ভাটেরায় স্ত্রী-সন্তান কর্তৃক পরিকল্পিত হত্যা। অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার।

প্রকাশিত: ২:৪১ অপরাহ্ণ, মে ২৭, ২০২৩

ভাটেরায় স্ত্রী-সন্তান কর্তৃক পরিকল্পিত হত্যা। অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার।
booked.net

Manual6 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টঃ- শেখ রফিকুল ইসলাম সিদ্দিকী (৬৫) নামে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার ভোররাতে কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। রফিকুল ইসলামের বড় ভাই শেখ সিরাজুল ইসলাম সিদ্দিকীর দাবি,তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী এবং কন্যারা অবসর ভাতার টাকা ও পারিবারিক বিরোধের জেরে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। উক্ত ঘটনায় সিরাজুল ইসলাম সিদ্দিকী বাদী হয়ে ৬ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

Manual4 Ad Code

এদিকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রফিকুলের স্ত্রী মিছফা আক্তার সিদ্দিকা (৫৫), মেয়ে শেখ শারমিন আক্তার সিদ্দিকা (৩৫), শেখ তাজরিন আক্তার সিদ্দিকা (৩০) ও তাজরিনের স্বামী মেহেদী হাসান (৩২) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ, মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ রফিকুল ইসলাম সিদ্দিকী একটি বেসরকারী ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। দুই বছর আগে তিনি চাকরি থেকে অবসর নেন। তাঁর ঘরে ৫ মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছেন। অবসরের পর তিনি তার একমাত্র ছেলে শেখ আমিনুল ইসলাম সিদ্দিকীকে পেনশনের টাকায় আরব আমিরাতে পাঠান।

Manual4 Ad Code

ছেলেকে প্রবাসে পাঠানোর পর তাঁর কাছে অবশিষ্ট থাকা পেনশনের টাকার জন্য স্ত্রী মিছফা আক্তার সিদ্দিকা ও মেয়েদের সাথে প্রায় সময় দ্বন্ধের সৃষ্টি হতো। এনিয়ে শেখ রফিকুল ইসলাম সিদ্দিকীর ভাই ও স্থানীয় ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম পাখির উপস্থিতিতে একাধিকবার পারিবারিক শালিসী বৈঠক হয়। সর্বশেষ শুক্রবার (২৬ মে) রাত ১০টার দিকে পারিবারিক কলহ সংক্রান্তের ঘটনায় রফিকুল ইসলাম সিদ্দিকীর ভাই সিরাজুল ইসলাম সহ স্বজনদের উপস্থিতিতে ফের পারিবারিক শালিসী বৈঠক হয়। বেঠক শেষে সবাই চলে যান। পরে রাত দেড়টার দিকে সিরাজুল খবর পেয়ে তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান রফিকুলের লাশ জখমী অবস্থায় ঘরের বারান্দায় পড়ে আছে।

Manual7 Ad Code

সিরাজুল বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্যর মাধ্যমে কুলাউড়া থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রফিকুলের লাশ সুরতহাল শেষে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করে।

Manual4 Ad Code

রফিকুল ইসলাম সিদ্দিকীর ভাই সিরাজুল ইসলাম সিদ্দিকী জানান,”আমার ছোট ভাই রফিকুল চাকুরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তাঁর পেনশন বাবদ প্রাপ্ত ৫২ লাখ টাকা নিয়ে প্রায়ই ঘরে ঝগড়া-বিবাদ হতো। আমার ভাইয়ের স্ত্রী মিছফা আক্তার ও তাঁর মেয়েরা পেনশনের টাকা নিজেদের কাছে নেওয়ার জন্য রফিকুলকে প্রায়ই মারধর ও খারাপ আচরণ করতো। এ নিয়ে আমরা আমাদের ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সহ বেশ কয়েকবার পারিবারিক শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করেছি।” তিনি দাবি করেন তার ভাইকে তাঁর স্ত্রী, মেয়ে ও মেয়ে জামাতা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।

কুলাউড়া থানায় পুলিশী হেফাজতে থাকা রফিকুলের মেয়ে শারমীন ও তাজরীন গনমাধ্যমে জানান, আমাদের বাবা মানসিক রোগী ছিলেন। এ জন্য আমাদের সাথে তিনি খারাপ আচরণ করতেন। শুক্রবার রাতে তাঁকে খাবার দিতে বিলম্ব হওয়ায় বাবা (রফিকুল) আমাদের কে গালিগালাজ করেন এবং ঘরের ভিতর আমাদের কে রেখে তিনি বের হয়ে যান। পরে দরজা ভেঙে দেখি বাবা বারান্দার মেঝেতে পড়ে আছেন।

কুলাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রতন দেবনাথ বলেন, পুলিশ সুরতহালের সময় রফিকুলের মাথার পেছনে আঘাত এবং গলায় নখের আচড়ের চিহ্ন রয়েছে।ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

ছবিঃ- শেখ রফিকুল ইসলাম সিদ্দিকী।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad

Follow for More!