গৃহকর্মী আত্মহত্যার মামলায় হাজীপুরের ইউপি সদস্য কারাগারে।

প্রকাশিত: ৪:১৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০২৩

গৃহকর্মী আত্মহত্যার মামলায় হাজীপুরের ইউপি সদস্য কারাগারে।
booked.net

নিজস্ব সংবাদ দাতাঃ- গৃহকর্মী আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় কুলাউড়া হাজীপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল সহ একই পরিবারের ৭ জনকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। সোমবার (২৪ এপ্রিল) মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এ মামলার শুনানী শেষে তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত। বিষয়টি আসামী পক্ষের আইনজীবি এ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ভূইগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুলের বাড়ি থেকে একই এলাকার বাসিন্দা মৃত জামাল মিয়ার মেয়ে তাসলিমা বেগম রায়নার (১৫) গলায় ফাঁস দেওয়া লাশ উদ্ধার করে কুলাউড়া থানা পুলিশ। গৃহকর্মী রায়না নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুলের বাড়িতে কাজ করতো। ঘটনার দিন দুপুরে নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুলের বাড়ির সকল সদস্যদের অগোচরে একটি কক্ষের বাথরুমে ঢুকে উড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে তাসলিমা আত্মহত্যা করে।

পরবর্তীতে কুলাউড়া থানা পুলিশ গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় গৃহকর্মীর ভাই সালমান মিয়া বাদী হয়ে প্রথমে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল সহ তার ৫ ভাই ও ছেলেকে অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলা (১২৫/২০২১) দায়ের করেন ভিকটিমের ভাই সালমান মিয়া।

মামলার অন্য আসামীরা হলেন- নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুলের ছেলে ইফতেফার আহমদ চৌধুরী মাহি, ভাই ফয়ছল আহমদ চৌধুরী, কবির আহমদ চৌধুরী হারুন, শহিদ আহমদ চৌধুরী আতিক, তোফায়েল আহমদ চৌধুরী ও গুলজার আহমদ চৌধুরী। পরবর্তীতে এই মামলাটি তদন্ত করেন সিআইডি। তদন্ত শেষে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মৌলভীবাজারের সিআইডির এসআই শায়েক আহমেদ। এরপর আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নেন। সোমবার (২৪ এপ্রিল) শুনানীতে আসামীরা হাজির হলে নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুলসহ ৭ আসামীকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত।

আসামী পক্ষের আইনজীবি গিয়াস উদ্দিন আহমদ জানান, গৃহকর্মী তাসলিমা মৃত্যুর ঘটনায় ভিকটিমের ভাই আদালতে মামলা দায়ের করলে সেটি তদন্ত করে সিআইডি। তদন্ত প্রতিবেদনে আসামীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ বা হত্যার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে আসামী নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল, তাঁর ছেলে ইফতেফার আহমদ চৌধুরী মাহি ও কবির আহমদ চৌধুরী ওই গৃহকর্মীকে ধর্ষণ চেষ্টা ও মানসিক চাপপ্রয়োগ করলে গৃহকর্মী মানসিক চাপ সহ্য না করতে না পারায় আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আসামীরা তাকে জানিয়েছেন মামলার বাদীপক্ষ দরিদ্র পরিবারের লোক হওয়ায় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বাদী পক্ষকে দিয়ে আসামীদের হুয়রানি করার জন্য আদালতে মামলা করিয়েছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad