আদিবাসীদের সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে হবে- ড.কামাল।

প্রকাশিত: ৯:৩৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪

আদিবাসীদের সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে হবে- ড.কামাল।
booked.net

Manual7 Ad Code

নিজস্ব সংবাদ দাতা:- জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আদিবাসীদের প্রথাগত অধিকার রয়েছে। জাতির পিতা এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য দেশ স্বাধীন করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীদেরও অবদান রয়েছে। আদিবাসীদের সংস্কৃতি টিকে না থাকলে তারা টিকবে না। দীর্ঘদিন থেকে তারা যেখানে বসবাস করছেন, সেখান থেকে তাদের উচ্ছেদ করাও যাবে না। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কুলাউড়ার ঝিমাই পুঞ্জি পরিদর্শনকালে তিনি এসব একথা বলেন।

Manual8 Ad Code

ঝিমাই পুঞ্জি সূত্রে জানা গেছে, এখানকার খাসিয়াদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ, প্রাকৃতিক গাছ কেটে বন উজাড়, তাদের নামে মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য দিয়ে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে বিভিন্ন সময় তাদের দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে কমিশনের চেয়ারম্যান মঙ্গলবার সরেজমিন ঝিমাই পুঞ্জি পরিদর্শনে আসেন। এসময় প্রশাসনের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ তাঁর সাথে ছিলেন।

Manual2 Ad Code

ড. কামাল উদ্দিন বলেন, কুলাউড়ার পুঞ্জি এলাকায় আদিবাসীরা নিবিড়ভাবে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে সম্প্রীতি ও আন্তরিকতা রয়েছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, একটি জনগোষ্টি যেখানে দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করছে সে স্থানটি কেন বারবার লিজ দেওয়া হচ্ছে। এখানকার গাছ কাটা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। এই গাছ কাটার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে এখানকার জনগোষ্টির জীবিকা। জীবন এবং জীবিকা দুটোই তাদের অধিকার। জীবিকা নষ্ট হলে জীবন থাকবে না।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের কমিশনে ৩টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এগুলো গভীরভাবে উপলব্দি করতেই এখানে আমাদের আসা। তিনি স্থানীয় প্রশাসন ও বাগান কর্তৃপক্ষের উদ্যেশ্যে বলেন, আমাদেরকে আরো রক্ষণশীল হয়ে কাজ করতে হবে; যেনো একটি গোষ্টির জীবন-জীবিকা নষ্ট না হয়।

Manual7 Ad Code

পুঞ্জির লোকজন অভিযোগ করে বলেন, ঝিমাই পুঞ্জিতে খাসি জনগোষ্টির ৭২ পরিবারে অন্তত ৫শ’ মানুষের বসবাস। তারা প্রতিনিয়ত চা বাগান কর্তৃক গাছ কর্তন ও উচ্ছেদ আতঙ্কে আছেন। পুঞ্জির গাছগুলো কাটা হলে এখানকার আদিবাসী ও পরিবেশ হুমকির সম্মুখিন হবে। পুঞ্জির লোকজনের চলাচলের রাস্তায় চা বাগান কর্তৃপক্ষ সবসময় বাধা দেয়। বাগানের প্রধান গেইট থেকে পুঞ্জি পর্যন্ত অন্তত দেড় কিলোমিটার রাস্তা তাদের গাড়ী নিয়ে যাতায়াত করলেও খাসিয়াদের গাড়ী গেইটের ভেতর ঢুকতে দেওয়া হয়না। ২০১৫ সাল থেকে রাস্তা দাবী করে আসলেও অদ্যাবধি বাগান কর্তৃপক্ষ বন্ধ রেখেছেন। প্রসূতিসহ বয়োজেষ্ট ও জরুরী রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে চাইলে প্রধান গেইটে তাদের গাড়ী আটকিয়ে রাখা হয়। এতে খাসিয়ারা যেমন বৈষ্যমের শিকার তেমনি রাস্তা বন্ধ রাখা মানবাধিকার লংঘনের শামিল। তাছাড়া পুরো ৭২ পরিবার এখনো বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে। এতে করে ওই পুঞ্জির শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটছে। রয়েছে সুপেয় পানির সমস্যা। খাসিয়ারা তাদের জীবন জীবিকা ও প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করার মত কোন পদক্ষেপ না নিতে কমিশনের চেয়ারম্যানের সহযোগিতা চান। ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ তাদের সমস্যার কথা মনযোগ সহকারে শুনেন এবং স্থায়ীভাবে সমাধানের উপর গুরত্বারোপ করেন।

আন্তঃপুঞ্জি উন্নয়ন সংগঠনের (কুবরাজ) সভাপতি প্রত্যুষ আসাক্রার সভাপতিত্বে ও আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অলিক মৃ’র পরিচালনায় আরো বক্তব্য দেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য সেলিম রেজা, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুন, সহকারি কমিশনার মেহেদি হাসান, ওসি (তদন্ত) কশৈন্য, রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন, ফাদার যোসেফ গোমেজ ওএমআই, আন্তঃপুঞ্জি উন্নয়ন সংগঠনের (কুবরাজ) সাধারণ সম্পাদক ফ্লোরা বাবলী তালাং, ঝিমাই পুঞ্জির হেডম্যান রানা সুরং ও চা বাগান ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান, প্রমুখ।

ছবিঃ- জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ কে ফুল দিয়ে বরন করা হচ্ছে।

Manual8 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Ad

Follow for More!