পবিত্র কোরআনে মহাকাশের কথা।

প্রকাশিত: ৮:৩১ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২২

পবিত্র কোরআনে মহাকাশের কথা।
booked.net
Manual5 Ad Code

মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কথামালা পবিত্র কোরআন। মানবজাতির পরকালীন সাফল্যের পাথেয় হিসেবে এ মহাগ্রন্থ নাজিল করেছেন তিনি। কোরআনের অসংখ্য আয়াতে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির বিভিন্ন উপাদান নিয়ে চিন্তা-গবেষণার দাওয়াত দিয়েছেন এবং তাঁর নির্দেশিত পথে জীবন পরিচালিত করে পরকাল রাঙানোর কথা বলেছেন। বিশেষ করে সৃষ্টির অপার বিস্ময় মহাকাশ নিয়ে অনেক কথা কোরআনে বিবৃত হয়েছে। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের জন্য এসব আয়াতে রয়েছে অনেক শিক্ষা।

Manual1 Ad Code

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই মহাকাশ ও পৃথিবীর সৃজনে এবং দিন-রাতের আবর্তনে ধীমানদের জন্য শিক্ষা রয়েছে। যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং মহাকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করে এবং বলে—হে আমাদের পালনকর্তা, আপনি এসব বৃথা সৃষ্টি করেননি। আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। আমাদের জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাঁচান।’ (সুরা আলে-ইমরান: ১৯০-১৯১)

মহাবিশ্বের সৃজনপ্রক্রিয়া সম্পর্কে গবেষণা করে মহান আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনে জোর দিয়েছে কোরআন। এরশাদ হয়েছে, ‘অবিশ্বাসীরা কি দেখে না—মহাকাশ ও পৃথিবীর মুখ বন্ধ ছিল, এরপর আমি উভয়কে খুলে দিলাম এবং পানি থেকে সকল প্রাণ সৃষ্টি করলাম? তবুও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না?’ (সুরা আম্বিয়া: ৩০)

Manual5 Ad Code

মহান আল্লাহ তাআলা আকাশ ও পৃথিবী যথাযথভাবেই সৃষ্টি করেছেন এবং তা নির্ধারিত সময়ের জন্য। একদিন এই মহাবিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাবে। এরশাদ হচ্ছে, ‘তারা কি মনে মনে ভেবে দেখে না—মহাকাশ ও পৃথিবী এবং এ দু্ইয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুই আল্লাহ যথাযথভাবে ও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সৃষ্টি করেছেন? (সুরা রুম: ৮) অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘তারা কি তাদের ওপরের আকাশের দিকে তাকায় না—কীভাবে তা আমি বানিয়েছি, সুশোভিত করেছি এবং তাতে কোনো ফাটল নেই?’ (সুরা কাফ: ৬)

Manual5 Ad Code

কোরআনের ভাষ্যমতে, মহাবিশ্ব ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হচ্ছে, একদিন তা গুটিয়ে যাবে এবং সকল সৃষ্টি ধ্বংস হয়ে আবার সৃজিত হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি নিজ ক্ষমতাবলে আকাশ নির্মাণ করেছি এবং আমি মহা সম্প্রসারণকারী।’ (সুরা জারিয়াত: ৪৭) অন্য আয়াতে এরশাদ হচ্ছে, ‘সেদিন আমি আকাশ গুটিয়ে নেব—যেভাবে কাগজপত্র গুটিয়ে রাখা হয়। যেভাবে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে আবার সৃষ্টি করব। আমার অঙ্গীকার নিশ্চিত; আমি তা পূর্ণ করবই।’ (সুরা আম্বিয়া: ১০৪)

চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, কক্ষপথ ও গ্যালাক্সির কথাও কোরআনে বিবৃত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সূর্য তার নির্ধারিত পথে আবর্তন করে। এটি মহান পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর নিরূপণ। আর চাঁদের জন্য আমি বিভিন্ন মনজিল নির্ধারণ করেছি; অবশেষে সেটি খেজুরের শুকনো পুরোনো শাখার মতো হয়ে যায়।’ (সুরা ইয়াসিন: ৩৮-৩৯) অন্য আয়াতে এসেছে, ‘বহু পথবিশিষ্ট আকাশের শপথ, পরকাল সম্পর্কে তোমরা নিশ্চয়ই বিরোধিতায় লিপ্ত।’ (সুরা জারিয়াত: ৭-৮) আরও এরশাদ হয়েছে, ‘আমি পৃথিবীর আকাশ তারকারাজি দিয়ে সজ্জিত করেছি।’ (সুরা সাফফাত: ৬) অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘তিনি কত কল্যাণময়, যিনি আকাশে বিশাল তারকাপুঞ্জ সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে প্ৰদীপ ও আলো বিকিরণকারী চাঁদ স্থাপন করেছেন।’ (সুরা ফুরকান: ৬১)

বায়ুমণ্ডল ও আকাশের বিভিন্ন স্তরের কথাও পবিত্র কোরআনে বিবৃত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি তোমাদের ওপরে সাতটি স্তর সৃষ্টি করেছি; আর আমি সৃষ্টির ব্যাপারে অমনোযোগী নই।’ (সুরা মুমিনুন: ১৭) অন্য আয়াতে এসেছে, ‘তিনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সাত আকাশ। দয়াময় আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি কোনো খুঁত দেখতে পাবে না; আবার তাকিয়ে দেখো, কোনো ত্রুটি দেখতে পাচ্ছ কি?’ (সুরা মুলক: ৩) আরও এরশাদ হচ্ছে, ‘তোমাদের মাথার ওপর মজবুত সাত আকাশ নির্মাণ করেছি।’ (সুরা নাবা: ১২)

Manual3 Ad Code

মহাকাশের সব গ্রহ-উপগ্রহ-নক্ষত্র মহান আল্লাহর নির্দেশেই পরিচালিত হয়। মাত্র দুই দিনেই তিনি আকাশের সাতটি স্তর সৃষ্টি করেছেন এবং এই বিশাল সৃষ্টিজগতের সবকিছুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর তিনি দুই দিনে মহাকাশকে সাত স্তরে বিন্যাস করেছেন এবং প্রতিটি আকাশে তাঁর আদেশ পাঠালেন। এবং আমি পৃথিবীর আকাশ অসংখ্য আলোকবাতি দিয়ে সুশোভিত ও সুরক্ষিত করেছি। এটি মহাপরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা।’ (সুরা ফুসসিলাত: ১২) অন্য আয়াতে এসেছে, ‘এবং তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে একটি নিদর্শন—তাঁরই আদেশে আকাশ ও পৃথিবীর স্থিতি। এরপর আল্লাহ যখন তোমাদের মাটি থেকে ওঠার আহ্বান করবেন, তখন তোমরা উঠে আসবে।’ (সুরা রুম: ২৫)

ভূপৃষ্ঠের এই ক্ষুদ্র পরিধিতে কয়টা প্রাণীই-বা বসবাস করে। অথচ এই বিশাল আকাশজুড়ে আল্লাহর অসংখ্য সৃষ্টি জীব রয়েছে। যারা সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহকে সিজদা করে এবং তাঁর গুণগানে মগ্ন। যাদের সংখ্যা শুধু আল্লাহই ভালো জানেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরপর আমি আকাশের দিকে দৃষ্টি দিয়ে দেখলাম—তা শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা পরিবেষ্টিত।’ (সুরা জিন: ৮)

Ad

Follow for More!