ও প্রেম… এসেছে প্রেমের দিন!

প্রকাশিত: ৮:৩৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২

ও প্রেম… এসেছে প্রেমের দিন!
booked.net

Manual5 Ad Code

প্রেম স্বর্গীয়, প্রেম সুন্দর, প্রেম কামনার, প্রেম মোহময়, প্রেম বড়ো অস্থির, প্রেম বড়ো উতলা। মহাজনেরা বলেন, প্রেম আসার সময় নাকি ছুরি নিয়ে আসে, আবার কেউ কেউ বলেন প্রেম নাকি ঝড়ের মতোন আসে! কে জানে কোনটা সত্য, কোনটা মিথ্যা! জালাল উদ্দীন রুমি বলেন, “ভালোবাসা খোঁজা তোমার কাজ না। খুঁজে বের কর ভালোবাসার বিরুদ্ধে নিজের ভেতর যে দেয়ালগুলি নির্মাণ করেছ তুমি।” কঠিন তত্ব!

তবে কথা হলো হাজারো মিথ্যায় ছেয়ে যাওয়া এই পৃথিবীতে এখনো প্রেমই সত্য! প্রেমই সুন্দর! আকাশ থেকে নামা ফোটা ফোটা বৃষ্টি সুন্দর, মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসা কচি লতাটা সুন্দর, সুন্দর আজো ঐ চাঁদ, ঐ জোছনা, ঐ সমুদ্র, পাহাড়, অরণ্য।

প্রেমের সাথে যুদ্ধের যোগসুত্রতা ঐতিহাসিক। রাজা ক্লডিয়াসের বিরুদ্ধে জীবন দিয়ে ভালোবাসার জানান দিয়েছিলেন ভ্যালেন্টাইন। সেই থেকে ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’। সেই থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি এলে ভালোবাসার কাছে প্রণতি জানানো…

Manual6 Ad Code

সেই আদিকাল থেকেই ভালোবাসার বন্দনায়, প্রেমের মাহাত্ম্য বর্ণনায় মুখর আমাদের সৃষ্টি জগৎ।

Manual1 Ad Code

সেই কাহিনিগুলো বহুল পঠিত, অনেকগুলো জনশ্রুত। লাইলী-মজনু, রাধা-কৃষ্ণ, শিরি-ফরহাদ, ইউসুফ-জোলেখা, শাহজাহান-মমতাজ,থিসবি-পিরামুস আমাদের প্রেম জগতের দৃস্টান্ত।

শিল্প-সাহিত্যের অসীম আকাশ ঘুরে প্রেমের ইতিহাস চষে আমরা পাই হোমারের আফ্রোদিতি, বড়ু চণ্ডীদাসের রাধা, ভার্জিলের ভেনাস, দান্তের বিয়াত্রিসে, কালিদাসের সরস্বতী, রবীন্দ্রনাথের মানসী, পেত্রার্কের লরা, কীটসের ফেনিব্রাউন, হাফিজের শাখ-ই-নাবাত, বোদলেয়ারের সাবাতিয়ের আর জীবনানন্দের বনলতা সেনকে। কী তুমুল তাপস প্রেম! প্রেমের নানারূপ বিধৃত হয়েছে বৈচিত্র্যময় ভঙ্গিমায়। প্রেমে দ্রোহ আছে, বিয়োগ আছে, মধুর মিলনও আছে। সব নিয়েই তো প্রেম ; তখনো, এখনো।

আরবের প্রেমে উতলা বাঙালি গান ধরে, “‘প্রেম করেছেন আইয়ুব নবী/ তার প্রেমে জুলেখা বিবি গো’। আবার ভেলুয়া- আমির সাধুর প্রেম কাহিনি নিশুতিরাতে খান খান করে দেয় বঙ্গীয় জনপদের কতো কাঙাল হৃদয়। বাংলা সাহিত্যের অনবদ্য আখ্যান ‘শকুন্তলা’র দুসমন্ত আর শকুন্তলার প্রেম, আলাওলের ‘পদ্মাবতীতে’ রত্নসেন ও পদ্মাবতীর প্রণয় আখ্যান, ‘পূর্ববঙ্গ গীতিকা’য় মালেক – নুরুন্নাহারের হৃদয় তোলপাড় করা প্রেম আজো আমাদের মানস জগতে ঢেউ তুলে।

আবার একালের দিকে তাকিয়ে দেখি, রবীন্দ্রনাথ কী অপরূপ প্রেমের জোয়ার তুলে ভাসিয়ে নিয়ে চলেছেন আমাদের, ‘প্রেমের বাঁশরী’ বাজিয়ে নজরুল হৃদ আসনে পেতে দিলেন ভালোবাসার গালিচা। একইভাবে জীবনানন্দ হাঁটলেন ‘হাজার বছর’।

Manual6 Ad Code

আর লালন, হাসন, রাধারমণ জীবনভর খোঁজে চলেন প্রেমের অমৃতসুধা। এ সুধা কে পান করেন আর কে না- তার খবর কেউ জানেনা। সদর দরজা খুলে আমরা দেখি “শ্যাম কালিয়া’র খোঁজে মাতোয়ারা রাধারমণ আর ওদিকে শাহ আবদুল করিম কাটান ‘বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধে’ আকুল প্রহর।

এ-ই তো প্রেম। এই ব্যাকুলতা, এই আকুলী-বিকুলির নামই তো ভালোবাসা।

নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সেলমা লেগারলফ এর ভাষায়- ‘যে তোমাকে ভালোবেসেছে, পৃথিবীর কোনো কিছু দিয়ে তার ঋণ তুমি শোধ করতে পারবে না।’

Manual7 Ad Code

লেখকঃ- প্রনব কান্তি দেব।

সহকারী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

Ad

Follow for More!