কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে মাসে ক্ষতি হচ্ছে ২০-২৫ লক্ষ টাকা।

প্রকাশিত: ৮:৩৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০২১

কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে মাসে ক্ষতি হচ্ছে ২০-২৫ লক্ষ টাকা।
booked.net

স্বপন কুমার দেব রতনঃ- কুলাউড়া জংশন ষ্টেশনে আসনবিহীন টিকিট চালুর দাবি শ’শ যাত্রীর। প্রতিদিন টিকেট ছাড়া অ্যাটেনডেন্টদের টাকা দিয়ে ট্রেন ভ্রমন করতে গিয়ে ষ্টেশনের স্টাফের কাছে হয়রানি ও অনৈতিক অর্থ প্রদান করতে হচ্ছে যাত্রীদেরকে। এধরণের অবৈধ কাজ বন্ধ করতে এবং সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব লোকসান ঠেকাতে আসনবিহীন টিকিট দ্রুত চালুর দাবি রেল যাত্রীদের। স্থানীয় স্টেশন থেকে রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও রেল কর্তৃপক্ষ এখনও কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

রেলওয়ে সুত্র জানায়, করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মানতে ট্রেনে আসনবিহীন টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন একটি আসন খালি রেখে যাত্রী চলাচলের উদ্যোগ নেয়া হয়। দেশে করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। বর্তমানে ট্রেনগুলো স্বাভাবিকভাবে চলছে পুরনো নিয়মে। কেবল আসনবিহীন টিকেট চালু করা হয়নি।

আসনবিহীন টিকিট ইস্যু বন্ধ থাকলেও ট্রেনের আসন সংখ্যার চেয়ে দ্বিগুণ তিনগুণ মানুষ প্রতিদিনই ট্রেনে যাতায়াত করছে। কাউন্টার থেকে আসনবিহীন টিকিট না পেয়ে যাত্রীরা বিনা টিকিটে ট্রেনে উঠে পড়েন। সেসময় ট্রেনের অ্যাটেনডেন্ট যাত্রীদের কাছ থেকে টিকেটের সমমুল্যের টাকা ঠিকই অনৈতিক ভাবে আদায় করেছে। আবার অনেক যাত্রী অ্যাটেনডেন্টটের সাথে গন্তব্যের ভাড়া চুক্তি করে ট্রেনে চড়েন। অবৈধভাবে ট্রেনে চড়ে গন্তব্যে যাওয়ার পর স্টেশন থেকে বের হওয়ার সময় গেইটে কর্তব্যরত টিসিরা টিকিট দিতে না পারায় যাত্রীদের কাছ থেকে কখনও অনৈতিকভাবে আবারও টাকা নিচ্ছে অথবা যাত্রীদেরকে দ্বিগুণ জরিমানা দিতে হচ্ছে।

কুলাউড়া রেলওয়ে সুত্র জানায়, শুধু কুলাউড়া থেকে সিলেট প্রতিদিন আন্ত:নগর পারাবত, উপবন, পাহাড়িকা, উদয়ন ও কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনে ১২ থেকে ১৫শ যাত্রী যাতায়াত করেন। সর্বনিম্ন ১২শ যাত্রী যাতায়াত করেন তাহলে এসব ট্রেনের মধ্যে শুধু পরাবত ট্রেনে ৫০ টিকিট এবং অন্যান্য ট্রেনে ১০ টিকিট বরাদ্ধ রয়েছে।

সেই হিসেবে এক হাজার যাত্রীর কাছ থেকে ৬০ টাকা করে আসনবিহীন টিকেটে ভাড়া আদায় করা হলে সেই টাকার পরিমান ৬০ হাজার টাকা। প্রতিমাসে মোট ১৮ লক্ষ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রেলওয়ে বাংলাদেশ। এই হিসাব শুধু কুলাউড়া- সিলেট স্টেশনের যাত্রীদের হিসাব। অনুরুপভাবে কুলাউড়া থেকে ঢাকা ও চট্রগ্রামগামী ট্রেনে আসনবিহীন টিকিট বিক্রি করে যদি নুন্যতম আরও ২ লক্ষ টাকা আয় হতো। সে হিসেবে রেলওয়ে শুধু কুলাউড়া স্টেশন থেকে মাসে ২০ লক্ষাধিক টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর এই টাকা চলে যাচ্ছে ট্রেনে কর্মরত অসাধু চক্রের পকেটে। সরকার তথা রেল কর্তৃপক্ষ প্রতিমাসে হারাচ্ছে ২০-২৫ লাখ টাকার রাজস্ব।

এব্যাপারে কুলাউড়া স্টেশন মাস্টার মো. মুহিবুর রহমান জানান, আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে জানি না কবে থেকে আসন বিহীন টিকিট বিক্রির অনুমতি দিবে রেল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে প্রতিদিনই যাত্রীদের সাথে রেল কর্মীদের বাক বিতন্ডা হচ্ছে। অপর দিকে রেলের লোকসান হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এবিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত  সিদ্ধান্ত নেয়ার দাবি জানিয়েছে রেলের বৈধ যাত্রীরা।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad