কুলাউড়ায় জুলাই ফাউন্ডেশনের অর্থ পাওয়া নিয়ে ডা. জাকির হোসেনের অপসারণ দাবি।

প্রকাশিত: ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ, মে ১১, ২০২৫

কুলাউড়ায় জুলাই ফাউন্ডেশনের অর্থ পাওয়া নিয়ে ডা. জাকির হোসেনের অপসারণ দাবি।
booked.net

নিজস্ব প্রতিনিধি:- কুলাউড়ায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ২৮ জনের মধ্যে জুলাই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সহায়তার অর্থ বিতরণের ঘটনা নিয়ে ৩দিন থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক নেতিবাচক সমালোচনার ঝড় বইছে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (০৮ মে) মৌলভীবাজার জেলায় ২০২৪’র বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ৯২ জন ছাত্রকে ৯২ লাখ টাকা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। এদের মধ্যে কুলাউড়া উপজেলায় ২৮ জন আহত শিক্ষার্থী পেয়েছেন ২৮ লক্ষ টাকা। অনুদানপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা ও অর্থগ্রহণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর শুরু হয় তোলপাড় নেটিজেনরা তীব্র সমালোচনা শুরু করেন। শুধু দেশের নয় প্রবাসীরাও এ নিয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন।

 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ২৮জন যারা অনুদান পেয়েছেন তাদেরকে ক্ষোভের সাথে একটি করে হুইল চেয়ার দেয়ার ঘোষনা দিয়েছেন স্থানীয় নাগরিক পার্টির নেতা ইব্রাহিম আলী। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি ফরহাদও নানা তথ্য দিয়েছেন ওই ২৮ জন সম্পর্কে।

 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক সহ অনেকে আহতদের সার্টিফিকেট প্রদানকারী ডাক্তারের অপসারণ দাবিও করেছেন।তাদের অভিযোগ বিশেষ একটি দলের অনুসারি দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কুলাউড়ায় কর্মরত উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সাবেক আরএমও ডা. জাকির হোসেন। তিনি আবারও বর্তমানে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পকিল্পনা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি পেয়ে এখানেই কর্মরত রয়েছেন। ডা. জাকির হোসেন তাঁর নিজ ইউনিয়নের ও একটি এলাকার কিছু শিক্ষার্থীকে (যারা আহত হয়নি) শুধুমাত্র প্রেসক্রিপশন দিয়ে অনুদান পেতে সহায়তা করেছেন। আবার আন্দোলনে অংশ নেয়া অনেকের নামই নেই ওই অনুদান প্রাপ্তির তালিকায়।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জানান, সারা মৌলভীবাজার জেলায় আহতের সংখ্যা ৩০ জন হবে কিনা এনিয়ে সন্দেহ আছে। কোন প্রক্রিয়ায় তালিকা তৈরি করা হয়েছে তা আমাদের জানা নেই। তাদেরকে ডাক্তারি সার্টিফিকেট কিভাবে দেয়া হলো? হাসপাতালের রেজিস্টারে এদের নাম ২৫ জুলাই থেকে সংযুক্ত আছে কি-না?-বিষয়টি তদন্ত করে দেখা দরকার প্রশাসনের।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুলাউড়ার হতাহতদের সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুলাউড়া হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেনকে দায়ী করা হয়েছে। সাথে সাথে তার অপসারণের দাবি তুলেছেন সচেতনমহল।

কুলাউড়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবিদার হাবিবুর রহমান টিপু জানান, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে কুলাউড়ায় কেউ আহত হওয়ার ঘটনা তার জানা নেই। ছাত্র শিবিরের কর্মীদের বাছাই করে আওয়ামী লীগ নেতার মিতালী ফার্মেসীতে বসে সার্টিফিকেট দিয়েছেন বিশেষ স্বার্থে। এদের বেশির ভাগই ভুয়া। বিষয়টির তদন্ত হওয়া উচিত। ডা. জাকির হোসেন জামায়াত করেন। উনি দলের একজন নেতা। তিনি ডা. জাকির হোসেনের অপসারণ দাবি করেন।

 

এব্যাপারে বৈষম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আদনান ও কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পকিল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে সংবাদকর্মীরা একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাঁরা রহস্যজনক কারণে ফোন রিসিভ করেননি।

 

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেভাবে সমালোচনা হচ্ছে তা তিনিও দেখেছেন। এটা স্বাস্থ্য বিভাগের কাজ। ছাত্র আন্দোলনের দু’নেতা মইনুল ও আদনান তালিকা দিয়েছেন। আর সার্টিফিকেট দিয়েছে কুলাউড়ার স্বাস্থ্যবিভাগ। তাই তারাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad