট বা তার বেশি ইউনিটের বিল পরিশোধ করতে হয় দ্বিগুণ তিনগুণ বেশি টাকায়। তখন গ্রাহকরা বাধ্য হয়ে মিটার রিডারদের সাথে সমঝতায় এসে বিল কম করার জন্য মাসিক উৎকোচ দিয়ে থাকেন।

এতে পিডিবি তথা সরকার রাজস্ব হারালেও লাভবান হয় দূর্ণীতিবাজ কর্মচারীরা। অতিরিক্ত হারে বিদ্যুৎ বিল দেয়ায় এক গ্রাহক গতবছর(২০২০) কুলাউড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করলে শুনানী শেষে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রতিনিধি ভোক্তা দপ্তরে লিখিত অঙ্গিকার করে ওই গ্রাহকের বিল সমন্বয় করে দিতে বাধ্য হন।

মিটার রিডারদের অনৈতিক কাজ ও মিটার না দেখে অতিরিক্ত বিল করার বিষয়ে কুলাউড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী ওসমান গনি বলেন, অস্থায়ী এই মিটার রিডারদের সম্পর্কে অনেক অভিযোগ পেলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন কঠোর পদক্ষেপ নিতে গেলে স্থানীয় কিছু নেতা তাদের পক্ষ নেন। ফলে এসব অনিয়ম দূর করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাড়িয়েছে। তবে আমি এ দপ্তরে যোগ দেয়ার পর অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে কঠোর পদক্ষেপ নেব।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad