প্রকাশিত: ৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২
অনলাইন ডেস্কঃ- এশিয়া কাপের শেষ হাসিটা হাসলো শ্রীলঙ্কা। রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে ষষ্ঠবারের মত এশিয়ার সেরা মুকুট নিজেদের করে নিলো দানুশ শানাকার দল। এশিয়া কাপ ২০২২-এর চ্যাম্পিয়ন তারা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হার ছাড়া পুরো টুর্ণামেন্টের অন্য সব ম্যাচেই জয় পেয়েছে সিংহের দল।
রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ের স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে মুখোমুখি হয় পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা। এদিন টসে জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাবর আযম। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে প্রথমে ভুল প্রমাণ করেননি পাকিস্তানি বোলাররা। তবে ভানুকা রাজাপাকসে আর হাসরাঙ্গা ডি সিল্ভা মিলে শুরুর চাপ সামলে ১৭০ রানের বড় সংগ্রহ এনে দেয় শ্রীলঙ্কাকে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে লঙ্কান ঘূর্ণিতে সব উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রানে থেমে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। এতে ২৩ রানের জয় পায় শানাকার দল।
এ দিন ইনিংসের প্রথম বল ওয়াইড দিয়ে শুরু করেন পেসার নাসিম শাহ। লঙ্কানদের বিপদের শুরু তারপরেই। ম্যাচের তৃতীয় বলেই ১৪২ কি.মি. গতির দুর্দান্ত এক ইনসুইঙ্গারে লন্ডভন্ড হয়ে যায় স্ট্যাম্প। লঙ্কান ওপেনার কুশল মেন্ডিসকে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ উপহার দিয়ে সাজঘরে পাঠান নাসিম। দ্বিতীয় ওভারেই পাকিস্তানি বোলার হাসনাইনকে দুই চার আর তৃতীয় ওভারে নাসিমকে এক চারে পাল্টা আক্রমণের ইঙ্গিত দেয় লঙ্কান ব্যাটাররা। তবে তাদের আক্রমণে জল ঢেলে দেন হারিস রউফ। নিজের প্রথম ওভার করতে এসে দ্বিতীয় বলেই আরেক লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কাকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান রউফ। ১১ বলে ৮ রান করা নিশাঙ্কা ফেরেন পাক অধিনায়ক বাবর আজমের হাতে ক্যাচ দিয়ে। এরপর লঙ্কানদের হয়ে পাক বোলারদের ওপর চড়াও হন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। তবে অপর প্রান্তে আবারও পতন উইকেটের। পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারের প্রথম বলে ৪ বলে ১ রান করা লঙ্কান ব্যাটার দানুশকা গুনাথিলাকাকে সাজ ঘরে ফেরান রউফ। পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৪২ রান। ৪ চারে ১৫ বলে ২৪ রান নিয়ে লঙ্কানদের হয়ে একমাত্র ধনঞ্জয়া ডি সিলভাই কিছুটা লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন পাক বোলারদের সামনে। তবে এক ওভারে বাদেই থামে ধনঞ্জয়ার পাল্টা আক্রমণ। অষ্টম ওভারে ইফতিখারের বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে ২১ বলে ২৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন ধনঞ্জয়া।
পরের ওভারেই লঙ্কান অধিনায়ক শানাকাকে ২ রানেই ফিরিয়ে পাকিস্তানকে উল্লাসে মাতান শাদাব খান। ৫৮ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হওয়া শ্রীলঙ্কাকে উদ্ধারে নামেন ভানুকা রাজাপাকসে আর হাসরাঙ্গা ডি সিলভা। ৩৬ বলে ৫৮ রানের জুটি করে দলকে লড়াই করার স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন দুজন মিলে। মোহাম্মদ হাসপ্নাইনের এক ওভার থেকে তুলে নিয়েছিলেন ১৪ রান। পাল্টা আক্রমনে পাকিস্তানি বোলিংকে ভালোই চোখ রাঙ্গাচ্ছিলেন দুজন। এই দুইজনের জুটিতে ভর করে ১৪ ওভারেই ১০০ তুলে ফেলে শ্রীলঙ্কা। শেষমেশ জুটি ভাঙ্গেন হারিস রউফ। ১৫তম ওভারে রউফকে টানা দুই চার মারেন হাসরাঙ্গা। ২১ বলে ৩৬ রান করে রউফের বলে উইকেটের পেছনে রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন হাসরাঙ্গা।
হাসরাঙ্গার বিদায়ে জুটি ভাঙলেও দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন রাজাপাকসে। চামিকা করুণারত্নের সঙ্গে জুটি বেঁধে নিজের অর্ধশতকও তুলে নেন রাজাপাকসে। ইনিংসের ১৮তম ওভারে চতুর্থ বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন রাজাপাকসে। তবে উপরে ওঠা সেই বল হাতে জমাতে পারেননি শাদাব খান। ওভারের শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৩৫ বলে নিজের অর্ধশতক তুলে নেন রাজাপাকসে। পরের ওভারের শেষ বলেও আকাশে বল তুলেছিলেন রাজাপাকসে। তবে এবারও ব্যর্থ পাক ফিল্ডাররা। আসিফ আলি আর শাদাব খানের সংঘর্ষে শুধু ক্যাচই পড়েনি, বল গিয়ে পড়ে সোজা বাউন্ডারির বাইরে, ছয় রান। ইনিংসের শেষ ওভারেও ১ চার আর ১ ছয়ে ১৫ রান তুলে নেয় লঙ্কানরা। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৭০ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। ৬ চার আর ৩ ছয়ে ৪৫ বলে ৭১ রান করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন রাজাপাকসে।
পাকিস্তানের হয়ে হারিস রউফ ৩ টি এবং ইফতেখার, নাসিম শাহ ও শাদাব খান ১টি করে উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৭১ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই অতিরিক্ত ১০ রান পায় পাকিস্তান। এরপর দেখে শুনে ধীর গতিতেই রানের ধারা অব্যাহত রাখে দুই ওপেনার বাবর আযম ও রিজওয়ান। ইনিংসের ৪র্থ ওভারে বাবরের উইকেট হারিয়ে প্রথম ধাক্কা খায় পাকিস্তান। প্রমোদ মাধুশানের ২য় বলে মাধুশংকার হাতে ক্যাচ তুলে দেন পাকিস্তানি অধিনায়ক। সাজ ঘরে ফেরার আগে ৬ বলে ৫ রান করেন বাবর। ঠিক তার পরের বলেই ফখর জামান কে বোল্ড করে পাকিস্তানকে দ্বিতীয় ধাক্কা দেন প্রমোদ মাধুশান। এরপর ব্যটিংয়ে নামা ইফতেখারকে নিয়ে ধীর গতিতে রানের সংখ্যা বাড়াতে থাকেন ওপেনার রিজওয়ান। পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভার শেষে পাকিস্তানের স্কোর দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৩৭ রান। ইনিংসের ১৪ তম ওভারে এসে রিজওয়ান-ইফতেখারের ৭১ রানের জুটি ভাঙ্গেন আগের দুই উইকেট নেওয়া বলার প্রমোদ মাধুশান। ৩১ বলে ৩২ রান করা ইফতেখারকে সাজ ঘরে ফেরান তিনি। এরপর মাঠে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি মোহাম্মদ নেওয়াজ। ৯ বলে ৬ রান করে করুণারত্নের বলে প্রমোদ মাধুশানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন এ ব্যাটার।
এরপর পরের ওভারেই এক বলের বিরতিতে একই সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামা রেজওয়ান, আসিফ আলি ও খুসদিল শাহকে সাজ ঘরে ফেরত পাঠান হাসরাঙ্গা ডি সিল্ভা। আউট হওয়ার আগে ৪৯ বলে ৫৫ রান করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। বাকি দুই ব্যাটার ফেরেন ০ রানে। ইনিংসের ১৮তম ওভারে থিকসেনার বলে আউট হন ৬ বলে ৮ রান করা শাদাব খান। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি পাকিস্তান। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে বাবর আযমরা। শেষ পর্যন্ত সব উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় তারা। এতে ২৩ রানের জয় নিয়ে ষষ্ঠবারের মত এশিয়া কাপের শিরোপা নিজেদের করে নেয় শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কার হয়ে হয়ে প্রমোদ মাধুশান ৪ টি, হাসরাঙ্গা ডি সিল্ভা ৩টি করুণারত্নে ২টি এবং থিকসেনা ১টি করে উইকেট নেন।
ছবিঃ- বিজয়ে উৎফুল্ল শ্রীলঙ্কান খেলোয়াররা।
PUBLISHED FROM
2152-B WESTCHESTER AVE BRONX
NEW YORK 10462 USA
Email : voiceofkulaura2@gmail.com
Chief Editor : Shafiq Chowdhury
Editor : Abdul Quayyum Mintu
Managing Editor : Nurul Islam Emon
Design and developed by positiveit.us