কর্মময় জীবনের ইতি টানলেন মানুষ তৈরির কারিগর সুলতানা রহমান।

প্রকাশিত: ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২৫

কর্মময় জীবনের ইতি টানলেন মানুষ তৈরির কারিগর সুলতানা রহমান।
booked.net

স্টাফ রিপোর্ট:- দীর্ঘ ৩৯ বছর পর কর্মময় জীবনের ইতি টানলেন মানুষ তৈরির কারিগর সুলতানা রহমান। শিক্ষকতা পেশার সমাপ্তি হলো তার। কুলাউড়া পৌরসভার আমীর ছলফু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুলতানা’র অবসর মুহূর্তে সহকর্মী,বর্তমান ও প্রাক্তণ শিক্ষার্থীদের হৃদয় নিংড়ানো শুভেচ্ছা ও আবেগঘন পরিবেশে রবিবার (২৯ জুন) স্কুল প্রাঙ্গণে এক অনাড়ম্বর বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থী ও তার সহকর্মীর অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সৃষ্টি হয় এক ভিন্ন পরিবেশ।

সকলের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বিদায় সংবর্ধনা শেষে ফুলেল সজ্জিত গাড়িতে প্রাক্তণ শিক্ষার্থী ও সহকর্মীরা তাদের প্রিয় ব্যক্তিত্ব সুলতানা রহমান কে শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে বাড়ি পৌঁছে দেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. ইফতেখার হোসেন ভূঁঞা।

 

কুলাউড়া উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ মোঃ শফিকুর রহমান সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য দেন বিদায়ী সহকারী শিক্ষক সুলতানা রহমান।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ রাজিব মিয়া, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ লুৎফুর রহমান, রাবেয়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুস ছালাম ও সাংবাদিক মাহফুজ শাকিল।

 

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমি চক্রবর্তী, প্রাক্তণ শিক্ষার্থী সুজন আহমদ ও লিংকন তালুকদার। মানপত্র পাঠ করেন প্রাক্তণ শিক্ষার্থী তাইয়্যিবা সিদ্দিকা প্রেমি। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদায়ী শিক্ষক সুলতানা রহমান কে ফুলেল শুভেচ্ছা, সম্মাননা স্মারক ও বিভিন্ন ধরণের উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।

 

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সুলতানা রহমান শুধু শিক্ষক’ই ছিলেন না। একজন যোগ্য অভিভাবকও ছিলেন। তাঁর সততা, মহত্ব ও কর্মকুশলতা আমাদের গর্বের বস্তু। স্কুল প্রতিষ্ঠার সময়কাল থেকে তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিদ্যালয়টি যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তিনি তখন থেকেই এই প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থাকায় আদর্শ শিক্ষার্থী গড়ার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নেও রয়েছে তার অফুরন্ত সহযোগিতা।

 

বিদায়ী শিক্ষক সুলতানা রহমান বলেন, মহান আল্লাহ তালার অশেষ মেহেরবানীতে ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় অবসরে যাচ্ছি। কিন্তু আমার দোয়া ও ভালোবাসা রেখে গেলাম। তোমরা শিক্ষার্থীরা ভালো করে লেখাপড়া কর। তোমরা নিজেদেরকে মানবিক মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবে। তোমরা আমাকে যেভাবে সম্মানের দিয়ে বিদায় দিয়েছ তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি সুযোগ পেলেই তোমাদের কাছে আসবো, তোমাদের লেখাপড়ার খোঁজ নিবো। দীর্ঘ কর্মময় জীবনে দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা পাওয়া সকল সহকর্মী, প্রাক্তণ-বর্তমান শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

 

উল্লেখ্য, শিক্ষক সুলতানা রহমানের বাড়ি কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের করেরগ্রামে। উনার স্বামী অত্র ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ লুৎফুর রহমান একজন সৎ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে।

 

ছবি:- সুলতানা রহমাকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করছেন অতিথিবৃন্দ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad