প্রকাশিত: ২:৫৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০২১
আব্দুল কুদ্দুসঃ- কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে খাসিয়া সম্প্রদায়ের পানের জুম ও পানের গাছ কর্তনকে কেন্দ্র করে খাসিয়া জনগোষ্ঠি এবং সামাজিক বনায়নের উপকারভোগিদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনায় খাসিয়া ও সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের পক্ষে কুলাউড়া থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। খাসিয়াদের অভিযোগ, মূলত ডলুছড়া ও বেলুয়া পুঞ্জির পানজুম বেদখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিন ও উভয়পক্ষের অভিযোগ থেকে জানা যায়, শুক্রবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে সামাজিক বনায়নের উপকারভোগিরা জোরপূর্বক ডলুছড়ার পানজুমে ঢুকে পান উঠাতে থাকেন। এ সময় জুমে পাহারারত খাসিয়ারা সংঘবদ্ধ হয়ে এর প্রতিবাদ করেন।
অপরদিকে পাহাড়ে বনায়নের উপকারভোগী বাঙ্গালী পাহারাদার স্থানীয় টাট্টিউলী গ্রামের বাসিন্দা ছুরক মিয়া ও আছকির আলীর উপর হামলা হয়েছে এরুপ খবরে পাহাড়ের সমতল মুরইছড়া চা বাগানের রাস্তা সম্মুখে উপকারভোগিরা জড়ো হয়। এসময় মুরইছড়া ৪নং গেইট এলাকায় স্থানীয় উপকারভোগী হারুন মিয়া, বশির মিয়া ও রফিক মিয়া গংদের হামলায় চিকিৎসা শেষে পুঞ্জিতে ফেরার পথে বেলকুমা পুঞ্জির লিভিংস্টোন ইয়ংনিয়ং, লেবেলসন খংজ, ফিডালিয়া লামিন, কুকিজুরী পুঞ্জির বাসিন্দা সিল পঃলং ও রেডিমার ছেল্লা আহত হন বলে খাসিয়ারা অভিযোগ করেন।
হামলাকারীরা কুকিজুরী পুঞ্জির রাজ নংরুম ও মুরইছড়া পুঞ্জির গারো তরুণ উজ্জ্বল এম সাংমাকেও ওই স্থানে বেধড়ক মারধর করে বলে খাসিয়ারা জানান। স্থানীয় খাসিয়ারা আরও জানান, মূলত এই হামলার সাথে জড়িত স্থানীয় উপকারভোগী হারুন মিয়া, বশির মিয়া ও রফিক মিয়া গংদের কারণে দফায় দফায় বাঙ্গালি ও খাসিয়াদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিচ্ছে।
আদিবাসী নেত্রী ফ্লোরা বাবলী তালাং বলেন, খাসিয়ারা পাহাড়ে যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসলেও আজও ভূমির অধিকার থেকে বঞ্ছিত। পানচাষ করে আমাদের জীবিকা নির্বাহ করা হয়। সামাজিক বনায়নের নামে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করে খাসিয়াদের পানজুম অবাধে কাটা হচ্ছে। এতে খাসিয়াদের জীবিকার প্রধান মাধ্যম পান চরম হুমকিতে রয়েছে। বর্তমানে আমাদের লোকজনকে যাতায়াতের সময় রাস্তায় অতর্কিত হামলা করা হচ্ছে। খাসিয়ারা প্রাণনাশের হুমকিতে চরম আতঙ্কে রয়েছে। বনবিভাগের যোগসাজশে সাজানো মামলার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
স্থানীয় উপকারভোগী আছকির আলী ও ইসরাইল মিয়া জানান, বনবিভাগ থেকে আমরা লিজ এনে দীর্ঘদিন থেকে সামাজিক বনায়ন করে আসছি। কিন্তু খাসিয়াদের আচরণের কারণে আমরা সমতল থেকে পাহাড়ের ভিতর বনায়নের জায়গায় যেতে পারছিনা।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় গতকাল মুঠোফোনে জানান, খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী আজ শনিবার বিকেলে ঘটনাস্থল থেকে মুঠোফোনে বলেন, আমরা উভয়পক্ষকে নিয়ে স্থানীয় মুরইছড়া বাজারে বৈঠক করেছি। পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
Published From
Positive International Inc,
73-16, Roosevelt Ave Floor 2, Jackson Heights, New York 11372.
Email : voiceofkulaura2@gmail.com
Chief Editor : Shafiq Chowdhury
Editor : Abdul Quayyum
Managing Editor : Nurul Islam Emon
Design and developed by positiveit.us