প্রকাশিত: ৮:০২ পূর্বাহ্ণ, জুন ৬, ২০২১
আব্দুল কুদ্দুস: কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নস্থ মুরইছড়া বিট কর্মকর্তা ও অফিসের প্রহরীর কাছে জিম্মি সেখানকার কয়েকটি পুঞ্জির জনগোষ্ঠি। পুঞ্জির লোকজন তাদের বসত-ভিটা তৈরী কিংবা অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত মালামাল পুঞ্জিতে উঠাতে পারেন না।
পুঞ্জির লোকজন অভিযোগ করে বলেন- স্থানীয় মুরইছড়া বনবিট কর্মকর্তার সুপারিশ নিয়ে পুঞ্জিতে স্থাপনা তৈরির মালামাল উঠাতে গেলেও পরবর্তীতে এসব মালামাল বিট অফিসের লোকজনই জব্দ করেন।
বিট অফিসের লোকজন এসব মালামাল বিট অফিসে না নিয়ে তাদের পছন্দনীয় জায়গায় রাখেন। পরবর্তীতে পুঞ্জির লোকজনের কাছে বড় অঙ্কের চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা না দিলে কিংবা বিট অফিসের লোকজনের সাথে তর্কে জড়ালে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে পুঞ্জির লোকজনকে হয়রানি করা হয়। এমন অভিযোগ করেছেন কর্মধা ইউনিয়নের ইছাছড়া পুঞ্জির বাসিন্দা নিশি বিশ্বাসের ছেলে নিখিল বিশ্বাস।
আরো পড়ুনঃ পৃথিমপাশায় মনু নদী খনন ও বেড়িবাঁধ নির্মানের দাবীতে মানববন্ধন।
তিনি জানান, গত ২৭ মে স্থানীয় রবিরবাজার থেকে তিনি তার বসতঘর তৈরির কাজে সিমেন্টসহ হার্ডওয়্যারের মালামাল পিকআপভ্যান যোগে পুঞ্জিতে নেন। এর আগে তিনি মালামাল নেওয়ার জন্য মুরইছড়া বনবিট কর্মকর্তা অর্জুন কান্তি দস্তিদারের অনুমতিও নেন।
কিন্তু ২৭ মে পিকআপভ্যান ভর্তি মালামাল নিয়ে যাওয়ার সময় ইছাছড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ওই ইউনিয়নের পূর্বটাট্টিউলী গ্রামের মৃত আত্তর আলীর ছেলে রজব আলী মালামাল আটক করেন। এসময় রজব আলী পিকআপ ভ্যান থেকে ৪ বস্তা সিমেন্ট ও ৩ বাক্স টাইলস্ নামিয়ে ফেলেন। পরে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হন বিট অফিসের প্রহরী বেলাল উদ্দিন। তখন তারা দুজন মিলে সিমেন্ট ও টাইলস্ নিয়ে যান।
ওইদিন রাতেই প্রহরী বেলাল উদ্দিন মুঠোফোনে নিখিল বিশ্বাসকে ৫০ হাজার টাকা বিট অফিসে নিয়ে যেতে বলেন। নতুবা পিকআপ ভ্যান থেকে নিয়ে আসা সিমেন্ট ও টাইলস্ এমনকি ঘর তৈরির মালামাল পরবর্তী সময়ে পুঞ্জিতে নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না বলে জানান।
নিখিল বিশ্বাস শনিবার (৫ জুন) বিকালে মুঠোফোনে জানান, এখনও মালামাল তাকে ফেরত দেওয়া হয়নি। তবে বেলাল ৫০ হাজার টাকা দাবি করলেও তিনি এত টাকা দিতে অপারগতা জানান।
পুঞ্জিবাসী অভিযোগ করে আরো বলেন, রজব আলী এলাকায় বিট অফিসের সোর্স হিসেবে কাজ করে। পুঞ্জির লোকজন ইট, বালু কিংবা হার্ডওয়্যারের মালামাল পুঞ্জিতে উঠাতে চাইলে রজব এবং বেলাল দুজন মিলেই তাদের কাছে চাঁদা দাবি করেন।
এমনকি বিট কর্মকর্তার সাথে দেখা করতে বলেন। তবে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে আনীত এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বেলাল ও রজব বলেন- তারা বিট কর্মকর্তার নির্দেশে অবৈধভাবে নেওয়া মালামাল শুধু আটক করেন। এর বেশী কিছু বলতে চাননি অভিযুক্ত এই দুইজন।
পুঞ্জির লোকজন আরো জানান, বিট অফিসের লোকজনদের মাধ্যমে ইট, বালুসহ হার্ডওয়্যারের যাবতীয় মালামাল আনতে গেলে কোন সমস্যায় পড়তে হয় না। সেক্ষেত্রে তাদেরকে নির্দিষ্ট দামের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। আর পুঞ্জিবাসী তাদের দায়িত্বে আনতে গিয়ে এসব বিড়ম্বনার শিকার হয়। এর আগে একই পুঞ্জির লিড রেমবুইয়ের মালামালও আটক করা হয়। মামলায় জড়ানোর ভয়ে পুঞ্জিবাসীরা কিছু বলতে রাজী হননি।
কর্মধা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সিলভেষ্টার পাঠাং জানান, পুঞ্জিবাসী এই বন কর্মকর্তার কাছে জিম্মি। ভয়ে কিছু বলেন না। এই বন কর্মকর্তার রয়েছে কিছু সোর্স। এরমধ্যে একজন হচ্ছে পূর্বটাট্টিউলী গ্রামের মৃত আত্তর আলীর ছেলে রজব আলী। তার মাধ্যমে পুঞ্জিবাসীর মালামাল রাস্তায় আটক করা হয়। পুঞ্জিবাসীদের অযথা হয়রানি করা হয় এবং তাদের কাছে বড় অঙ্কের চাঁদা দাবি করা হয়।
আরো পড়ুনঃস্মার্টফোন এবার ৮ মিনিটেই শূন্য থেকে হবে পূর্ণ চার্জ
অভিযোগ সম্পর্কে মুরইছড়া বনবিট কর্মকর্তা অর্জুন কান্তি দস্তিদারের সাথে শনিবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওইদিন (২৭ মে) খবর পেয়ে ইছাছড়া স্কুল মাঠ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় সিমেন্ট ও বালু তার অফিসের লোক দিয়ে জব্দ করান।
তবে একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নির্দেশে পুঞ্জিতে পাকা স্থাপনার মালামাল উঠতে দেওয়া হয়নি। অর্জুন কান্তি আরো জানান, পুঞ্জিতে খাসিয়ারা স্থায়ীভাবে স্থাপনা তৈরির কোন নিয়ম নেই।
PUBLISHED FROM
2152-B WESTCHESTER AVE BRONX
NEW YORK 10462 USA
Email : voiceofkulaura2@gmail.com
Chief Editor : Shafiq Chowdhury
Editor : Abdul Quayyum Mintu
Managing Editor : Nurul Islam Emon
Design and developed by positiveit.us