কুলাউড়ায় ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি। আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহবান।

প্রকাশিত: ৭:২৬ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২২

কুলাউড়ায় ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি। আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহবান।
booked.net

স্টাফ রিপোর্টঃ- কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছেন কুলাউড়া উপজেলার বরমচালের একরাম নগর এলাকার শরাফত আলী। জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি-মাথা ও শরীরে ব্যথা। দু’দিনের মাথায় তার ছেলে হাসান  জ্বরে আক্রান্ত হয়। পরবর্তীতে একে একে স্ব পরিবার জ্বরে আক্রান্ত হন।

কুলাউড়া’র আরেক বাসিন্দা লাকি আক্তার জানান, তার ছেলের পর মেয়ে ও স্বামী সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। জ্বর ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নিচে নামছিলো  না কারও। কাশিও রয়েছে। চিকিৎসক তাকে  জানিয়েছেন- এটি সিজনাল জ্বর-ঠান্ডা, চার-পাঁচ দিন পর কমবে। এখন তার স্ব পরিবার সুস্থ আছেন।

পৌর এলাকার উছলাপাড়ার গৃহিনী সালেহা বেগম জানান, ঈদের আগেরদিন থেকে জ্বরে ভুগছেন তিনি। চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি নাকে এন্টাসল নাজাল ড্রপ দেওয়া হয়েছে। এখন জ্বর না থাকলেও কাশি ও শারীরিক দুর্বলতা রয়ে গেছে।

শরাফত আলী, লাকি আক্তার  ও সালেহা বেগম এর মতো কুলাউড়া উপজেলার বেশিরভাগ ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দির প্রকোপ দেখা যাচ্ছে এবং তা বেড়ে চলেছে । তাছাড়া প্রতিদিন জ্বর-সর্দি নিয়ে হাসপাতাল, ফার্মেসি ও ডাক্তার খানায়  প্রচুর রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বশির আহমেদ বলেন, ‘জ্বর-সর্দি-কাশির তীব্রতা থাকছে তিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত। জ্বর সেরে গেলেও শুকনো কাশি, দুর্বলতা ভোগাচ্ছে অনেককে। অন্যান্য ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই এটি। একসঙ্গে পরিবারের একাধিক সদস্য জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। অনেকের গলাব্যথাও হচ্ছে।’ বিচলিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, জ্বর কিংবা ঠান্ডা, গলা খুসখুস মানেই করোনা নয়। তাছাড়া জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহবান’ও জানান ডাঃ বশির।

অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে সারা দেশে সর্দি-জ্বরের প্রকোপ শুরু হয়েছে। জ্বর, সর্দি, কাশি, শরীর ব্যথা নিয়ে  কেউ কেউ  আবার বাসায় বসে ঘরোয়া চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে এ উপসর্গগুলো ব্যাপক হারে দেখা দিচ্ছে। দিন-রাতের তাপমাত্রা বাড়ছে-কমছে। এই রোদ এই বৃষ্টি। এই গরম, এই ঠান্ডা। তাই খেয়ালি এই আবহাওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সর্দি-কাশি-জ্বরের মতো মৌসুমি রোগ।

কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন। অনেকের হাঁচি-কাশির সঙ্গে শরীরে তীব্র ব্যথাও হচ্ছে। মূলত ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে এ উপসর্গগুলো ব্যাপক হারে দেখা দিচ্ছে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। তবে নিজ থেকে কোনো ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ডাক্তাররা বলছেন, ‘যথাযথ চিকিৎসার সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি, ফলমূল, শাক-সবজি খেতে হবে।


এদিকে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার নতুন ধরনের দাপটে সংক্রমণ বাড়ছে। এ কারণে হঠাৎ করে জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। তবে সংক্রমণ অনেকটাই মৃদু। তাই এক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই।

ছবিঃ- ইন্টারনেট।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad