প্রকাশিত: ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩
আব্দুল কুদ্দুসঃ- কুলাউড়ার হাজীপুর ইউনিয়নে জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী নতুন করে উদ্ভাবন করেছন পঞ্চব্রীহি ধান। তিনি দীর্ঘদিন থেকে ধানের নতুন এ জাত নিয়ে গবেষণা চালিয়ে আসছেন। জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অস্টে্লিয়ার হাই কমিশনের অর্থায়নে বিডিওএসএনের তত্ত্বাবধানে ১ বছর মেয়াদি IVEMRVM প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। পরবর্তীতে ধানের এ বীজ কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
২০১০ সালে প্রথম উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কানিহটি গ্রামে ২৫ বর্গমিটার জমিতে ২০টি ধানের জাত নিয়ে গবেষনা শুরু করেন ড. আবেদ চৌধুরী। পরে ৩ বছরে ২০টি ধানের জাত নিয়ে গবেষণায় দেখা যায় নির্দিষ্ট ধরণের এ জাত একই গাছে ৫ বার ফলন দিতে সক্ষম। স্থানীয় জাতের ধানের সাথে উন্নতমানের ধানের বীজ সংকরায়ন করে এই উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত পাওয়া যায়।
নতুন পঞ্চব্রীহি ধানের জাত বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে এখন ছড়িয়ে দেওয়ার উপযোগী হয়েছে বলেও জানান তিনি। এজন্য তিনি সরকারের সহযোগিতা চান। এ ধান ৩ গুন কম খরচে উৎপাদন করা যাবে বলে জানান এ বিজ্ঞানী।
পঞ্চব্রীহি ধান চাষে প্রথম বার ১১০দিন পর ফলন আসে। পরের ফলন আসে ৪৫ দিন অন্তর। ১ বার বোরো, ২ বার আউশ ও ২ বার আমন ধানের ফলন পাওয়া যাবে। পঞ্চব্রীহি ধানে প্রথমবার হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয় ৪ টন। ধানের চারা প্রতি ৪ সে: মি: দূরত্বে রোপণ করতে হয়।
গত শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সারাদিন উপজেলার হাজীপুর গ্রামে নতুন জাতের ধানের চাষাবাদ পরিদর্শনে আসেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ। এ সময় জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী তার উদ্ভাবিত ধান সম্পর্কে তাদের নিকট বিস্তারিত তুলে ধরেন।
পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক শিক্ষা সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব ও হাওর কৃষি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হক, কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. সাঈদা সুলতানা, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি রেজিস্ট্রার মো. ইয়াছিন আলী ও কুলাউড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জসিম উদ্দিন।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব ও হাওর কৃষি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হক বলেন, পঞ্চব্রীহি ধান আমাদের জন্য একটি আশার বিষয়। আমরা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ড. আবেদ চৌধুরীর সাথে কাজ করতে চাই। সিলেটর কৃষিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজিদা জামান বলেন, পঞ্চব্রীহি ধান থেকে নতুন কিছু শিখতে পেরেছি। এই গবেষণাটিএকদম অতুলনীয়। IVEMRVM প্রকল্প সুপারভাইজার তাহমিদ আনাম চৌধুরী বলেন, পরিক্ষামূলকভাবে কানিহাটি এলাকায় বোরো মৌসুমের ফসল উত্তোলন করার পর একই চারা হতে এ বছরে দ্বিতীয়বার ফসল উত্তোলন করা হয়েছে। পঞ্চব্রীহি ধান চাষ প্রকল্পের মাধ্যমে ধানের বীজ চাষিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী বলেন, ঋতু নির্ভরতা ধানের হাজার বছরের চরিত্র। পঞ্চব্রীহি ধানকে ঋতু নির্ভরতা থেকে বের করে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। এ ধান সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও এ ধান উৎপাদনে কৃষকের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ড. আবেদ চৌধুরী কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কৃতী সন্তান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে কৃষি বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা শেষে অস্ট্রেলিয়ায় জাতীয় গবেষণা সংস্থার প্রধান ধান বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও তিনি ডায়াবেটিস প্রতিরোধক রঙিন ভুট্টা ও লাল রঙের চাল উদ্ভাবন করেছেন।
ছবিঃ- পঞ্চব্রীহি ধানের সাথে জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী সহ পরিদর্শকরা।
Published From
Positive International Inc,
73-16, Roosevelt Ave Floor 2, Jackson Heights, New York 11372.
Email : voiceofkulaura2@gmail.com
Chief Editor : Shafiq Chowdhury
Editor : Abdul Quayyum
Managing Editor : Nurul Islam Emon
Design and developed by positiveit.us