কুলাউড়ার কাঁকড়াছড়া পুঞ্জি পরিদর্শন করেছে বাপার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল

প্রকাশিত: ৩:১২ অপরাহ্ণ, মে ২৪, ২০২১

কুলাউড়ার কাঁকড়াছড়া পুঞ্জি পরিদর্শন করেছে বাপার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল
booked.net

Manual6 Ad Code

আব্দুল কুদ্দুসঃ কুলাউড়ার কাঁকড়াছড়া পানপুঞ্জিতে বিবদমান পরিস্থিতি নিয়ে পুঞ্জিবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

রবিবার (২৩ মে) বিকেলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ পুঞ্জি পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন- কুলাউড়ার কাঁকড়াছড়া পানপুঞ্জিতে বনজ ও ফলজ গাছ কাটার হিড়িক চলেছে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের কোন ধরনের অনুমতি ছাড়াই রেহানা চা বাগান কর্তৃপক্ষ গাছগুলো কাটছে।

এখানে অন্যান্য গাছের মধ্যে বন্যপ্রাণীর খাবার নানা ফলদ গাছও রয়েছে। বাপা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিলের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মাঝে ছিলেন- হবিগঞ্জ আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল, সিলেট আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, বৃহত্তর সিলেট ত্রিপুরা উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জনক দেববর্মা এবং সম্পাদক সুমন দেববর্মা।

বাপা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল সাংবাদিকদের বলেন, ‘পানজুমে দেখা যায় হাজারখানেক গাছ কাটা হয়েছে। মনে হলো যেন গাছ কাটার হিড়িক চলছে। হাজারের ওপরে বনজ-ফলদ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।’

Manual7 Ad Code

আরো পড়ুনঃ  থাইল্যান্ডে করোনার টিকা নিলে গরু পুরুস্কার!

Manual3 Ad Code

এর আগে পুঞ্জিবাসীদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হলে পুঞ্জির বাসিন্দারা প্রতিনিধি দলকে জানায়, বাগান কর্তৃপক্ষ একের পর এক অন্তত হাজারখানেক গাছ কেটে ফেলেছে।

পুঞ্জিবাসী প্রতিনিধি দলকে আরো জানায়, কাঁকড়াছড়া পুঞ্জিতে ৪৭টি পরিবারের বসবাস ছিল। গত প্রায় সাত থেকে আট বছরে বাগান কর্তৃপক্ষ অন্তত ২০টি ছোট-বড় জুম দখল করে সেখানে চা চারা রোপণ করছে। আর এতে করে ৩০টি পরিবারের লোক বিভিন্ন এলাকায় চলে গেছে।

Manual1 Ad Code

বর্তমানে পুঞ্জি থেকে তাদের বের হওয়ার প্রধান রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন পুঞ্জির একটি গলি দিয়ে তাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। গত দু-তিন বছরে তাদের কবরস্থান দখল করে সেখানেও চায়ের চারা রোপণ করেছ বাগান কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে তারা মরদেহ সৎকারের জায়গাও খুঁজে পাচ্ছেন না।

পুঞ্জির বাসিন্দা বিনিতা রেমা সাংবাদিকদের জানান, “আমার জুমের বড় বড় ফলজ ও বনজ শতাধিক গাছ এবং জুমের পান গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে। তিনি হাউ-মাউ করে কেঁদে কেঁদে বলেন, পরিবারের লোকজন নিয়ে কোথায় যাবো; কি খাবো; কিছুই খোঁজে পাচ্ছিনা। তাছাড়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গির্জা ঘরটি আমরা ভয়ে সংস্কার করতে পারছি না।”

পুঞ্জির হেডম্যান জনপল চিছিম বলেন, “পুঞ্জি থেকে আমাদের উচ্ছেদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অথচ মালিকপক্ষ আমাদের জমিটি লিজ দিয়েছিল। এর কাগজপত্র আমাদের কাছে আছে।”

Manual8 Ad Code

রেহানা চা বাগানের ব্যবস্থাপক একে আজাদ বলেন, “তাদের (পুঞ্জিবাসী) কোন সমস্যা থাকলে আমাদের সাথে বসে আলাপ-আলোচনা করতে পারতো। তিনি বলেন, পুরো জায়গাটি চা বাগানের। পুঞ্জিবাসী মিথ্যাচার করছে।

বাগান এলাকায় চা গাছের চারা রোপণ করে জায়গা বৃদ্ধি করা হয় সামান্য কিছু গাছ কেটে। তবে বাংলাদেশ চা বোর্ডের অনুমতি না নিয়ে এখানকার গাছ কাটা হয়েছে বলে তিনি জানান”

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না হয় সে বিষয়ে আমি উভয়পক্ষকে বলেছি। সমাধানের চেষ্টা চলছে।’

Ad

Follow for More!