পৃথিমপাশায় খাস জমি-গাছ বিক্রির বিরোধ। ঘরছাড়া স্ত্রী সন্তান ও পুত্রবধু।

প্রকাশিত: ৪:৫৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২

পৃথিমপাশায় খাস জমি-গাছ বিক্রির বিরোধ। ঘরছাড়া স্ত্রী সন্তান ও পুত্রবধু।
booked.net

আব্দুল কুদ্দুসঃ- কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের গণকিয়া গ্রামে একটি পরিবারের দখলে থাকা সরকারি খাস জমির কিছু অংশ ও গাছ বিক্রয়কে কেন্দ্র করে একটি পরিবারের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ধ চরম আকার ধারণ করেছে। এ দ্বন্ধের পিছনে আপন দুই ভাইয়ের পক্ষে-বিপক্ষে পিতা-মাতা অবস্থান নিয়েছেন। দীর্ঘ দিন থেকে চলমান এ বিরোধের নিষ্পত্তি নিয়ে মতবিরোধ থাকায় পিতা বড় ছেলের সাথে এবং মাতা ছোট ছেলের সাথে পৃথকভাবে বসবাস করে আসছেন। 

এদিকে সরকারি ভোগ দখলে থাকা প্রায় ১৮ বিঘা অমীমাংসিত জমির একটি অংশ ও গাছ বিক্রয়ে আপত্তি করার জেরে স্ত্রী মরিয়ম বিবি, ছোট ছেলে আব্দুল হানিফ, পুত্রবধু রুমেনা বেগমকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে।

এ নিয়ে ওই পুত্রবধু রুমেনা বেগম বাদী হয়ে ভাসুর আব্দুল মুকিত ও শশুর রেজান আলী সহ সহযোগী আরও ৭ জনের নামে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে (সি.আর) মামলা (নং- ২৬/২২) দায়ের করেছেন। মামলার কারণে স্ত্রী সন্তান পুত্রবধু ঘর ছাড়া।

মামলা সূত্র এবং ভিকটিম মরিয়ম বিবি বলেন, ৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ছোট ছেলের সাথে বসতঘরে থাকা অবস্থায় আসামী গণ আমাদের ভোগ দখলীয় জমির কাগজপত্র প্রদানের চাপ দিয়ে ঝগড়া বিবাধ শুরু করেন। জমি বিক্রয়ের জন্য কাগজ দিতে অসম্মতি ও গাছ বিক্রয়ের সম্মতি না দেওয়ায় এসময় তারা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আমার হাতে, পুত্রবধুর মাথায় আঘাত ও ছোট ছেলে হানিফকে মারপিট ও জখম করেন।

মরিয়ম বিবি আরোও বলেন, আমার কাবিনের জমি বিক্রয় করে বর্তমান বসবাসরত এ জমি আমরা ক্রয় করি, আমার ছোট ছেলে বিদেশে ১১ বছর রোজগার করে বাড়িতে গাছ রোপন ও পরিবারের ভরণপোষণ করছে। এই সম্পদে উভয় ছেলের সমান অধিকার থাকার পরও নিজের স্বামীকে দোষারূপ করে তিনি বলেন, গাছ ও জমির কিছু অংশ বিক্রয়ে আপত্তি কারণে স্বামী রেজান আলী ছেলে সহ আমাদের নির্যাতন ও হামলা করেছেন। বর্তমানে আমরা আইনের আশ্রয় নেওয়ায় আমি, ছোট ছেলে ও পুত্রবধুকে বাড়িতে বসবাস করতে না দেওয়ায় প্রাণের ভয়ে পুত্রের শশুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। আমি ন্যায় বিচার চাই।

এদিকে এ ঘটনার বিষয় জানতে বিরোধপূর্ণ ঐ বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ১৮ বিঘার ওই বাড়ির বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় গাছ কর্তন করা হচ্ছে। বাড়ির বাসিন্দা রেজান আলী মামলার ভয়ে পলাতক থাকায় খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাড়িতে অবস্থানরত বড় পুত্রবধু জাহানারা বেগমের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তিনি বলেন, আমার শশুর ও স্বামীকে নিয়ে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। তাছাড়া  আমার শশুরকে আমি ও আমার স্বামী দেখাশোনা করি।

উভয়পক্ষের এরকম বিরোধে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।এ বিষয়ে পৃথিমপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম জিমিউর রহমান চৌধুরী বলেন, আদালতে মামলা চলমান থাকায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করা এখনও সম্ভব হয়নি। বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দুই ইউপি সদস্যের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছি।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় জানান, ঘটনার বিষয়ে মামলার তদন্ত চলছে। আাসামিদের আটকে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ফটোঃ- বিরোধপূর্ণ জমির গাছ কর্তনের দৃশ্য।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad